বুধবার, ৩০ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

আমলা আধিপত্য

এ ভুল সংশোধন হোক

মাছ ও পানির সম্পর্ক যেমন অবিচ্ছেদ্য তেমন রাজনীতিকদের সঙ্গে দেশের সাধারণ মানুষের সম্পর্ক। এ দেশের সব মহৎ অর্জনের পেছনে রয়েছে রাজনীতিকদের ত্যাগ-তিতিক্ষা। বাঙালি জাতির হাজার বছরের সেরা অর্জন স্বাধীনতা এসেছে রাজনীতিকদের মাধ্যমে। বিবিসির জরিপে বঙ্গবন্ধুকে নির্বাচিত করা হয়েছে সর্বকালের সেরা বাঙালি হিসেবে। বাঙালি নামটি যিনি দুনিয়াজুড়ে পরিচিত করেছিলেন সেই মহাপুরুষের নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সর্বকালের সেরা কবি। সেই ঔপনিবেশিক আমলে তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়ে দুনিয়াজুড়ে বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতির মুখ উজ্জ্বল করেন। এশিয়ায় তিনিই প্রথম নোবেল বিজেতা। বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুও ছিলেন কবিগুরুর ভক্ত। তার পরও বিবিসির জরিপে বঙ্গবন্ধুকে শ্রেষ্ঠ বাঙালি নির্বাচিত করা হয়েছিল মাত্র একটি কারণে। তা হলো তিনি ছিলেন আমাদের স্বাধীনতা নামের অতুলনীয় কবিতার জনক। বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্বাধীনতার মতো অর্থনৈতিক স্বাধীনতাও অর্জিত হয়েছে একজন রাজনীতিকের হাত ধরে। তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, তাঁর নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক সরকারের আমলেই আমলাতন্ত্রের থাবায় রাজনীতি কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। গত এক যুগে দেশে অভাবিত অর্থনৈতিক উন্নতি হলেও আমলাতান্ত্রিক দৌরাত্ম্যে তার সুফল সরকার ঝুলিতে পুরতে পারছে কি না প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ কারণেই সোমবার আমলা-তোষণ নীতির বিরুদ্ধে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল জাতীয় সংসদ। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জেলাওয়ারি স্বাস্থ্যসেবা ও সরকারি কার্যক্রম সমন্বয়ে সচিবদের দায়িত্ব দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংসদ সদস্যরা। তাঁদের ক্ষোভ- দেশের ক্ষমতায় রাজনৈতিক সরকার কিন্তু দেশ চালাচ্ছেন আমলারা।  প্রবীণ সংসদবেত্তা তোফায়েল আহমেদের ভাষ্য, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিনি শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী ছিলেন, তাঁরও দায়িত্ব ছিল একটি জেলায়। তখন মন্ত্রীরা জেলার দায়িত্ব পালন করতেন। একটি জেলায় মন্ত্রীরা গেলে নেতা-কর্মীরা আসতেন। তাদের সঙ্গে কথাবার্তা হতো। মন্ত্রীরা গ্রামে, ইউনিয়নে যেতেন। কোথায় যেন সেই দিনগুলো হারিয়ে গেছে। সংসদের সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যদের অভিন্ন বক্তব্যে দেশ থেকে রাজনীতি হারিয়ে যাওয়ার যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে তা অশনিসংকেত। সময় থাকতে এ ভুল সংশোধন হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর