রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
ইতিহাস

বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা

১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বা আজকের বাংলাদেশের মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রশ্নটি সামনে এনে দেয়। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও এ যুদ্ধ নতুন মাত্রা যুক্ত করে। আওয়ামী লীগের প্রাণপুরুষ শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৫ সালের তিক্ত অভিজ্ঞতা সামনে রেখে প্রণয়ন করেন তাঁর ছয় দফা কর্মসূচি। ঠিক এমন সময় ১৯৬৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি লাহোরে পাকিস্তানের সব বিরোধী দলের বৈঠক আহ্বান করা হয়। ওই বৈঠকে যোগ দেন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান। সে বৈঠকে তিনি তাঁর ঐতিহাসিক ছয় দফা প্রস্তাব পেশ করেন। বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসন ও আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠা ছিল ছয় দফা প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্য। ষাটের দশকের অন্যতম ছাত্রনেতা নূরে আলম সিদ্দিকীর মতে,

‘১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখে লাহোরের গোলটেবিল বৈঠকে বঙ্গবন্ধু ছয় দফা কর্মসূচি পেশ করলে শুধু সামরিক জান্তাই নয়, গোটা রাজনৈতিক শক্তি যেন চমকে ওঠে, পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তানের নেতৃত্বের সবাই এর অন্তর্নিহিত সত্যটি অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। গোলটেবিল বৈঠকটি ডাকা হয়েছিল সব বিরোধী দলের পক্ষ থেকে আইয়ুব খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার একটি সম্মিলিত আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্য সামনে নিয়ে। পঁয়ষট্টির যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানকে অরক্ষিত রাখা এবং দেশের দুই অংশের মধ্যে বৈষম্যের নিদারুণ চিত্র বিশ্লেষণপূর্বক তা তুলে ধরে যখন মুজিব ভাই আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে ছয় দফাকে রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে পেশ করেন তখন তা কেউই গ্রহণ করতে চায়নি। বরং এ কর্মসূচির বিরুদ্ধে নানাভাবে যার যার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রচ- আক্রমণ শুরু হয়। পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগের বাইরের বিরোধীদলীয় শক্তি ও তখনকার আওয়ামী লীগের একটি বৃহত্তর অংশও এর প্রচ- বিরোধিতা করে। এমনকি বাংলার জনগণের মুখপত্র দৈনিক ইত্তেফাক প্রথমে ছয় দফার প্রতি সমর্থন দেয়নি।’

(৭ জুনের আহ্বান : নূরে আলম সিদ্দিকী)

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর