বৃহস্পতিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আকাশবীণায় অপঘাত

দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করুন

কোম্পানিকা মাল দরিয়া মে ঢাল বলে একটি প্রবচন আমাদের দেশে প্রচলিত। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছে এ প্রতিষ্ঠানটি যেন কোম্পানির মাল হিসেবেই বিবেচিত। যে কারণে লুটপাট যেমন এ প্রতিষ্ঠানের নিত্য অনুষঙ্গ, তেমন যাচ্ছেতাই কর্মকা-ও বিমানের কর্মী-কর্মকর্তাদের একাংশের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অভ্যাসের কারণেই উদ্বোধনের মাত্র ছয় দিনের মাথায় অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ আকাশবীণা ড্রিমলাইনার ৭৮৭-এর জরুরি দরজার অংশবিশেষ বা র‌্যাফট ভেঙে গেছে এক প্রকৌশলীর ভুল অপারেশনের কারণে। মোস্তাফিজুর রহমান নামের ওই ‘করিৎকর্মা’ প্রকৌশলীকে তৎক্ষণাৎ বরখাস্ত করা হয়েছে। স্মর্তব্য, জরুরি অবতরণের পর উড়োজাহাজের জরুরি দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে বাইরের দিকে বেলুনের মতো একটি স্লাইডিং সিঁড়ি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেরিয়ে আসে। যেখানে যাত্রীরা লাফিয়ে পড়ে উড়োজাহাজের বাইরে বেরিয়ে আসতে পারেন, এটি র‌্যাফট বলে পরিচিত। এই র‌্যাফট একবার ব্যবহারযোগ্য। দরজা থেকে ভেঙে নিচে পড়ে যাওয়ায় এটি আর ব্যবহার করা যায় না। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় ড্রিমলাইনারের সিঙ্গাপুর ফ্লাইটের প্রস্তুতি চলছিল। এটি বোর্র্ডিং ব্রিজে সংযুক্ত অবস্থায় যাত্রীদের জন্য ড্রিমলাইনারে খাবার তোলা হচ্ছিল। এ সময় প্রকৌশল বিভাগের মোস্তাফিজুর রহমান হঠাৎ দরজা অন করতে গিয়ে ভুল বাটনে চাপ দিলে আসল দরজা না খুলে ইমারজেন্সি ডোরের র‌্যাফট ভেঙে পড়ে যায়। পরে র‌্যাফট ছাড়াই ড্রিমলাইনার দিয়ে ফ্লাইট অপারেট করা হয়। বিমানের কর্মীদের ভুল অপারেটের ঘটনা এটিই নতুন নয়। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকে দায়িত্ব পালনের বদলে নানা বাণিজ্যে ব্যস্ত থাকায় ভুলের পরিধি বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী আকাশবীণার উদ্বোধনকালে বিমানের সুনাম রক্ষার তাগিদ দিয়েছেন। উদ্বোধনের ছয় দিনের মাথায় ভুল অপারেটের কারণে বিমানের র‌্যাফট নষ্ট করে প্রমাণ করা হলো এ প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা শোধরানোর নয়। আমরা শুধু দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তির শাস্তিই নয়, অদক্ষ প্রকৌশলীর নিয়োগের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত বলে মনে করছি। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভেবে দেখলেই ভালো করবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর