শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ

আত্মসন্তুষ্টির অবকাশ নেই

স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মহান বিজয়ের পর ৫১ বছর কেটে গেছে। একটা জাতির জন্য ৫১ বছর খুব বড় কিছু নয়। শত শত বছর ধরে ভিনদেশিদের দ্বারা শাসিত ও শোষিত হয়েছে বাংলাদেশ। একসময় পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, বুড়িগঙ্গা পাড়ের জনপদ ছিল বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ দেশ। কর্ণাটক থেকে আসা সেনা এবং তুর্কি, পাঠান, মুঘল শাসকরা এ দেশকে তাদের স্বদেশ বলে গ্রহণ করলেও বাঙালিরা শাসকের অবস্থান থেকে দূরে ছিল শত শত বছর ধরে। ব্রিটিশ শাসন অবসানের পর বাংলাদেশ পাকিস্তান নামের কিম্ভূতকিমাকার রাষ্ট্রের অংশে পরিণত হয়। জনসংখ্যায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও পাকিস্তান আমলের ২৩ বছর ছিল পশ্চিম পাকিস্তানিদের দ্বারা বাঙালিদের শাসিত ও নির্যাতিত হওয়ার ইতিহাস। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির বিজয় সে কালো অধ্যায়ের অবসান ঘটায়। মুক্তিযুদ্ধে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলেও গত ৫১ বছরে বাংলাদেশের অর্জন বিস্ময়কর। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে কটাক্ষ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এখন মার্কিন মদদপুষ্ট বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ তার সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করেছে নিজস্ব অর্থায়নে। স্বাধীনতার মাত্র ৫১ বছরে এই পরিবর্তন বাংলাদেশের। পাকিস্তানের চেয়ে এখন প্রায় সব ক্ষেত্রেই এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। অনেক ক্ষেত্রে ভারত-চীনের থেকেও এগিয়ে। স্বাস্থ্য-শিক্ষার দিক দিয়ে ছাড়িয়ে গেছে ভারত-পাকিস্তানকে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে জিডিপি ও মাথাপিছু জিডিপিতে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। গ্রস সেভিংস জিডিপিতে ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ শীর্ষে। শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ভারত-পাকিস্তানের তুলনায় অনেক উচ্চতায় বাংলাদেশ। জন্মহার নিয়ন্ত্রণে প্রতিবেশীদের গড় আয়ুর ক্ষেত্রেও ভারত-পাকিস্তান দুই দেশের তুলনায় এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বকেই তাক লাগিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।  ৫১ বছরের অর্জনকে অবহেলা করা না গেলেও আত্মপ্রসাদের কোনো সুযোগ নেই। উন্নত বিশ্বের কাতারে যেতে হলে বাংলাদেশকে আরও জোর কদমে এগোতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর