রবিবার, ৮ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

রেলের অব্যবস্থা

যাত্রীসেবাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে

প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের অকালমৃত্যুর খবরে আমরা সবাই যখন দিশাহারা, তখন নিরাপদ ভ্রমণের শেষ আশ্রয় রেলওয়েও মুখ থুবড়ে পড়ছে। কদিন পরপরই রেল দুর্ঘটনার খবর, লাইনচ্যুত হচ্ছে প্রায়ই, লাইন ও নাটবল্টু খারাপ, সিøপার ধসে গেছে, সিগন্যাল ঠিক নেই ইত্যাদি। গত ১২ বছরে রেলের উন্নয়নে সরকার ৭৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করার পরও লোকসান কমাতে পারেনি। গত অর্থবছরে রেলের পরিচালন লোকসান হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। বিপুল বিনিয়োগের পরও রেলওয়ে লাভজনক না হওয়ার কারণ প্রকল্প বাস্তবায়ন ও কেনাকাটায় দুর্নীতি, অপরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহণ ও ব্যবস্থাপনার ঘাটতি। বাংলাদেশ রেলওয়ের বহরে সম্প্রতি যুক্ত হওয়া ১০টি মিটার গেজ লোকোমোটিভ কেনায় দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বলা হচ্ছে, ইঞ্জিনগুলো ক্রয়চুক্তি অনুযায়ী সরবরাহ করা হয়নি। চুক্তিতে ৩ হাজার হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন দেওয়ার কথা থাকলেও ২ হাজার হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন দেওয়া হয়েছে। এমন আরও দুটি ব্যত্যয় ঘটেছে। তার পরও রেলওয়ে ইঞ্জিনগুলো গ্রহণ করেছে। রেলওয়েকে ইঞ্জিনগুলো সরবরাহ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানি। দাম ছিল ৩২২ কোটি ৬৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এরই মধ্যে ৯০ শতাংশ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। যদিও তখনকার প্রকল্প পরিচালক এ ইঞ্জিন গ্রহণ এবং দাম পরিশোধের বিষয়ে আপত্তি দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে জানানোর জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি দিয়েছে। রেলপথমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ও গোপনে ‘স্বাধীন পর্যবেক্ষক’ নিয়োগ করে অনিয়মগুলো আড়াল করে ইঞ্জিনগুলো গ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়। তবে ওই ইঞ্জিন কেনা প্রকল্পের পরিচালক ১০টি ইঞ্জিন বুঝে নিতে রাজি হননি। ফলে তাঁকে বদলি করা হয়। রেলওয়ের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে কোনো সমীক্ষা ছাড়াই। রেলওয়ের উচিত ছিল দুর্নীতি কমানো এবং যাত্রী ও পণ্য সেবা বাড়িয়ে আয় বাড়ানোর দিকে মনোযোগী হওয়া।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর