চট্টগ্রাম মহানগরের বহদ্দারহাট থেকে বাস টার্মিনাল পর্যন্ত প্রবহমান নালাটি কার্যত মৃত্যুফাঁদ হয়ে উঠেছে কর্তৃপক্ষীয় অমনোযোগিতায়। প্রায় ১ কিলোমিটার দীর্ঘ ২০ ফুট প্রস্থের নালাটির ওপর অধিকাংশ স্থানে নেই কোনো স্লাব। মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে রয়েছে বড় আকারের নালা। সেখানেও কোনো স্লাব নেই। মুরাদপুর থেকে ২ নম্বর গেট পর্যন্ত সড়কের দুই পাশ, আগ্রাবাদ চৌমুহনী থেকে বাদামতল মোড়, এক্সেস রোডের দুই পাশ, পোর্ট কানেকটিং রোড, সিরাজুদ্দৌলা রোড, বাদুড়তলা সড়ক, কে বি আমান আলী রোড, চকবাজারসহ বিভিন্ন সড়কের পাশে থাকা নালা-নর্দমা ও ড্রেনে নেই স্লাব বা নিরাপত্তা বেষ্টনী। সড়কের পাশে থাকা খালের পাড়েও নেই কোনো নিরাপত্তা দেয়াল। পরিণতিতে নালা-নর্দমা, ড্রেন ও খালে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। নালা-নর্দমাগুলো যেন হয়ে উঠেছে মরণফাঁদ। দুর্ঘটনার দায় না নিয়ে সেবা সংস্থাগুলো পরস্পরকে দোষারোপ করছে। সর্বশেষ সোমবার রাতে আগ্রাবাদ বাদামতল মোড়ের সন্নিকটে খোলা নালায় পড়ে প্রাণ হারান এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী। এ ঘটনা সারা দেশে চট্টগ্রামের নগর ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। এর আগেও চট্টগ্রামে নালায় পড়ে নিখোঁজ ও মারা গেছেন অন্তত চারজন। চট্টগ্রামের বিজ্ঞ নগর পিতা অবশ্য সর্বশেষ দুর্ঘটনার পর বিজ্ঞোচিত মন্তব্য করে দায় সেরেছেন। বলেছেন নাবিকের অসতর্কতায় জাহাজ দুর্ঘটনাকবলিত হলে সমুদ্রের দোষ হতে পারে না। সোজা কথায় দুর্ঘটনার পর দায়িত্ব এড়ানো শুধু নয়, অন্যের ওপর দায় চাপানোর প্রতিযোগিতা চলছে। মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয় এমন উন্মুক্ত নালা বা ড্রেন কোথাও থাকা উচিত নয়। তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাই সক্রিয় হবেন আমরা এমনটিই দেখতে চাই।