শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ইউএস-বাংলার সোনা পাচার

আড়ালের মানুষদের ধরতে হবে

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস ও সোনা চোরাচালান সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। গত ২২ জানুয়ারি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট থেকে ৭ কেজি ২৯০ গ্রাম সোনা আটকের ১৮ দিন পর মঙ্গলবার আরেকটি ফ্লাইট থেকে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর আটক করেছে ৭ কেজি সোনা। দুবাই থেকে আসা ফ্লাইটের উচ্ছিষ্ট খাবারের বাক্স ক্যাটারিং সার্ভিসের গাড়িতে তোলার পর তল্লাশি করে ওই সোনা পাওয়া যায়। আটক করা হয় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের ক্যাটারিং সার্ভিসের আট কর্মীকে। কাস্টমস কর্মকর্তারা গত বছরের ১২ জানুয়ারি ইউএস-বাংলার একটি ফ্লাইটের যাত্রী অবতরণের সিঁড়ির নিচ থেকে ৪০টি সোনার বার উদ্ধার করেন। ৩১ জুলাই তাদের যাত্রী বহনকারী গাড়ির চালকের কাছে পাওয়া যায় ৩ কেজি ৭১২ গ্রাম সোনা। ২০১৯ সালের ২২ নভেম্বর ইউএস-বাংলার একজন কর্মী আটক হন সোনার বারসহ। একই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ১০ কেজি সোনার বারসহ গ্রেফতার একজন কেবিন ক্রু আদালতে সোনা চালানের স্বীকারোক্তি দেন। ওই বছরের ২০ এপ্রিল ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট থেকে ১৪ কেজি সোনা জব্দ করা হয়। এর আগে ২০১৭ সালেও প্রায় ৯ কেজি সোনা উদ্ধার হয় সোনা চোরাচালানের পরিবহন হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস থেকে। সোনা পাচার দেশের অর্থনীতির জন্য বিসংবাদ বয়ে আনছে। এ সোনা বাংলাদেশ থেকে অন্যত্র পাচার হয়ে যাচ্ছে বলেও মনে করা হয়। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের সক্রিয়তায় মাত্র ১৮ দিনের ব্যবধানে বড় অঙ্কের দুটি সোনা চোরাচালান ধরা পড়া প্রশংসার দাবিদার। এটা প্রমাণিত বিষয় যে, ইউএস-বাংলা সোনা চোরাচালানকারীদের বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এ যাবৎ যারা ধরা পড়েছে তাদের প্রায় সবাই বেসরকারি ওই বিমান সংস্থার কর্মী ও কর্মকর্তা হওয়ায় ধারণা করা যায় এর নেপথ্যে প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রকদের সম্পর্ক থাকা অস্বাভাবিক নয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখ এড়িয়ে কাদের যোগসাজশে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস সোনা পাচারের বাহন হিসেবে এতকাল ব্যবহৃত হয়েছে তাও যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে উদঘাটিত হওয়া উচিত। সন্দেহভাজন এ বিমান সংস্থা মাদক, অস্ত্র ও অন্যান্য বেআইনি দ্রব্য পাচারের সঙ্গে জড়িত কিনা সে বিষয়েও আইন প্রয়োগকারীদের তদন্ত দাবি রাখে। দেশের সুনামের স্বার্থেই সোনা চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত চুনোপুঁটি নয় আড়ালের মূল হোতাদের ধরতে হবে। এ ব্যাপারে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরসহ আইন প্রয়োগকারীরা আরও সক্রিয় হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর