রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

কৃষি ও কৃষকের বঙ্গবন্ধু

শাইখ সিরাজ

কৃষি ও কৃষকের বঙ্গবন্ধু

১৯২০ সালের ১৭ মার্চ। মধুমতী বইছিল তার আপন খেয়ালে। শাখা নদী বাইগারে বয়ে চলছিল বহু বছরের প্রবাহ। টুঙ্গিপাড়ার উঠোনে উঠোনে রবি ফসলের ঘ্রাণ। উচ্ছ্বসিত শেখ পরিবার, শোনা গেল নবজাতকের কান্নার রোল। শুধু মহাকাল জানল আগমন ঘটেছে যুগ যুগ ধরে পরাধীনতার গ্লানি বয়ে বেড়ানো বাঙালির মুক্তিদূতের। এই মধুমতীর সুখ-দুঃখ, তার পারের জনবসতি, কৃষিজীবী পরিবার আর ষড়ঋতুর বৈচিত্র্যময় পালাবদলের ভিতর দিয়ে বেড়ে ওঠা সেই খোকাই হয়ে ওঠেন মুক্তির নেশায় বিভোর এক তরুণ। মুজিব তাঁর নাম। বাবা লুৎফর রহমান আর মা সায়েরা খাতুন। বনেদি কৃষিজীবী পরিবারের দুই মানবিক প্রতিনিধি। গাঁয়ের মাটি আর মানুষের মধ্যে তাঁদের বুনে যাওয়া মানবতার বীজ এখন অসাধারণ ছায়াবৃক্ষ। গত মার্চে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় গিয়েছিলাম। জন্মভিটার আশপাশে বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের মুখে মুখে জাতির জনকের স্মৃতি। গ্রামের এক বৃদ্ধ মাঠের ভিতরের আলপথ ধরে আসছিলেন। তাঁকে থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি। কথা বলতে গিয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়লেন। বললেন, ‘মুজিব আমার এলাকার সম্পর্কে চাচা। তাঁর মা ছিলেন দাদি। একবার শবেবরাতের সময় বাড়িতে হালুয়া-রুটি করার মতো জোগাড় ছিল না। গেলাম দাদির কাছে। দাদি প্রথমে ধমকের স্বরে বললেন, আমি কী করব! তারপর কয়েক সের চাল আর দুটি নারিকেল দিলেন। একটি নারিকেলে গ্যাঁজ বেরিয়েছিল। ওই নারিকেলের একটি শবেবরাতের শিরনিতে ব্যবহার হলো। আমার মা বললেন, আরেকটি মাটিতে লাগিয়ে দিতে। সেটিই গাছ হয়ে উঠল। সেই গাছ এখনো আছে।’ প্রবীণ মানুষটির সঙ্গে গ্রামের ভিতরে চলে গেলাম গাছটি দেখতে। এমন স্মৃতি টুঙ্গিপাড়ার প্রত্যেক মানুষ বয়ে বেড়াচ্ছেন। কৃষকসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে মুজিব সাধারণ মানুষ নন। যাঁরা তাঁকে নিজ চোখে দেখেছেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন, উন্নত বিশ্বে জন্ম নিলে মুজিব হতেন সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের নেতা। কৈশোর পার করতে না করতেই কৃষক-মজুরের সংগ্রামী জীবনই যেন তাঁকে রাজনীতিতে উসকে দিল। ছাত্রজীবনেই রাজনীতির বীজ ভালোমতো বপিত হলো মনে, তখন থেকেই মেহনতি কৃষক-মজুরের পক্ষে শুরু হলো তাঁর অনন্য সংগ্রাম। আর জেলায় জেলায় গণসংযোগ, বক্তৃতা, মেহনতি মানুষকে জাগ্রত করার কাজে মুজিব ভাই হয়ে উঠলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী এক নাম। প্রিয় এক নেতা। বহু বছরের বঞ্চিত মাটিঘেঁষা মানুষের পক্ষে যেন নতুন এক আহ্বান। এসব কথা আমরা পাই বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’য়। তখনকার সময়ে একেক জেলার তৃণমূল দিনমজুর কৃষক অন্য জেলায় যেত ধান কাটতে। তারা তাদের মজুরি বাবদ যে ধান পেত তা নৌকায় করে নিয়ে ফিরত। তাদের বলা হতো ‘দাওয়াল’। পাকিস্তান হওয়ার পর মুসলিম লীগ সরকার দাওয়ালদের ধানের নৌকা আটকাতে শুরু করল। ধান সরকারি ভা-ারে জমা না দিলে ধান ও নৌকা বাজেয়াপ্ত করার ঘোষণা এলো। শেখ মুজিব দাওয়ালদের পক্ষে আন্দোলন গড়ে তুললেন। জেলায় জেলায় সমাবেশ করে কৃষক-মজুরদের পক্ষে সাধারণ মানুষকে জাগিয়ে তুললেন। চল্লিশের দশকে তাঁর রাজনৈতিক সাহচর্যে আসা মানুষের বেশির ভাগই গত হয়েছেন। পঞ্চাশের দশকে তাঁর ৫ ফুট ১১ ইঞ্চির অবয়ব দেখে সাহসে বলীয়ান হয়েছেন- এমন অনেকেই আছেন। যখন গোটা ভূমির মানুষই রুদ্ধ, তখন তাদের মুক্তির সোপান স্বপ্ন রচনা করতে গিয়ে বারবার অন্তরিন থাকতে হয়েছে প্রিয় নেতাকে। এ স্মৃতিও আজ এক হীরকখন্ড কারও কারও কাছে। বাঙালির মায়ের মুখের ভাষার অধিকার বাস্তবায়নের জন্য মুজিব ১৯৪৬ থেকে সংগ্রাম সংগঠিত করার জন্য অসামান্য ভূমিকা রাখেন। ’৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে ঢাকায় যখন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরও অনেকে শাহাদাতবরণ করছেন, মুজিব তখন ফরিদপুর কারাগারে অনশনরত। গোপালগঞ্জে যাওয়ার পথে আমরা ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিক্ষেত্রগুলোর খোঁজ নিচ্ছিলাম। দেখা হলো শেখ মুজিবের সে সময়ের রাজনৈতিক কর্মী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠক নূর মোহাম্মদ বাবুলের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে আমরা ফরিদপুর জেলা কারাগারের গেট পর্যন্ত গেলাম। তিনি স্মরণ করলেন কারাগারে টানা কয়েক দিন অনশন শেষে মুক্তি পেয়ে বঙ্গবন্ধু যখন বেরিয়ে এলেন, সেই স্মৃতি। মানুষের প্রেরণা, ভালোবাসা, আশীর্বাদ আর সমর্থনেই নেতা হয়ে উঠেছেন জাতীয় নেতা। হয়ে উঠেছেন পূর্ব পাকিস্তানের সব মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। আমি গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় চিত্রধারণের কাজ করছি। ভরদুপুরে দেখি আবাদি খেতের কাজ শেষ করে ফিরছেন এক প্রবীণ কৃষক। খালি গা। পরনে লুঙ্গি। বললাম বঙ্গবন্ধুর কোনো স্মৃতি মনে এলে বলার জন্য। নামাজের জন্য তাড়াহুড়া ছিল তার। অনুনয়-বিনয় করলাম। বললেন একটি স্মৃতিকথা। পাকিস্তান আমল। ঋণের দায়ে জর্জরিত এক কৃষকের ঘরের চালও খুলে নিয়ে যাচ্ছিল সরকারের লোকজন। খবর পেয়ে শেখ মুজিব ছুটে এলেন। শুনলেন কত টাকা। নিজের পকেট থেকে সেই ঋণ শোধ করে দিলেন। সরকারের পেটোয়া বাহিনী চলে যাচ্ছিল। তখন পেছন থেকে তিনি ডাক দিলেন। বললেন, ‘টাকা তো শোধ হয়েছে, এবার যেসব নিয়ে যাচ্ছেন আর এলোমেলো করেছেন, সেগুলো ভদ্রলোকের মতো ঠিক করে দিয়ে যান।’ এই স্মৃতি পুরনো মানুষের অনেকেরই জানা। ’৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তরুণ নেতা মুজিব, ’৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে তরুণ নেতা শেখ মুজিব- এভাবেই বাঙালির স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের সূত্রগুলোয় শেখ মুজিব হয়ে ওঠেন বাঙালির কান্ডারি। ষাটের দশকে তিনি এই বাংলার মাটি ও মানুষের মহান নেতা হিসেবে পেলেন বঙ্গবন্ধু খেতাব। যত ইশতেহার, দাবির যত দফা, যত আন্দোলন, সংগ্রাম- সবই রচিত হচ্ছে কৃষিভিত্তিক জীবন বাস্তবতা সামনে রেখে। ৭ মার্চ, ১৯৭১। ঢাকা, রেসকোর্স ময়দানেও যত মানুষের ভিড় তার মধ্যে বড় একটি অংশ ছিল কৃষক, মজুর, মেহনতি। তখন গোটা জনগোষ্ঠীর ৮০ শতাংশের ওপরে কৃষক। যারা শহরে থাকে, তারাও কোনো না কোনোভাবে কৃষিকাজই করে। বঙ্গবন্ধুর সেই আহ্বানে সবচেয়ে বেশি সাড়া দিল এ দেশের কৃষিজীবী মানুষ। ২৬ মার্চ শুরু হওয়া রক্ত-রণাঙ্গনে ছিল এ দেশের কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সোনার বাংলা বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধু যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, তার সর্বাগ্রে ছিল কৃষক। তিনি প্রথম কৃষকের সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে ভাবেন। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রের মূল দায়িত্ব হলো মেহনতি মানুষ- কৃষক ও শ্রমিকের মুক্তি এবং জনগণের মধ্যে পিছিয়ে পড়া অন্য গোষ্ঠীগুলোকে সব ধরনের শোষণ থেকে মুক্তি দেওয়া।’ সংবিধানের ১৬ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘শহর ও গ্রামের জীবনযাত্রার মানের বৈষম্য ধাপে ধাপে দূর করার উদ্দেশ্যে কৃষিবিপ্লবের বিকাশ ঘটাতে হবে।’ আর সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন কৃষকের মর্যাদা। বললেন, ‘যে যত অহংকারী হওয়ার চেষ্টা করি না কেন, সবার শিকড় কৃষিতে।’ সারা দেশ সফর করে বিভিন্ন ভূমির কৃষিঐতিহ্য, কৃষকের অবস্থা, শস্যাবর্তনসহ নানা বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন বঙ্গবন্ধু। স্মরণ করিয়ে দিলেন এ দেশের মাটির বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কথা। যে কথা কোনো দিন কারও মুখে আর শোনা যায়নি। বঙ্গবন্ধু বললেন, এ দেশের মাটি বর্ষাকালে নরম কাদা আর চৈত্রে শক্ত ঢেলা। লোহার মতো শক্ত। ওই ঢেলায় মাথা ফেটে রক্ত বেরিয়ে যায়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মাত্র ১ হাজার ৩১৪ দিন সময় পেয়েছেন স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে। প্রতিটি খাতেই পড়ে তাঁর দূরদর্শী, দীর্ঘমেয়াদি ও সুচিন্তিত দৃষ্টি। স্বাধীনতা-উত্তর ১৯৭২ সালে দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদন ছিল ১ কোটি ১০ লাখ মেট্রিক টন। সাড়ে ৭ কোটি মানুষের জন্য ওই খাদ্য পর্যাপ্ত ছিল না। খাদ্য ঘাটতি সংকুলানে বঙ্গবন্ধু সরকার স্বাধীনতার পর দুই বছর খাদ্যে ভর্তুকি প্রদান করেছে। প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কৃষি সেচ সুবিধায় বেশি বিনিয়োগ ধরা হয়েছিল। ১৯৭৩-৭৪ অর্থবছরে সেচে বরাদ্দ ছিল ৩০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, শস্য উৎপাদনে বরাদ্দ ছিল ৩০ কোটি ২১ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় কৃষিতে বরাদ্দ ছিল মোট এডিপির ১৩.১৪ শতাংশ, যা সময়ের প্রেক্ষাপটে ছিল অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। বঙ্গবন্ধুর কৃষি উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তা চিন্তায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেয়েছিল সমবায়। তিনি সমবায় ভিত্তিতে চাষাবাদের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। পরে তাঁর সমবায় চিন্তা নিয়ে সে সময়ের অর্থনীতিবিদ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে তিনি আলোচনা করেছেন। পরিকল্পনাটি যুগোপযোগী করে তোলার জন্য নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি দ্বিস্তরবিশিষ্ট সমবায়ের কথা ভেবেছিলেন। তাঁর সমবায় ভাবনা নিয়ে বহু গবেষণা হয়েছে। সে সময়ের সক্রিয় গবেষক ও অর্থনীতিবিদরা এখনো সেই স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছেন। তবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থেকে বহুদর্শী এক উন্নয়নমনস্ক কর্মবীরের নজির গড়েন বঙ্গবন্ধু। দেশের বনিয়াদ রচনার জন্য বারবার তাকান মাটির দিকে।

১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর দেওয়া ভাষণেই পাওয়া যায় কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে এক পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা ও দর্শন। তিনি নতুন অভিধায় উচ্চারণ করেন কৃষিবিপ্লবের কথা। কৃষিবিদদের তাগিদ দেন গ্রামে যাওয়ার। গ্রামের সঙ্গে শহরের ব্যবধান ঘুচিয়ে আনার কথা বলেন। বলেন মান্ধাতা আমলের কৃষি বাদ দিয়ে আধুনিক ও যন্ত্রনির্ভর কৃষির কথা। ওই অনুষ্ঠানেই তিনি কৃষিবিদদের মর্যাদা এক নম্বরে উন্নীত করার ঘোষণা দেন। আর ১৯৭৩ সালে ১০ নম্বর অ্যাক্টের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নেয় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। ধান ছাড়া অন্যান্য ফসলের গবেষণার উদ্যোগ নেওয়া হয় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে। পুনর্গঠন করা হয় হর্টিকালচার বোর্ড, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, সিড সার্টিফিকেশন এজেন্সি, রাবার উন্নয়ন কার্যক্রম, কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানসহ গবেষণা সমন্বয়ের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল। বাংলার সোনালি আঁশের সম্ভাবনার দ্বার বিস্তৃত করতে প্রতিষ্ঠা করা হয় পাট মন্ত্রণালয়। আজ কৃষি উন্নয়নে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ও অনুসরণীয়। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও তাঁর সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলোরই দৃষ্টান্তমূলক সুফল পাচ্ছি আমরা। পৃথিবী বারবারই বিস্মিত হচ্ছে একজন অবিসংবাদিত নেতার দূরদর্শিতায়। আমাদের কৃষকের চেতনা ও কৃষির বিবর্তনের মধ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু আছেন, গভীরভাবে আছেন। আমাদের সতত সবুজে আছেন, আমাদের ঐশ্বর্য ও সম্ভাবনায় আছেন। আমাদের ফসলি সৌন্দর্য ও গর্বের সঙ্গে আছেন। আজ দেশে অসাধারণ এক কৃষি জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। ১৯৭১ সালে যে তরুণ-যুবা অস্ত্রহাতে শত্রুর মোকাবিলা করে স্বাধীন সূর্য ছিনিয়ে এনেছেন, আজকের এই প্রজন্ম কৃষিতে মনোনিবেশ করে দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় রাখতে শুরু করছেন অসামান্য অবদান। তাঁরা নিজ উদ্যোগেই মজবুত করে চলেছেন আমাদের কৃষি অর্থনীতি। ৪০ বছর ধরে হাঁটছি গ্রামবাংলায়। কৃষকের মাঠে। কৃষিজীবী জনগোষ্ঠীর অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি ও কষ্ট যেমন দেখেছি, গ্রামাঞ্চলের মানুষের দুর্দশা যেমন দেখেছি; একইভাবে দেখেছি হাজার হাজার, লাখ লাখ মানুষকে আত্মবিশ্বাস নিয়ে কৃষিতে মনোনিবেশ করতে। লক্ষ্য করেছি চেতনার জায়গায় আমাদের দেশের মানুষের মতো আত্মবিশ্বাসী, শক্তিশালী ও সৃজনশীল মানুষ আর নেই। বোঝা যায়, যে মাটিতে মাটি ও মানুষের মহান নেতা জাতির জনকের আত্মবিশ্বাসী পদচারণ রয়েছে, সে মাটির মানুষ হেরে যেতে জানে না।

                লেখক : মিডিয়া ব্যক্তিত্ব।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর