শিরোনাম
সোমবার, ১৩ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

সরকারি পাটকল

কৃত্রিমভাবে টিকিয়ে রাখা অযৌক্তিক

পাটকল শ্রমিকদের ধর্মঘটে সরকারি পাটকল সংলগ্ন এলাকাগুলোর জনজীবনে অভিশাপ নেমে এসেছে। ধর্মঘটীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করায় ভোগান্তির মুখে পড়ছে সাধারণ মানুষ বিশেষত কর্মজীবী ও শিক্ষার্থীরা। পাটকল শ্রমিকদের ধর্মঘটের পেছনে অবশ্যই যৌক্তিকতা রয়েছে। তারা বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে শনিবার তৃতীয় দিনের মতো ঢাকার ডেমরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন রাষ্ট্রায়ত্ত লতিফ বাওয়ানী ও করিম জুট মিলের শ্রমিকরা। তারা ডেমরা-যাত্রাবাড়ী, ডেমরা-রামপুরা ও ডেমরা-শিমরাইল সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় গাছের গুঁড়ি, ফেলে যান চলাচল বন্ধ করা হয়। রাস্তায় টায়ার, কাঠ-বাঁশে আগুন জ্বেলে বিক্ষোভ ও লাঠিমিছিল করেন তারা। কয়েকজন গাড়িচালককে পাটকল শ্রমিকরা গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধরও করেন। বকেয়া মজুরিসহ নয় দফা দাবিতে খুলনায় আন্দোলনে নামেন রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকলের শ্রমিকরা। পাটকলের উৎপাদন বন্ধ রেখে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী শনিবার খালিশপুর নতুন রাস্তা মোড়ে তিন ঘণ্টা রাজপথ-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচিও পালন করেন তারা। আমরা আশা করব শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ভাতা প্রদানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা সরকার ত্বরিত ব্যবস্থা নেবে। তবে বছরে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা লোকসান করে সরকারি মালিকানাধীন পাটকল নামের স্বেতহস্তি পোষার বিলাসিতা জিইয়ে রাখা উচিত হবে কিনা সে বিষয়টির ভাবতে হবে। দেশের সরকারি পাটকলগুলো জনগণের ট্যাক্সের টাকার অপচয় ছাড়া গত চার যুগে দেশবাসীর জন্য যা উপহার দিয়েছে তা হলো কথায় কথায় ধর্মঘট ও মারদাঙ্গা আচরণ। সোজা কথায় বলা যায় সরকারি পাটকলগুলো জাতির জন্য এতটাই অভিশাপ হয়ে উঠেছে যে, এগুলোর উৎপাদন বন্ধ করে সরকারি তহবিল থেকে বেতন ভাতা দিলে তাতে লোকসানের পরিমাণ কিছুটা কম হবে। কারণ পাট কেনার ক্ষেত্রে যে চুরি এবং ওভারটাইমের নামে যে লুণ্ঠন চলে সে ক্ষেত্রে তার অবসান ঘটবে। আমরা আশা করব সরকারি পাটকলগুলোকে রাজনীতির উপকরণ বানিয়ে আর কৃত্রিমভাবে টিকিয়ে রাখা হবে না। বেসরকারি পাটকলগুলো যেখানে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে টিকে রয়েছে সেখানে সরকারি পাটকলগুলো দেশবাসীর দেওয়া কর অপচয় করার জন্য ব্যবহৃত হবে তা কাম্য হওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর