সোমবার, ২৭ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

বাংলাদেশের জনসংখ্যা

আশীর্বাদ যেন অভিশাপ না হয়

বাংলাদেশের জনসংখ্যা বাড়ছে হু হু করে। প্রতি ১৩ সেকেন্ডে দেশে একজন জন্মগ্রহণ করছে আর ১৪৪ সেকেন্ডে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। গড় হিসাবে প্রতি দুই মিনিট ২৪ সেকেন্ডে মোট জনসংখ্যায় ১১ জন বৃদ্ধির বিপরীতে একজনের মৃত্যু হওয়ায় ওই সময়ে জনসংখ্যায় ১০ জন যুক্ত হচ্ছে। দিনে যুক্ত হচ্ছে প্রায় ছয় হাজার মানুষ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর তথ্যানুযায়ী, ১৯৭৪ সালে জনসংখ্যা ছিল সাত কোটি ১৪ লাখের মতো, ১৯৯১ সালে ১০ কোটি ৬৩ লাখ এবং ২০১১ সালে দাঁড়ায় ১৪ কোটি ২৩ লাখ। জনসংখ্যাবিদদের হিসাবে জানুয়ারি, ২০১৮-তে মোট জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার। বিবিএসের তথ্যমতে আসছে জুলাই পর্যন্ত দেশের মোট জনসংখ্যা দাঁড়াবে ১৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬৯ হাজার। এ জনসংখ্যার ৬৬ দশমিক ৬৯ ভাগ অর্থাৎ সংখ্যার হিসাবে ১১ কোটি ১৬ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ কর্মক্ষম। মোট কর্মক্ষম মানুষের মধ্যে নারী পাঁচ কোটি ৬৫ লাখ ৩৮ হাজার এবং পুরুষ পাঁচ কোটি ৫১ লাখ ৪০ হাজার। বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যাকে তাত্ত্বিক বিবেচনায় আশীর্বাদ বলে অভিহিত করা যায়। জনসংখ্যাবিদ ও অর্থনীতিবিদদের মতে, কর্মক্ষম জনসংখ্যা অর্থাৎ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড দিক দিয়ে বাংলাদেশ বর্তমানে স্বর্ণযুগে অবস্থান করছে। যখন কোনো দেশের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের বেশি কর্মক্ষম থাকে তখন ওই দেশ ডেমোগ্রাফিক বোনাসকালে অবস্থান করছে বলে ধরা হয়। এ জনসংখ্যা কোনো না কোনোভাবে অর্থনৈতিক কাজে অংশগ্রহণ করে ও দেশের জিডিপিতে অবদান রাখে। এটা বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য এক সুবর্ণ সুযোগ। আমরা সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারছি না। বিবিএসের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী কর্মে নিয়োজিত মানুষের সংখ্যা ছয় কোটি আট লাখ। সংখ্যার হিসাবে ১১ কোটি ১৬ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ কর্মক্ষম এর মধ্যে পাঁচ কোটি আট লাখ মানুষের কর্মক্ষমতা জাতীয় উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। যাদের বড় অংশ নারী। গৃহকাজে তাদের অবদানকে খাটো করে না দেখেও বলা যায় অর্থ উপার্জনমুখী কর্মকাণ্ডে নারীদের আরও বড় আকারে জড়িত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাত্ত্বিক বিচারে দেশের বর্তমান জনসংখ্যা আশীর্বাদ হলেও জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি প্রায় শূন্যের পর্যায়ে নামিয়ে না আনতে পারলে এক সময় বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান তথা খাদ্য ও বাসস্থান সংস্থানে সংকট দেখা দেবে। যা কাম্য হওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর