সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

না ফেরার দেশে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত

তিনি ছিলেন বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, দক্ষ সংসদবেত্তা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আর নেই। রবিবার ভোররাতে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন দেশের রাজনীতির এই কৃতী পুরুষ। তার মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের গভীর ছায়া। অসুস্থতাজনিত কারণে গত শুক্রবার সকালে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। শনিবার সন্ধ্যায় অবস্থার অবনতি হলে ওই দিন রাতে তাকে লাইফসাপোর্ট দেওয়া হয়। চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু উন্নত চিকিৎসার সুযোগ না নিয়েই তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুর মাধ্যমে বলা যায় দেশের রাজনীতির একটি অধ্যায়ের অবসান হলো। ১৯৪৬ সালে সুনামগঞ্জের আনোয়ারাপুরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বাইরে হাতেগোনা যে গুটিকয়েক সদস্য নির্বাচিত হওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন তাদেরই একজন। স্বাধীন বাংলাদেশে দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম জাতীয় সংসদে তিনি নির্বাচিত হন। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংসদবেত্তা বলে ভাবা হতো। সাবেক এই মন্ত্রী মৃত্যুকালে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা শোক প্রকাশ করেছেন। জলবেষ্টিত হাওর এলাকার মানুষের এই অবিসংবাদিত নেতা নিজ যোগ্যতা বলেই দেশের রাজনীতির প্রথম সারির নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন বন্ধুবৎসল ও পরমতসহিষ্ণু। অসাধারণ বাগ্মিতার অধিকারী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন দেশের রাজনীতির এক জীবন্ত কিংবদন্তি। দেশের স্বাধিকার আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী গণতান্ত্রিক রাজনীতির এই অগ্রসেনানীর মৃত্যুতে আমরা শোক জানাচ্ছি। তার পরিবার-পরিজনের প্রতি আমাদের সান্ত্বনা।

সর্বশেষ খবর