বৃহস্পতিবার, ২০ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

মিথ্যা সাক্ষ্যদান থেকে দূরে থাকতে হবে

মাওলনা মুহাম্মদ আশরাফ আলী

মুমিনদের অপরিহার্য গুণাবলির উল্লেখ করে সূরা ফোরকানের ৭২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না’, সূরা হজের ৩০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে ‘তোমরা মিথ্যা থেকে আত্মসংবরণ কর।’

হাদিসে বলা হয়েছে, ‘মিথ্যা সাক্ষ্যদান ও আল্লাহর সঙ্গে শিরক- দুই-ই সমান।’ আবু দাউদ, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, তাবারানি। মিথ্যা সাক্ষ্যদান ইসলামের দৃষ্টিতে একটি মারাত্মক অপরাধ। মিথ্যা সাক্ষ্যদানকারীদের পরিণাম সম্পর্কে হাদিসে আছে, ‘কিয়ামতের দিন মিথ্যা সাক্ষ্যদানকারীদের জন্য জাহান্নামের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত তারা পা-ও নাড়াতে পারবে না।’ ইবনে মাজাহ ও হাকেম। বাস্তবতার দিকে নজর দিলে দেখা যাবে মিথ্যা সাক্ষ্যদাতা কতগুলো গুরুতর পাপে লিপ্ত হয়। প্রথমত, সে অসত্য ও মনগড়া কথা বলে। এ সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারী, মিথ্যাবাদীকে পথ প্রদর্শন করেন না।’ সূরা আল মুমিন। এক হাদিসে আছ, স্বভাবগতভাবে একজন মুমিন সবকিছু করলেও আমানত আত্মসাৎ করতে ও মিথ্যা বলতে পারে না। দ্বিতীয়ত, যার বিরুদ্ধে সে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় তার প্রতি অবিচার-অত্যাচার করা হয়। কেননা এই মিথ্যা সাক্ষ্য দ্বারা সে তার জীবন, সম্পদ ও ইজ্জত-সম্মানের হানি ঘটায়। তৃতীয়ত, যার পক্ষে সে সাক্ষ্য দেয় তার ওপরও অবিচার করে। কেননা এ মিথ্যা সাক্ষ্যের মাধ্যমে সে তার জন্য অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ভোগের সুব্যবস্থা করে দেয়, ফলে তার জন্য জাহান্নাম অনিবার্য হয়ে যায়। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘মিথ্যা সাক্ষ্যের দরুন আমি যদি কাউকে অন্য কোনো মুমিন ভাইয়ের সম্পদ থেকে কিছু দেওয়ার ভুল নির্দেশ দিই, তবে সে যেন তা গ্রহণ না করে।’ বুখারি, মুসলিম।

মিথ্যা সাক্ষ্যদান সম্পর্কে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমি কি তোমাদের গুরুতর কবিরা গুনাহ সম্পর্কে জানাব না? তা হচ্ছে আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার সাব্যস্ত করা, পিতা-মাতাকে কষ্ট দেওয়া, আর সাবধান! অসত্য বলা, সাবধান! মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া।’ বর্ণনাকারী বলেন, শেষের কথাটি তিনি বার বার পুনরাবৃত্তি করতে থাকলেন। শেষ পর্যন্ত আমরা মনে মনে বলছিলাম, আঃ! তিনি যদি নীরব হতেন তবে ভালো হতো। বুখারি মুসলিম, তিরমিজি। আল্লাহ আমাদের সব ধরনের মিথ্যাচার থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর