শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সিএনজিতে ভর্তুকি

প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে জ্বালানি খাত

সিএনজিতে সরকারের ভর্তুকি কার স্বার্থে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ভর্তুকিতে যাতে সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশ কিংবা সাধারণ মানুষ লাভবান হয় এমনটিই বিবেচনায় আনা উচিত। কিন্তু যেখানে কৃষির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ডিজেলের দাম বাড়ানো হয়েছে, সেখানে সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস বা সিএনজিতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা কোন উদ্দেশ্যে ঘটছে সে বিতর্ক মোটেও প্রত্যাশিত নয়। অন্যান্য জ্বালানির তুলনায় দাম কম থাকার সুযোগ নিয়ে সিএনজি ব্যবসার নামে হরিলুট চলছে। আর এতে সরকার শুধু ভর্তুকিই গুনছে না, বিষয়টি ব্যাপকভাবে জ্বালানি খাতকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। দূরপাল্লার বাস, ট্রাক, লরিসহ বিভিন্ন পরিবহনে সিএনজি ব্যবহারের কারণে এ ছাড় দেওয়া হয়েছে কি না তা তদন্ত করে দেখার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, অনেক প্রভাবশালী ট্রাক ও লরি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। অনেক এমপির আছে সিএনজি স্টেশন। তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে গুরুত্ব বেড়েছে সিএনজির। আভাস দেওয়া হচ্ছিল জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পরপরই সিএনজির দামও বাড়বে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিএনজির দাম বাড়ানো হয়নি। এতে জ্বালানি খাতে তৈরি হয়েছে বৈষম্য, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বিভিন্ন খাতে। গণপরিবহনে সিএনজি ব্যবহার করা হলেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছে তেলের মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিষেশজ্ঞরা মনে করেন, সিএনজির দাম বাড়ানো উচিত, আর তা না হলে এ খাত নিয়ে প্রশ্ন বাড়তেই থাকবে। অন্য সব জ্বালানির দাম বাড়লেও সিএনজির দাম না বাড়ায় এ সিএনজির ব্যবহার বেড়েছে। স্বভাবতই সরকারকে আগের চেয়ে বেশি ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। সরকারের কোষাগারের ওপর তা চাপ সৃষ্টি করছে। এ বিড়ম্বনার অবসানে সিএনজির বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অভিযোগ রয়েছে, সিএনজি স্টেশনগুলো থেকে ভিন্ন খাতেও সরবরাহ করা হচ্ছে এ জ্বালানি। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির সময় ডিজেল ও কেরোসিনের দাম না বাড়ালে অথবা বৃদ্ধির পরিমাণ সীমিত করলে তাতে আমজনতার লাভ হতো। কৃষি উৎপাদন খরচ যেভাবে বাড়ছে তা ঠেকানো সম্ভব হতো। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ছাড় না দিয়ে সিএনজিতে ভর্তুকি কতটা যৌক্তিক তা ভেবে দেখা উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর