শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

আদালতে হট্টগোল

এ আচরণ দুর্ভাগ্যজনক

আইনজীবীরা আদালতেরই অংশ। যাদের সহযোগিতায় বিচারকরা মামলা পরিচালনা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেন। আইনজীবীরা যে কোনো দল বা যে কোনো মতের সমর্থক হতে পারেন। কিন্তু আদালতের মর্যাদা ক্ষুণœ হয় এমন কোনো কর্মকা- আইনজীবীদের কাছ থেকে আশা করা হয় না। নিজেকে আইনজীবী হিসেবে পরিচয় দিতে হলে পেশাগত মর্যাদার বিষয়ে সচেতন থাকা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু আমাদের দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আইনজীবীদের একাংশের দলীয় ক্যাডারসুলভ মনোভাব আইন অঙ্গনের ভাবমূর্তির জন্য বারবার বিড়ম্বনা ডেকে এনেছে। গত বুধবারও ঘটেছে এমনই এক অনভিপ্রেত ঘটনা। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল ওইদিন। কিন্তু মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল সময় চাইলে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বেঞ্চ ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করে। এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি এগিয়ে আনার দাবিতে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা প্রায় তিন ঘণ্টা আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে অবস্থান নিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করে স্লোগান দেন। সকাল ১০টায় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চে কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিন আবেদনের শুনানির পর থেকে এই বিশৃঙ্খলার মধ্যে আর কোনো মামলার কার্যক্রম চালানো যায়নি। পুরোটা সময় আদালতকক্ষ থেকে বের হতে বা নতুন করে কাউকে ঢুকতে বাধা দেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা। বারবার চেষ্টা করেও বিচার কার্যক্রম শুরু করতে না পেরে বেলা সোয়া ১টার দিকে এজলাস থেকে নেমে যান প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতি। আদালতে হট্টগোল, মিছিল-পাল্টা মিছিল, শক্তি প্রদর্শন কোনোভাবেই বাঞ্ছনীয় নয়। আদালতে অবরুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টিও যে কোনো বিবেচনায় অগ্রহণযোগ্য। দেশের সর্বোচ্চ আদালত শুধু নয়, কোনো আদালতে হট্টগোল, মিছিল-পাল্টা মিছিল বিচারব্যবস্থার মর্যাদার পরিপন্থী। এই অর্বাচীন আচরণের পুনরাবৃত্তি আর কখনো হবে না-  আমরা তেমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর