সোমবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

বাড়ছে দরিদ্রতা

সংকট এড়ানোর কর্মকৌশল ঠিক করুন

লোককাহিনির ভূতেরা পেছন পানে হাঁটে। করোনাভাইরাস সারা দুনিয়ায় সে অবাঞ্ছিত বাস্তবতার উদ্ভব ঘটিয়েছে। মাত্র ১৩-১৪ মাস আগেও বাংলাদেশ ছিল বিশ্বের সবচেয়ে অগ্রসর জিডিপি প্রবৃদ্ধির দেশ। স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ শুধু নয়, উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছানোর স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু করোনাভাইরাসের অপপ্রভাবে থমকে গেছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি। দারিদ্র্য বিমোচনে যে দেশ দুনিয়াবাসীর কাছে রোলমডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিল, সে দেশও সামনে এগোনোর বদলে পেছনে হাঁটার নিয়তি এড়াতে পারছে না। সেন্টার ফর পলিসি ভায়ালগের (সিপিডি) গবেষণায়ও এ তথ্য উঠে এসেছে। সিপিডির গবেষণায় বলা হয়েছে, করোনাকালে কাজ হারিয়ে গরিব মানুষের সংখ্যা ২০ থেকে বেড়ে ৩৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। দরিদ্র হয়েছে ১ কোটি ৬৮ লাখ মানুষ। দেশের ২০ শতাংশ পরিবারের আয় কমে গেছে। এ অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ার মুখে নতুন সংক্রমণ তা বিলম্বিত করছে। নতুন করে আরও দরিদ্র হওয়া ও কর্মহীন হওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে। করোনায় দেশজুড়ে প্রচুর মানুষ কাজ হারিয়েছে। এ সংখ্যা ১ কোটি ১১ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ২ কোটি ৫ লাখ হতে পারে। কর্মহীনদের মধ্যে প্রচুর অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক রয়েছে। করোনা সংক্রমণের প্রথম ধাপে সারা দেশে শ্রমজীবীদের বেতন কমেছে ৩৭ শতাংশ, ঢাকায় ৪২ ও চট্টগ্রামে ৩৩ শতাংশ। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ৬৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। শহর এলাকায় অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের গড়ে ৬৯ শতাংশ মানুষ এখনো চাকরি হারানোর ঝুঁকির মধ্যে আছে। সিপিডির গবেষণায় দেশে নতুন করে দেড় কোটির বেশি দরিদ্র বাড়ার যে আশঙ্কা প্রকাশ পেয়েছে তা উদ্বেগজনক। দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ গত এক যুগে যে নজরকাড়া সাফল্য অর্জন করেছে, করোনা মহামারী তাতে বাদ সেধেছে। বাংলাদেশের নিম্নআয়ের মানুষ সামনে এগোনোর বদলে কর্মহীন হয়ে এখন পেছনে হাঁটছে। এ অবস্থার পরিবর্তনে সরকারকে দারিদ্র্যপীড়িতদের পাশে দাঁড়াতে হবে।  করোনাকালের পর তারা যাতে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে  সে কর্মকৌশল নির্ধারণ করা জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর