সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

স্থবির জীবন-জীবিকা

যত দ্রুত সম্ভব লকডাউন উঠে যাক

করোনা নামের মসিবত দুনিয়াজুড়ে রোজ কেয়ামতের হাহাকার সৃষ্টি করেছে। ইতিমধ্যে এ মহামারীতে জীবন হারিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। তার চেয়েও শোকাবহ হলো দুনিয়াজুড়ে কয়েক শ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকায় কশাঘাত হেনেছে। বলা হচ্ছে, প্রতি তিনজনের একজন কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। বাংলাদেশে এই মহামসিবত এমন এক সময় এসেছে যখন বহির্দুনিয়ায় উচ্চারিত হচ্ছিল পদ্মা-মেঘনা-যমুনা-বুড়িগঙ্গা নদী তীরের অধিবাসীদের জয়গান। এক সময়কার তলাবিহীন ঝুড়ি নামের বিদ্রƒপের শিকার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অগ্রসর দেশগুলোর কাছেও ঈর্ষণীয় বলে বিবেচিত হচ্ছিল। করোনাকালে অর্থনীতিকে সচল রাখার ক্ষেত্রে যেসব দেশ এ-প্লাস পাওয়ার যোগ্য তার মধ্যে বাংলাদেশের নামও উচ্চারিত হচ্ছে। তা সত্ত্বেও আলোর নিচে যে ক্রমেই অন্ধকার বিস্তার লাভ করছে, তা অস্বীকার করার জো নেই। মহামারী করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে টানা লকডাউনে কাজ হারিয়েছেন দেশের অসংখ্য মানুষ। বেশির ভাগ কর্মজীবীর আয়ও কমেছে। জীবন চালাতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির প্রায় সব মানুষেরই নাভিশ্বাস উঠেছে। সংসার চালাতে না পেরে অনেকেই ঢাকা ছেড়েছেন ইতিমধ্যে। এখনো চলছে ঢাকাসহ বিভিন্ন মহানগর ছাড়ার প্রক্রিয়া। মহামারীর রূপ নেওয়া করোনাভাইরাস থেকে রেহাই পেতে বিশ্ববাসীর মতো বাংলাদেশের মানুষও রীতিমতো যুদ্ধ করছে। ইতিমধ্যে বৈশি^ক অর্থনীতি ধসে পড়েছে। লোকসান গোনার আশঙ্কায় রয়েছে দেশ-বিদেশের বড় বড় অনেক কোম্পানি। বাংলাদেশের অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কর্মী ছাঁটাই আর কর্ম হারানোর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে কর্মজীবীদের মধ্যে। বড় সংকট চলছে চিকিৎসা ক্ষেত্রে। নিম্ন কিংবা মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের চিকিৎসা নিয়ে ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি। তারা সরকারি সেবাও ঠিকমতো পাচ্ছেন না। বলা যায় একাত্তরের ৯ মাস ছাড়া এমন সংকটের মুখে পড়েননি দেশবাসী। এ কঠিন সময় মোকাবিলায় সরকারকে আরও বাস্তবমুখী হতে হবে। করোনার থাবা ঠেকাতে জোরদার করতে হবে টিকাদান কর্মসূচি। জীবন-জীবিকায় গতি সৃষ্টিতে লকডাউন যত দ্রুত সম্ভব উঠিয়ে দিতে হবে। মাস্ক ব্যবহারে কঠোর হতে হবে।  যার কোনো বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর