সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

দোয়া কখন কবুল হয়

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

দোয়া কখন কবুল হয়

দোয়া প্রত্যেক মানুষের জন্য অপরিহার্য। আমাদের জীবনে দোয়ার গুরুত্ব অনেক। দোয়া ছাড়া কোনো মুসলমান চলতে পারে না। কম বেশি সবাই মহান পরওয়ারদিগারের কাছে দোয়া করেন। কান্নাকাটি করেন। মহান রবের কাছে নিবেদন করেন। কিন্তু কখন আল্লাহ পাক দোয়া কবুল করেন এবং কখন কবুল করেন না তা জানা দরকার। রসুল (সা.) থেকে এ বিষয়ে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। দোয়া কবুল হওয়ার সর্বপ্রথম শর্ত হলো উপার্জন হালাল হওয়া। হারাম খেলে কখনো দোয়া কবুল হয় না। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলে আকরাম (সা.) বলেছেন, আল্লাহ পূত-পবিত্র এবং তিনি কেবল পবিত্র জিনিসই কবুল করেন। আর আল্লাহ মুমিনদের ওই বিষয়েরই হুকুম দিয়েছেন, নবী রসুলদের তিনি যে বিষয়ের হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হে রসুলগণ! পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং নেক কাজ করুন। (মুমিনদের উদ্দেশ্য করেও) তিনি বলেছেন, হে মুমিনগণ! তোমরা পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার কর, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি। তারপর রসুলুল্লাহ (সা.) এমন ব্যক্তির কথা  উল্লেখ করলেন, যে দীর্ঘ সফর করেছে, তার মাথার কেশ অবিন্যস্ত, শরীরও ধূলিমলিন। সে আকাশের দিকে হাত উঠিয়ে বলছে, সে আমার রব! হে আমার রব! কিন্তু তার আহার্য হচ্ছে হারাম, পানীয়ও হারাম, পোশাকও হারাম। হারাম খেয়েই তার বয়োবৃদ্ধি ঘটেছে। তাই তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে? (মুসলিম শরিফ)। কার কার দোয়া কবুল হয় এ বিষয়ে প্রিয় রসুল (সা.) এর বর্ণনা পাওয়া যায়। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) সূত্রে নবী করিম রসুল (সা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, পাঁচ ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়।  (১) মজলুমের দোয়া, যে পর্যন্ত সে প্রতিশোধ গ্রহণ না করে, (২) হাজীর দোয়া, যে পর্যন্ত সে বাড়িতে ফিরে না আসে, (৩) আল্লাহর পথের মুজাহিদের দোয়া, যে পর্যন্ত সে জিহাদ থেকে বসে না পড়ে, (৪) অসুস্থ ব্যক্তির দোয়া, যে পর্যন্ত সে সেরে না উঠে, (৫) কোনো মুসলমান ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে অপর মুসলমান ভাইয়ের দোয়া। তারপর তিনি বললেন, এগুলোর মধ্যে আবার সবচেয়ে দ্রুত কবুল হয় কোনো মুসলমান  ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে অপর মুসলমানের দোয়াটি  (বায়হাকি)।  হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রিয় রসুল (সা.) বলেছেন, তিন ধরনের লোকের দোয়া কখনো ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। (১) রোজাদার যখন ইফতার করে, (২) ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া, (৩) মজলুমের দোয়া। মজলুম ব্যক্তির দোয়াকে আল্লাহ মেঘমালার ওপর উঠিয়ে নেন এবং এর জন্য আসমানের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। আল্লাহ বলেন, আমার ইয্যতের কসম! আমি তোমাকে অবশ্যই সাহায্য করব, যদিও তা কিছুকাল পরে হয়  (তিরমিযি)।

লেখক :  খতিব, সমিতি বাজার মসজিদ, নাখালপাড়া, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর