শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

মামলাজট কমছে না

বিচারপ্রাপ্তির সুযোগ নিশ্চিত হোক

বিচার বিভাগ পৃথক্করণের এক যুগ পূর্তি হয়েছে ইতিমধ্যে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এই পৃথক্করণ মোটামুটিভাবে অবদান রাখলেও বিচারপ্রাপ্তির সুযোগ কতটা নিশ্চিত করেছে, তা প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়। বিচার বিভাগের আন্তরিকতা ও নানামুখী উদ্যোগ সত্ত্বেও দেশের আদালতগুলোয় মামলাজট কমার বদলে গত এক যুগে বেড়েছে আড়াই গুণ। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করা হয় বিচার বিভাগকে। ওই রায়ে বিচার বিভাগ পৃথক্করণের লক্ষ্য পূরণে দেশের সর্বোচ্চ আদালত ১২ দফা নির্দেশনা দিলেও তা এখনো পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। পৃথক্করণের সময় দেশে সাড়ে ১৫ লাখ মামলার জট থাকলেও বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৩৬ লাখে। আপিল বিভাগে ২১ হাজার ৪১০ ও হাই কোর্ট বিভাগে ৪ লাখ ৮৮ হাজার ৫৬২টি মামলা বিচারাধীন। অধস্তন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে ৩০ লাখ ৮৮ হাজার ২৯১টি মামলা। সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আপিল বিভাগে ১৪ হাজার ৩৩৮টি দেওয়ানি, ৬ হাজার ৯০৭টি ফৌজদারি এবং অন্যান্য ১৬৫টি মামলা রয়েছে। হাই কোর্ট বিভাগে দেওয়ানি মামলা রয়েছে ৯৬ হাজার ৪৫০টি, ফৌজদারি ২ লাখ ৯৭ হাজার ৫০৯টি এবং রিট ও অন্যান্য ৯৪ হাজার ৬০৩টি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া অধস্তন আদালতে ১৪ লাখ ৪৩ হাজার ৯০৫টি দেওয়ানি ও ২০ লাখ ৫৯ হাজার ৫৯০টি ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এক যুগ আগে যে বিষয়টি নিয়ে বিচার বিভাগ পৃথক হয়েছিল, সেই একই সমস্যা এখনো রয়ে গেছে। কথায় বলে, বিলম্বিত বিচার বিচারহীনতার নামান্তর। বিচার বিভাগ পৃথক্করণের ঐতিহাসিক ঘটনার পরও বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বিচার প্রার্থীরা রক্ষা পাচ্ছেন না বিচারক সংকট, এজলাস-স্বল্পতা এবং আইনজীবীদের একাংশের সহযোগিতার অভাবে। মামলা ঝুলিয়ে রাখাকে কর্তব্য বলে ভাবেন এমন আইনজীবীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের নিরঙ্কুশ আস্থা জিইয়ে রাখা এবং দেশে আইনের শাসন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিচার বিভাগের সীমাবদ্ধতাগুলো দ্রুত কাটিয়ে ওঠার উদ্যোগ নেওয়া হবে- এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর