সোমবার, ৯ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

নামাজের বরকত

আল্লামা মাহমূদুল হাসান

নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত; দুনিয়ার জন্য, আখেরাতের জন্যও। পবিত্র কোরআন ও হাদিসের দ্বারা নামাজের অসংখ্য উপকারিতা ও বরকতের কথা জানা যায়। অসংখ্য ঘটনাবলির দ্বারাও এর বাস্তবতা প্রমাণিত হয়। ১. নামাজের দ্বারা রিজিকের মধ্যে প্রশস্ততার কথা বিশুদ্ধ হাদিসে উল্লেখ হয়েছে। ২. নামাজের দ্বারা জাহেরি-বাতেনি, অন্তরের ও দেহের গুনাহ থেকে মুক্তিলাভের কথা পবিত্র কোরআনে বর্ণনা করা হয়েছে। ৩. কবরে, হাশরের ময়দানে ও পুলসিরাতে নামাজ নামাজিকে শাফায়াত করবে এবং সেখানের চরম অন্ধকারে নূর ও আলোর কাজ দেবে বলে বিশুদ্ধ হাদিসে বর্ণিত আছে। ৪. সময়মতো জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করলে এর বরকতে আল্লাহপাক সব গুনাহ সগিরা এমনিতেই ক্ষমা করে দেন বলে হাদিসে উল্লেখ আছে। ৫. হাশরের ময়দানে যার নামাজ সঠিক সাব্যস্ত হবে আল্লাহ্পাক তাকে নাজাত দেবেন বলে ওয়াদা রয়েছে। অন্য গুনাহগুলোও ক্ষমা করে দেওয়ার সুসংবাদ রয়েছে। তাই অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে ইখলাস ও সুন্নত মোতাবেক নামাজ আদায় করা আবশ্যক। নামাজে গাফিলতি অত্যন্ত ভয়াবহ এবং ধ্বংসের কারণ। যে ব্যক্তির মৃত্যুর পর পুনর্জীবন, হিসাব-নিকাশ, জাহান্নামের ভয় ও জান্নাতের বিশ্রাম ইত্যাদির প্রতি বিশ্বাস আছে, সে কোনো দিন নামাজ তরক করতে পারে না। হ্যাঁ, বিধর্মীদের ব্যাপারে কোনো কথা নেই, কারণ তারা তো ধোঁকার মধ্যে পতিত রয়েছে। বিধর্মীদের ধারণা হচ্ছে যে, এ দুনিয়ার পর আর কোনো দুনিয়া নেই। মৃত্যুর পর পুনর্জীবন; বিচার-আদালত, হাশর-নশর, দোজখ-জাহান্নাম এসব কিছুকে তারা বানোয়াট কথাবার্তা ও ভিত্তিহীন কাহিনি মনে করে। তাদের এ ধোঁকার প্রধান কারণ হচ্ছে এই যে, তারা মনে করে, মৃত্যুর পর মানুষকে শিয়াল-কুকুরে খেয়ে ফেলে, মানুষ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়, কবরে পচে-গলে শেষ হয়ে যায়, সুতরাং আবার কী করে পুনর্জীবন সম্ভব? ক. মানুষ এক দিন ছিল না, আল্লাহপাক নাস্তি (অস্তিত্বহীনতা) থেকে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং অস্তি (অস্তিত্ব) থেকে পুনরায় সংযোজন করা তার জন্য মোটেই কঠিন ব্যাপার নয়। খ. পদার্থবিজ্ঞানীরা বলে যে, কোনো পদার্থ একবার অস্তিত্ব লাভ করলে সেই পদার্থ বিলীন হয় না- পরিবর্তন হয়। যেমন : পানি বরফ হয় আর বরফ পানি হয়; কিন্তু প্রত্যেকের অস্তিত্ব বাকি থাকে; বিনষ্ট হয় না। ঠিক তেমনিভাবে মানুষের পরিবর্তন হয়, কিন্তু মানুষ একেবারে বিলীন হয় না। হাশরের ময়দানে তাদের একত্রিত করে মানুষের আকারে হাজির করা হবে এবং তাদের কৃতকর্মের হিসাব নিয়ে প্রায়শ্চিত্ত প্রদান করা হবে। গ. পবিত্র কোরআনে এর একটি সহজ-সরল যুক্তি দেওয়া হয়েছে, যা সবার জন্য বোঝা সম্ভব। আল্লাহপাক ইরশাদ করেন- ‘মানুষ তার আহার্যের প্রতি লক্ষ্য করে দেখুক।’

আমি সহজে বুঝানোর জন্য গোলআলুর উপমা দিয়ে থাকি। যদি গোলআলু পানিতে পড়ে থাকে তবে একদিন বিনষ্ট হয়ে যাবে। আর তরকারি হিসেবে খেয়ে নিলেই শেষ হয়ে যায়। আর যদি তাকে মাটিতে পুঁতে রাখা হয়, আর পানি দেওয়া হয় তবে গাছ জন্ম নেয়।

 

লেখক : আমির, আল হাইআতুল উলয়া ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর