বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

তেল গ্যাস অনুসন্ধান

নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে

জ্বালানির ক্ষেত্রে আমদানিনির্ভর দেশগুলো রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে কঠিন সমস্যায় পড়েছে। জ্বালানি তেল, গ্যাস ও কয়লার দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় তা কেনা অনেক দেশের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশও এখন এ অপ্রত্যাশিত সংকটের শিকার। বাংলাদেশের স্থলভাগে ও সমুদ্রসীমায় গ্যাস, তেল ও কয়লার ভালো মজুদ রয়েছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু জ্বালানি অনুসন্ধান কার্যক্রমে যথাযথ গতি না থাকায় গত এক যুগে স্থলভাগে কিংবা সমুদ্র প্রান্তে তেল, গ্যাস কিংবা কয়লার নতুন ক্ষেত্র যেমন আবিষ্কৃত হয়নি তেমন তা উত্তোলনের কাজও এগোইনি। বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের সবশেষ তথ্যে, প্রায় ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের বিপরীতে বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০২২ সালে যেখানে গ্যাসের ঘাটতি প্রায় ১ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট, ২০৩০ সালে তা ২ হাজার ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুটে পৌঁছতে পারে। গত ২০ বছরে প্রায় ১৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ব্যবহারের বিপরীতে বাংলাদেশ মাত্র ২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে। কনোকো ফিলিপসকে দায়িত্ব দেওয়ার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশে গভীর সাগরে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। কিন্তু অনেক কিছু বহুজাতিক কোম্পানিটির মনমতো না হওয়ায় তারা কিছু শর্ত বদলাতে চেয়েছিল। তা না পারায় তারা চলে যায়। ভারতীয় একটি কোম্পানি এ মুহূর্তে অনুসন্ধান কাজ করছে। কয়লার ক্ষেত্রে বড়পুকুরিয়া ছাড়া অন্যগুলোর ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়নি। বর্তমান বৈশ্বিক সংকট আমাদের আরেকবার স্মরণ করিয়ে দিল জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জ্বালানি অনুসন্ধান ও উত্তোলনে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার সন্নিকটে মিয়ানমার গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে ও তা উত্তোলন করছে। ভারতও তার সমুদ্রসীমায় তেলের বিপুল মজুদ আবিষ্কার করেছে। বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায়ও তেল, গ্যাস পাওয়া যেতে পারে এমন অনুমান বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত সুবিধা দাবির সামনে মাথা নত না করায় বাংলাদেশকে জ্বালানি অনুসন্ধানে পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে। এ সংকট কাটাতে নিজস্ব প্রযুক্তিগত সক্ষমতা গড়ে তোলার পাশাপাশি বন্ধু দেশগুলোর সহযোগিতা নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর