ইসলামে ভিক্ষাবৃত্তি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। অপরের কাছে হাত পাতার বদলে মেহনত করে জীবিকা অর্জন করতে উৎসাহ দিয়েছেন রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম। একবার এক ব্যক্তিকে তিনি ভিক্ষা করতে দেখলেন। মিশকাত শরিফের হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ভিক্ষা করতে বারণ করলেন।
বললেন তোমার ঘরে কি কোনো জিনিস আছে? সে বলল, একটা মোটা কম্বল আছে। যার একাংশ উপরে ও অপরাংশ নিচে বিছিয়ে থাকি। এবং একটি পাত্র আছে, যার দ্বারা আমি পানি পান করি। তখন নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন যাও তোমার বস্তুদ্বয় নিয়ে আস। ওই ব্যক্তি বস্তুদ্বয় নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্মুখে হাজির করলে তিনি কম্বল ও পাত্রটি নিজের হাতে নিলেন এবং বললেন কেউ আছ কি এগুলো কিনবে? এক ব্যক্তি বললেন, আমি এক দিরহাম দিয়ে কিনব। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন এর চেয়ে বেশি দিয়ে কেনার কেউ আছে? অপর এক ব্যক্তি বললেন আমি দুই দিরহাম দিয়ে কিনব। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয় বস্তু ওই ব্যক্তির কাছে দুই দিরহাম দ্বারা বিক্রি করে ভিক্ষাকারী আনসারি ব্যক্তিকে দিয়ে বললেন এক দিরহাম দ্বারা খাদ্যদ্রব্য কিনে পরিবারের সদস্যদের দিয়ে দাও এবং অপর দিরহাম দ্বারা একটা কুড়াল ক্রয় করে আমার কাছে নিয়ে আস। সে ব্যক্তি যখন কুড়াল নিয়ে মহানবীর দরবারে হাজির হলেন, তখন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ হাতে কুড়ালের হাতল লাগিয়ে দিলেন এবং বললেন, যাও কাঠ কেটে বিক্রি কর। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বললেন, আমি যেন তোমাকে ১৫ দিন আর না দেখি। ওই ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশে চলে গেল ও লাকড়ি একত্রিত করে বিক্রি করতে থাকল। পনের দিন পর সেই ব্যক্তি মহানবীর দরবারে যখন আগমন করে তখন তার সঞ্চয় ছিল ১০ দিরহাম। যার থেকে কিছু দ্বারা সে খাদ্যদ্রব্য কিনল আর কিছু দ্বারা কাপড়চোপড় ইত্যাদি। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন ভিক্ষাবৃত্তির কারণে কাল কিয়ামতের দিন চেহারা অন্ধকার হওয়া থেকে এ পন্থাই তোমার জন্য উত্তম।
উপরোক্ত হাদিসটি আমাদের জন্য শিক্ষণীয়।লেখক : ইসলামী গবেষক