রবিবার, ৩১ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

পোশাক শিল্পের সংকট

যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউর সুবিবেচনা প্রত্যাশিত

বাংলাদেশ শুধু নয়, সারা দুনিয়ার পোশাক শিল্প করোনার আঘাতে বিপর্যস্ত। প্রধান পোশাক রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের সংকট সম্ভবত সবচেয়ে বেশি। কারণ দেশের রপ্তানি আয়ের শতকরা ৮০ ভাগ পোশাক শিল্পনির্ভর। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে পোশাক ক্রেতারা একের পর এক ক্রয়াদেশ বাতিল করায় বাংলাদেশের পোশাক শিল্পসমূহ সংকটে পড়েছে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে প্রধান পোশাক আমদানিকারক দেশ যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, পোশাক শিল্পের অস্তিত্বের ওপর বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রশ্নটিও জড়িত। বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, কভিড-১৯ সংকটের পর গত এপ্রিল পর্যন্ত এক হাজারের বেশি পোশাক কারখানার প্রায় তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্ডার বাতিল বা স্থগিত করেছেন ক্রেতারা, যার বেশিরভাগই ইউরোপ ও আমেরিকায় রপ্তানি হওয়ার কথা ছিল। এর আগে চলতি মাসের প্রথম দিকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিতের সিদ্ধান্ত বদলাতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন পার্লামেন্টের হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন। ওই চিঠিতে বলা হয়েছিল, কিছু ইউরোপিয়ান ব্র্যান্ড ও  খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিগুলোর ক্রয়াদেশ বাতিল ও মূল্য কমানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে- এ ধরনের অনৈতিক ও অস্বস্তিকর পদক্ষেপ পোশাক ব্যবসার নৈতিকতার ধারণার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাতে প্রায় ৪৫ লাখ শ্রমিক কর্মরত, তার মধ্যে নারী শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৬০ শতাংশ। নারীর ক্ষমতায়নে এ খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাছাড়া তৈরি পোশাক শিল্পের কল্যাণে বিভিন্ন সহায়ক সেবা খাত যেমন- ব্যাংক, বীমা, আইটি, পরিবহন, পর্যটন ইত্যাদি গড়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন দুনিয়াজুড়ে দারিদ্র্যবিমোচন এবং নারীর ক্ষমতায়নে মানবিক ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বিকাশে তাদের অবদান কৃতজ্ঞতার সঙ্গেই স্বীকার করা হয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে দুনিয়াজুড়ে সৃষ্ট সংকটে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মানবিক বিবেচনায় এগিয়ে আসবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর