মঙ্গলবার, ২৯ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

স্বাভাবিক মৃত্যুর পরিবেশ সৃষ্টি কি খুবই কঠিন?

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

স্বাভাবিক মৃত্যুর পরিবেশ সৃষ্টি কি খুবই কঠিন?

মুক্তিযোদ্ধাদের আনন্দ-বেদনা নিয়ে দুই কথা লিখতে চেয়েছিলাম। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তিযোদ্ধারা একটু সম্মানে থাকবেন, ভালোবাসায় থাকবেন, দেশবাসীর চোখের মণি হয়ে থাকবেন তা-ই ছিল অনেকের প্রত্যাশা। দুই দশকের বেশি হবে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের ২ হাজার টাকা সম্মানী ভাতা চেয়েছিলাম। আমার বোন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তখন তা মানেননি। সেসব নানা কারণে আওয়ামী লীগ ছেড়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ গঠন করেছিলাম। মুক্তিযোদ্ধাদের সেই ২ হাজার টাকা সম্মানী ভাতা আমার বোন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখন ২০ হাজার টাকা করেছেন। স্বাধীনতার পর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ৭৫ টাকা সম্মানী ভাতা দিয়ে শুরু হয়েছিল। এখন তা প্রায় ৫০ হাজার, সর্বনিম্ন ৩০ হাজার টাকা। মুক্তিযোদ্ধা এবং খেতাবপ্রাপ্তদের ভাতা বা কোনো সম্মানী ছিল না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যেমনি সম্মানীর ব্যবস্থা করেছেন, তেমনি খেতাবপ্রাপ্তদের জন্যও। কিছুদিন একজন মুক্তিযোদ্ধা তিন ধরনের ভাতাই পেয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত এবং খেতাবপ্রাপ্ত এ তিনটি সম্মানীই পেয়েছেন। মাঝে একজন রাজাকারপুত্র সচিব ফাইলে লিখে গেছেন এ তিন ভাতার যেটা সর্বোচ্চ একজন মুক্তিযোদ্ধা শুধু সেটাই পাবেন। পাঠক বিচার করুন, একজন মুক্তিযোদ্ধা তিনি যদি যুদ্ধাহত হন তাহলে তিনি যুদ্ধাহতের ভাতা পাবেন, মুক্তিযোদ্ধার পাবেন না, সাহসিকতার জন্য যদি খেতাব পেয়ে থাকেন তাহলে তিনি খেতাবপ্রাপ্তের ভাতা পাবেন না। একজন মুক্তিযোদ্ধা হলেন আদি-অন্ত চিরসত্য। মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে একজন যুদ্ধাহত হতে পারেন, নিহত হতে পারেন, একজন যোদ্ধা বীরত্বের জন্য খেতাব পেতে পারেন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা প্রথম, মুক্তিযোদ্ধাই আসল। সাধারণত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী বেশি। সে কারণে যারা খেতাব পেয়েছেন তাদের অনেকেই খেতাবপ্রাপ্ত হিসেবে খেতাবপ্রাপ্তের সম্মানী পান না। যুদ্ধাহতের সম্মানী পেলে তিনি মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী পান না। এ এক লেজেগোবরে অবস্থা। সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী দিয়েছে, সম্মানী দিয়েছে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের, সর্বোপরি খেতাবপ্রাপ্তদের। কী করে কেন যেন যুদ্ধাহত হওয়ার কারণে আমি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা পাই। বাঙালি জাতির মধ্যে একমাত্র সশস্ত্র বাহিনীর বাইরে বীরউত্তম খেতাব পেয়েছিলাম। আমি এ পর্যন্ত বীরউত্তমের কোনো সম্মানী পাই না, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেও না। এ রকম অনেকেই আছেন যারা আহত হয়েছেন, খেতাব পেয়েছেন তাদের সম্মানী নিয়ে সে যে কী এলোমেলো ব্যাপার কল্পনা করা যায় না। আবার অন্যদিকে যাচাই-বাছাই! যেদিন সম্মানী দেওয়া শুরু হয়েছে সেদিন থেকে সম্মানী পান। কেউ কেউ হয়তো মরে গেছেন। তার ছেলেমেয়ে বা অসহায় স্ত্রীর কাছে নোটিস গেছে- জামুকায় এসে যাচাই-বাছাই করতে হবে। মনে হয় কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধ করে মারাত্মক অন্যায় করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া পাকিস্তান সরকার বা পাকিস্তানিদের কাছে নিশ্চয়ই অপরাধ ছিল। কিন্তু বাংলা ও বাঙালির কাছে তো ছিল গৌরবের। গেজেট করার জন্য সবুজ বই, লাল বই, ভারতীয় তালিকা এসব করতে গিয়ে আজ মুক্তিযুদ্ধের মহিমাই ভূলুণ্ঠিত। সেদিন এক জায়গায় দেখলাম কয়েকজন এক তালিকা হাতে নিয়ে বসে আছেন। এরা মুক্তিযোদ্ধা না। অভিযোগেরও শেষ নেই। কুমিল্লার লোক দিনাজপুরের লোকের নামে অভিযোগ করছেন মুক্তিযোদ্ধা না। অনেকে আবার তলিয়েও দেখে না মুক্তিযুদ্ধের পরে তাদের জন্ম। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় আর জামুকা হুতুম পেঁচার মতো ছপ্পন ধরে বসে আছে অভিযোগ এলেই হলো। ডাকাতি, খুন যে কোনো অপরাধ করে ক্ষমা পাওয়া যায়। প্রশাসন তেমন আমলে নেয় না। কিন্তু কেউ মুক্তিযোদ্ধা না এমন অভিযোগ আনলে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ে। পারলে তখনই তাকে ভুয়া বলে দেয়। এ এক আজব লীলা খেলা। এ তো গেল প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার দলীয় পরিচয়ে নকল হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া। অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের সামাজিক মর্যাদাও দিন দিন শেষ হতে চলেছে। একেবারে নিম্ন পর্যায়ে এসে গেছে। যদিও সমাজে কোথাও এখন কারও প্রতি তেমন শ্রদ্ধা নেই। ফেসবুক, ইউটিউবের কল্যাণে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিবর্গ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- এদের প্রতি যেভাবে তাচ্ছিল্য করে কথাবার্তা হয় বিরক্তিতে মন ভরে যায়। কিন্তু কোনো উপায় নেই। এ অবক্ষয় থেকে কীভাবে মুক্তি হবে! সেদিন দু-চার জন বলছিল, বঙ্গবন্ধু কবে কোন জায়গায় বলেছিলেন মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ লাখ ১৮ হাজার। নির্বোধরা ভেবেও দেখে না, ৯৬ হাজার পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসমর্পণ করেছিল। ৯৬ হাজার পাকিস্তানি সৈন্যকে আত্মসমর্পণ করাতে সর্বনিম্ন ট্রেনিংপ্রাপ্ত সুদক্ষ ৩ লাখ সৈন্যের প্রয়োজন। কমবেশি দেশব্যাপী যুদ্ধ হয়েছে। ২-৪ লাখ মুক্তিযোদ্ধা পাকিস্তানিদের পরাজিত করার কথা নয়। যে যখন যার মতো করে পারছে সে তখন তার মতো করেই মুক্তিযোদ্ধা বানাবার চেষ্টা করছে। আমার দুর্ভাগ্য, বঙ্গবন্ধুর পায়ের কাছে অস্ত্র বিছিয়ে দিয়ে আমরা বড় নিরাপদ বোধ করেছিলাম। সত্যিই তখন চাওয়া-পাওয়ার কোনো ভাবনাই ছিল না। মুক্তিযোদ্ধাদের একটি তালিকা অনিচ্ছা সত্ত্বেও সে সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দিয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধুকে নির্মম হত্যার পর সে তালিকা ধরে ধরে কতজনকে যে গ্রেফতার করেছে, জেল খাটিয়েছে, বেশ কয়েকজনকে মেরে ফেলেছে। রাষ্ট্রের যখন তালিকা করা শুরু হয় মূলত এরশাদের সময় তখন অনেকেই খুব একটা আগ্রহ দেখায়নি। অনেকের ভাবনা ছিল কাদের সিদ্দিকী দেশে এলে তিনিই সব করবেন। আমি দেশে এলাম। মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে চিৎকার-ফাৎকার করতে লাগলাম। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর সেই হত্যার প্রতিবাদ করায় আমি যেমন সে সময়ে সরকারের চরম শত্রু হয়েছিলাম, তেমনি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২ হাজার টাকা সম্মানী চেয়ে কী করে যেন এই সরকারেরও চক্ষুশূল হলাম। মনে হয় এ চক্ষুশূল হয়েই এপার থেকে ওপার যেতে হবে। এখনো কাদেরিয়া বাহিনীর ৮-৯ হাজার প্রকৃত যোদ্ধা তালিকাভুক্ত হতে পারেনি। প্রতিদিনই কেউ না কেউ আসছে। সবাইকে স্বীকার করতেও পারছি না। কারণ তারা অনেকেই সঠিকভাবে বলতে পারে না। তেমন কোনো কাগজপত্রও নেই। বিশেষ করে যারা পুলিশ-মিলিটারি-রক্ষীবাহিনীতে গিয়েছিল তাদের নিয়েই বেশি সমস্যা। আবার যারা লেখাপড়া শিখে বড় চাকরি-বাকরি করেছে, বিত্ত-বৈভবে বড় হয়েছে তাদের দেমাক আলাদা। এভাবেই কাটছে আমার অষ্টপ্রহর।

সেদিন যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর টাঙ্গাইলের জেয়াদ আল মালুম পরপারে চলে গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আল্লাহ তাকে বেহেশতবাসী করুন। জেয়াদ আল মালুমের বাড়ি করটিয়া জমিদারবাড়ির পেছনে। টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ-জামালপুরে সর্বপ্রথম রাজাকার সৃষ্টি হয়েছিল করটিয়ায়। করটিয়া কলেজের পুব পাশে মাদরাসা মাঠে তাদের প্রশিক্ষণ হয়। যে প্রশিক্ষণের উদ্বোধন ও সমাপনীতে সরকারের পক্ষ থেকে গিয়েছিলেন তখনকার টাঙ্গাইলের এডিসি রংপুরের আশিকুর রহমান। এরপর খুব সম্ভবত নুরু মওলানার নেতৃত্বে দ্বিতীয় রাজাকার বাহিনী ট্রেনিং শুরু হয়েছিল সরিষাবাড়ীতে। করটিয়ার জমিদার হুমায়ুন খান পন্নীর বাড়ির গা-ঘেঁষে মালুমদের বাড়ি। মালুম সম্পর্কে আমি পরিষ্কার জানি। তিনি ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। মুক্তিযুদ্ধের সূচনায় তেমন সক্রিয় ছিলেন না। গোড়ান-সাটিয়াচরা যুদ্ধের সঙ্গে সঙ্গে তিনি তার নানাবাড়ি চলে যান। টাঙ্গাইল জেলায় কাদেরিয়া বাহিনী ছাড়া আর কোনো মুক্তিযোদ্ধা ছিল না। কিছু মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে নাগরপুরের বাতেন। হ্যাঁ এটা সত্য, যুদ্ধের সময় তার সঙ্গে ২০০-৩০০ মুক্তিযোদ্ধা ছিল। তারা কোনো যুদ্ধ করতে পারুক আর না পারুক তাদের যোদ্ধা ছিল। এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করেছে সেটা যুদ্ধের জন্য অনেক কাজে লেগেছে। আগস্টে গুলি লাগার পর সুস্থ হয়ে যেমন পুব দিকে ভালুকায় মেজর আফসার তাকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কিছু  করেনি। মেজর আফসার এবং তার দল থাকায় একটা দিক নিরাপদ হয়ে আছে ভেবে তাকে বরং সাহায্য করেছি। ঠিক তেমনি পশ্চিমে নাগরপুর-চৌহালী-ঘিওর-দৌলতপুর এলাকায়ও বাতেন বাহিনীকেও কিছু বলতে যাইনি। কিন্তু স্বাধীনতার পর জাসদ করে গণবাহিনী করে অসংখ্য হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত হয়ে পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান করে সে অনেক মুক্তিযোদ্ধার তালিকা দিয়েছে। তারা সরকারি তালিকাভুক্তও হয়েছে। তাতে আমার বিন্দুমাত্র কোনো কষ্ট নেই। রাজাকার-আলবদর বাহিনীতে যাদের নাম ছিল, যারা শান্তিবাহিনীর নামে অশান্তি করেছে এসব তালিকাভুক্ত লোক ছাড়া কেউ সরকারি তালিকায় মুক্তিবাহিনী হলে আমার তাতে কোনো আপত্তি নেই। মুক্তিযুদ্ধের সময় সাড়ে ৭ কোটি মানুষের মধ্যে ৫-৬ কোটিই নিদারুণ কষ্ট করেছে। তাদের সবাইকে মুক্তিযোদ্ধা বললে আমার দিক থেকে কোনো আপত্তি নেই। পাঠকদের হয়তো মনে আছে, ১৯ এপ্রিল কাদেরিয়া বাহিনীর এক প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন লালটু মৃত্যুবরণ করেন। খুব তাড়াহুড়া করে তাঁর দাফন-কাফন হয়। অভিযোগ আসে, মৃত্যুর আগে তাঁর ওপর নির্যাতন করা হয়েছিল। সেই অভিযোগ জেলা প্রশাসককে জানালে তিনি যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থার পদক্ষেপ নেন। আমি লালটুর কবর জিয়ারতে যাই এবং তাঁর বাড়ির লোকজন বিশেষ করে তাঁর স্ত্রী এবং মেয়ের সঙ্গে কথা বলি। আমার কাছে অভিযোগটা অনেকটাই সত্য মনে হয়। গত সপ্তাহে লালটুর লাশ কবর থেকে তুলে ময়মনসিংহে নিয়ে ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। রিপোর্ট কয়েক দিনের মধ্যেই হয়তো পাওয়া যাবে। এখানে আমার বক্তব্য স্পষ্ট, কোনো মুক্তিযোদ্ধা নির্যাতিত হয়ে অসম্মানিত হয়ে মারা যাবেন, কোনো মুক্তিযোদ্ধা নিরাপদ মৃত্যুর সুযোগ পাবেন না তা আমাদের কাম্য নয়। তাই কমান্ডার লালটুর ব্যাপারে প্রশাসনিক উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। যারা লালটুর ওপর অত্যাচার করেছে আইনানুগ বিচারে যা হওয়ার হবে। সেখানে আমার কোনো কথা নেই। আমার কথা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি- সেটা হলেই হলো।

ঠিক বুঝতে পারি না লকডাউন, শাটডাউন, গাড়ি বন্ধ, দোকান বন্ধ অফিস খোলা। ঈদের সময় হাজার হাজার লাখ লাখ মানুষের সে যে কি দুরবস্থা চোখে দেখে সহ্য করা যায় না। আবার সেই একই ছোটাছুটি। গত বৃহস্পতিবার বিকালে টাঙ্গাইল থেকে এসেছি। সাভার থেকে ঢাকা পর্যন্ত শুধু পায়ে হাঁটা মানুষ আর মানুষ। কী আক্ষেপ করছে, গালাগাল করছে কানে আঙুল দিয়ে থাকলেও সহ্য করা যায় না। কেন যেন কখনোসখনো মনে হয় গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ এটাওটা করা একি সরকারকে, সরকারপ্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অপ্রিয় করার প্রয়াস? করুন, যা ইচ্ছে তাই করুন। কিন্তু গরিবের পেটের কথাও চিন্তা করবেন। যাদের বেশুমার আছে তাদের নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। কিন্তু যারা দিন এনে দিন খায় তাদের উপায় কী?

আবার হঠাৎ গতকাল রাতে ওয়্যারলেস গেটের সামনে এক বিরাট বিস্ফোরণ ঘটেছে, দালান ভেঙে পড়েছে। সামনে দিয়ে যাওয়ার পথে দু-তিনটি বাস দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় সাতজন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। যুদ্ধের সময় অনেক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছি। ২০ নভেম্বর, ১৯৭১ পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে ১৮টি সেতু ধ্বংস করেছিলাম। ঢাকা-টাঙ্গাইলের ১৮টিসহ ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, এলেঙ্গা, ভূঞাপুর, নাগরপুর, সন্তোষ, পোড়াবাড়ী, চারাবাড়ী এসব রাস্তায় ৪৬টি ব্রিজ-কালভার্ট উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর কাদেরিয়া বাহিনী না হলেও ৫০০-৬০০ বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। আমি নিজেও ৩০-৪০টি বিস্ফোরণে অংশ নিয়েছি। তাই বিস্ফোরণের ধর্ম বুঝি। একটা যেনতেন বিস্ফোরণে এভাবে এত বড় ভবন ভেঙে পড়তে পারে না। এটা কোনো পরিকল্পিত নাশকতা কি না একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

লেখক : রাজনীতিক।

www.ksjleague.com

সর্বশেষ খবর