বৃহস্পতিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

অতিধনীর সংখ্যা বাড়ছে

সামাজিক বৈষম্য বৃদ্ধি অপ্রত্যাশিত

বাংলাদেশে অতিধনীর সংখ্যা বাড়ছে অতি দ্রুতহারে এবং এদিক থেকে বিশ্বে আমাদের দেশই প্রথম। অতিধনী তাদের বিবেচনা করা হয় যাদের সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ডলার বা বাংলাদেশের আড়াই শ কোটি টাকার চেয়ে বেশি। লন্ডনভিত্তিক আর্থিক জরিপ প্রতিষ্ঠান ‘ওয়েলথ এক্স’ গত সপ্তাহে এই অতিধনীদের ওপর সর্বশেষ রিপোর্ট প্রকাশ করে। এতে দেখা গেছে, বিশ্বে অতিধনী মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে। সে দেশে ‘অতিধনী’র সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। দ্বিতীয় স্থানে জাপান। তাদের অতিধনীর সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার। আর প্রায় ১৭ হাজার অতিধনী নিয়ে চীন তৃতীয় স্থানে। তালিকায় প্রথম ১০টি দেশের মধ্যে আরও আছে জার্মানি, কানাডা, ফ্রান্স, হংকং, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড ও ইতালি। অতিধনী মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে দ্রুতহারে বাড়ছে যেসব দেশে, সে তালিকায় বাংলাদেশ সবার ওপরে। ওয়েলথ এক্সের তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ হারে অতিধনীর সংখ্যা বাড়ছে। দ্বিতীয় স্থানে আছে চীন। সেখানে অতিধনীর সংখ্যা বাড়ছে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ হারে। এরপর আছে যথাক্রমে ভিয়েতনাম, কেনিয়া, ভারত, হংকং ও আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশে অতিধনীর সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতহারে বাড়ছে এটি অর্থনৈতিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তনের চিত্র যেমন তুলে ধরেছে, তেমন এ সমৃদ্ধির চিত্রের অন্য পিঠে রয়েছে উদ্বেগের ঘটনা। বাংলাদেশ গত এক দশকে দ্রুত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে গেলেও তার সুফল নিচের পর্যায়ে তত দ্রুতহারে পৌঁছাচ্ছে না। ধনীরা আরও বেশি ধনী হয়ে ওঠায় গরিবের সঙ্গে তাদের পার্থক্য বাড়ছে। ওয়েলথ এক্সের সমীক্ষায় বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের খুশি হওয়ার কিছু না থাকলেও খুশি হওয়ার উপাদান রয়েছে মঙ্গলবার প্রকাশিত জাতিসংঘের আরেক প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে তিন বছর ধরে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়লেও বাংলাদেশে কমছে। ক্ষুধামুক্তির লড়াইয়ে বাংলাদেশের সাফল্য যে ঈর্ষণীয় তা আবারও প্রমাণিত হলো জাতিসংঘের প্রতিবেদনে। দেশের অতিধনীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি সামাজিক বৈষম্যের বাস্তবতাই তুলে ধরেছে। উন্নয়নের সুফল সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে ধনী-গরিবের ব্যবধান কমানো সরকারের লক্ষ্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর