মঙ্গলবার, ২৪ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

টেলিটক বিড়ম্বনা

অবৈধ ভিওআইপির হোতাদের ধরুন

সরকারি প্রতিষ্ঠান টেলিটক অঢেল সরকারি সুবিধা নিয়ে গ্রাহকসেবা ও মুনাফা দুই ক্ষেত্রেই ব্যর্থতার পরিচয় দিলেও অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা সম্প্রসারণে কৃতিত্ব দেখাচ্ছে। সরকারের শত শত কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকিতে তারা ইন্ধন জোগাচ্ছে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমে। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় টেলিটক নামের যে সাদা হাতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পোষা হয় তাদের যোগসাজশেই যে রাজস্ব ফাঁকির ভিওআইপি ব্যবসা চলছে তা দিবালোকের মতোই স্পষ্ট। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তির নামে সর্বোচ্চ ১৫টি সিম নিবন্ধন করা যায়, কিন্তু একটি চক্র অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায় টেলিটকের ৩ হাজার ৪০০ সিম ব্যবহার করে আসছিল। এর সঙ্গে জড়িত টেলিটকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। তাদের যোগসাজশে ভুয়া নিবন্ধনের মাধ্যমে চক্রটি এসব সিম সংগ্রহ করেছে। প্রথমবার নিবন্ধিত সিমের বায়োমেট্রিক নমুনা বিভিন্ন সময় অ্যাকটিভেশন অ্যাপে সন্নিবেশের মাধ্যমে উত্তোলন করা হয় একাধিক সিম। এসব সিমের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, একজন গ্রাহক এক দিনেই ১৪ বার একই রিটেইলার পয়েন্টে গিয়ে বায়োমেট্র্কি নমুনা দিয়ে রাত ৩টা ১৮ মিনিটে দোকান খুলে আঙুলের ছাপ দিয়ে সিম সংগ্রহ করেছেন। একটি সিমে একই সঙ্গে ৮০টির বেশি মোবাইল নম্বর নেটওয়ার্কে যুক্ত ছিল, যা স্বাভাবিক নয়। এসব সিম দিয়ে যে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা হয়েছে তা ওপেন সিক্রেট। টেলিটক-সংশ্লিষ্টদের এসব কর্মকান্ডের তথ্য উঠে এসেছে খোদ বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে। কমিশনের অভিযানে টেলিটকের ৩ হাজার ৪০০ সিম একসঙ্গে জব্দ করা হয়। বিদেশি মালিকানাধীন বেসরকারি মোবাইল কোম্পানি নয়, অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায় দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকায় পরিচালিত সরকারি সংস্থা টেলিটক-সংশ্লিষ্টদের যোগসূত্র এ সাদা হাতিটিকে টিকিয়ে রাখার যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। আমরা বলতে চাই না টেলিটকের সবাই ভিওআইপি দুষ্কর্মে সরাসরি জড়িত। যারা জড়িত নন তাদের কাছেও সহকর্মীদের চৌর্যবৃত্তি যে অজানা ছিল না তা সহজে অনুমেয়। যার দায় তারাও এড়াতে পারেন না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর