বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

দুর্নীতির অপমান

চাই ১৮ কোটি মানুষের প্রতিরোধ

দুর্নীতি বাংলাদেশে অপ্রতিরোধ্য আপদ হয়ে বিরাজ করছে শত শত বছর ধরে। যে দেশে একসময় মাৎসন্যায় নৈরাজ্য বিরাজ করত সে দেশকে দুর্নীতির ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে আনা সত্যিকার অর্থেই কঠিন। কঠিন হলেও যে অসম্ভব নয় তা মধ্যযুগের পাল শাসকরা দেখিয়ে দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর গত ৫০ বছরে অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন গর্ব করার মতো। তবে হতাশার বিষয় আমরা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম আর মুক্তিযুদ্ধের অনেক অঙ্গীকার পূরণ করতে পারিনি। দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার প্রত্যয় পূরণ করা যে অলীক স্বপ্ন হয়ে বিরাজ করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের সূচকে বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে ‘সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম তারই প্রমাণ। টানা চতুর্থবারের মতো দুর্নীতিতে বাংলাদেশের স্কোর ২৬-এ অপরিবর্তিত রয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি বাংলাদেশ শাখা টিআইবি মনে করে দুর্নীতির পেছনে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিচারহীনতা, মতপ্রকাশ ও জবাবদিহির অভাব অন্যতম দায়ী। বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) দুর্নীতির ধারণা সূচক মঙ্গলবার ঢাকায় প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশের হয়ে টিআইবি প্রতিবেদনটি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১২ সাল থেকে দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের মধ্যে অষ্টমবারের মতো এবারও বাংলাদেশের অবস্থান দুর্নীতির দ্বিতীয় শীর্ষ এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ৩১ দেশের মধ্যে তৃতীয়, যা বিব্রতকর, উদ্বেগজনক ও হতাশাজনক। এ পরিপ্রেক্ষিতে কোনো ভয় বা অনুকম্পা ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-ঘোষিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কার্যকর প্রয়োগ এবং অপরাধের ‘দায়মুক্তি’র চর্চা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে টিআইবি। দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশের সান্ত্বনা এতটুকু যে একসময় বাংলাদেশ ছিল শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ। সেখান থেকে ১৩ম স্থানে আসা অঙ্কের হিসাবে অগ্রগতিই বটে। তবে বাস্তবে দুর্নীতি উচ্ছেদ চাইলে শুধু সরকার নয়, দেশের ১৮ কোটি মানুষকে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হতে হবে। গড়ে তুলতে হবে প্রতিরোধ। যার বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর