মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

অপরাধের নাম মানব পাচার

রাঘব বোয়ালদের আইনের আওতায় আনুন

মানব পাচার হতভাগ্য ব্যক্তিদের জন্যই শুধু বিড়ম্বনা ডেকে আনছে না জাতির জন্যও তা লজ্জার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুনিয়ার যেসব দেশ থেকে মানব পাচারের ঘটনা বেশি ঘটে বাংলাদেশের নাম তার উপরের কাতারে। মানব পাচার বন্ধে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও এ অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের নিবৃত্ত করা যে সম্ভব হচ্ছে না, তা একটি বাস্তবতা। এ অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের এক বড় অংশই প্রভাবশালী এবং ধনাঢ্য। আর্থিক এবং সামাজিক প্রভাবের কারণে পুলিশ তাদের টিকিটি ছুঁতেও ভয় পায়। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা সংস্থা ইতিপূর্বে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত ৪৬১ জনের একটি তালিকা তৈরি করে, যাদের ৩৫৯ জনই টেকনাফের বাসিন্দা। ওই তালিকায় টেকনাফের সংসদ সদস্যের ভাই ও ভাগ্নেসহ বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি এবং তাদের স্বজনদের নামও রয়েছে। তালিকা রয়েছে মিয়ানমারের ৪২ জন ও ৫ জন মালয়েশীয় নাগরিকের নাম। বিভিন্ন মানব পাচার মামলার ১০০ জন আসামি এবং ১৪ জন নারীও এ তালিকার অন্তর্ভুক্ত। সাগরপথে ঝুঁকিপূর্ণ মানব পাচারের প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে কক্সবাজার। এ এলাকা হয়ে পাচার হয়ে যাওয়া অনেক লোক মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের জঙ্গলে অনাহারে মারা গেছেন। অনেককে জিম্মি করে পরিবারের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে লাখ লাখ টাকা। মাঝ সাগরে অনেককে ট্রলার থেকে ফেলে দিয়ে তাদের সলিল সমাধি ঘটানো হয়েছে। মানব পাচারের অবৈধ কর্মকাণ্ডে বিপুল অর্থের লেনদেন হয়, যে কারণে চিহ্নিত মানব পাচারকারীদের অর্থ লেনদেনের তথ্য যাচাইয়ের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট। এ জন্য তারা সন্দেহভাজনদের একটি তালিকা পাঠায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে। তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাবের সন্দেহজনক বা অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রতি বিশেষ নজর রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তালিকাভুক্ত সবার বাড়িই কক্সবাজার অঞ্চলে। এসব রাঘব বোয়ালরা রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের দমনে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জিত হচ্ছে না। মানব পাচার বন্ধে অপরাধীদের শক্ত হাতে ধরার উদ্যোগ নিতে হবে।

তাদের রাজনৈতিক কানেকশনের অবসানেও নিতে হবে কার্যকর ব্যবস্থা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর