বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

অভিবাসন

মানব পাচারকারীদের রুখতে হবে

উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় ধনী দেশে অভিবাসী হওয়ার জন্য গত আট বছরে ৫১ হাজার মানুষের করুণ মৃত্যু ঘটেছে। অভিবাসী হওয়ার অবৈধ যাত্রায় দীর্ঘ হয়েছে লাশের সারি। যাদের মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যাও বিপুল। মানুষ ভিনদেশে পাড়ি দেওয়ার কথা ভাবে স্বদেশে জীবন বিপন্ন হতে পারে এমন শঙ্কা থেকে। যুদ্ধবিগ্রহ ও সংঘাতে লিপ্ত দেশগুলো থেকে হাজার হাজার মানুষের দেশান্তরি হওয়ার ঘটনা ঘটছে। স্বদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত হলে অনেকে ধনী বা উন্নত দেশগুলোর দিকে হাত বাড়ায়। আনুমানিক হিসাবে বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত। এর সিংহভাগ বিদেশে গেছেন কর্মসংস্থানের তাগিদে। অভিবাসী হওয়ার জন্য ব্যাপক মানুষের প্রাণহানি উদ্বেগজনকই শুধু নয়, মানবতার দৃষ্টিকোণ থেকেও এক বিব্রতকর ঘটনা। এ বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের বক্তব্যও প্রাসঙ্গিক। তিনি বলেছেন, অভিবাসীদের অধিকারও যে মানবাধিকার, তা ভুলে গেলে চলবে না। কারণ যারা ভিটেমাটি ত্যাগ করে দেশ ছাড়ে, তাদের অসহায়ত্বের কথা গুরুত্ব দিতে হবে। সবাই বিলাসী জীবনের জন্য মাতৃভূমির মায়া ত্যাগ করে না। নিরাপদ আশ্রয়, উন্নত ভবিষ্যৎ এবং মর্যাদাশীল জীবনযাপনের অভিপ্রায়েই অধিকাংশ মানুষ প্রিয়-পরিচিত জনের সান্নিধ্য ত্যাগে বাধ্য হচ্ছে। মানুষের এ অসহায়ত্বের সুযোগ নিচ্ছে মানব পাচারকারীরা। মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়ার পরও গভীর জঙ্গলে কিংবা ভয়ংকর সাগরে তাদের ঠেলে দেয় দালাল চক্র। এর ফলে গত আট বছরে কমপক্ষে ৫১ হাজার অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। এর বাইরে রয়েছে আরও অনেক মানুষ, যারা নিখোঁজ হিসেবে বিবেচিত আত্মীয়স্বজনের কাছে। আর এসব ভিকটিমের সবাই কারও না কারও স্বজন। তাদের অধিকার উপেক্ষার অবকাশ নেই। কেন তারা দেশত্যাগে বাধ্য হচ্ছে তা গভীরভাবে খতিয়ে দেখা জরুরি। আরও ভালো জীবনযাপনের প্রত্যাশা মানুষের সহজাত প্রবণতা। এটি মানুষের একটি মৌলিক অধিকারও। তবে এজন্য যাতে কাউকে প্রাণ না দিতে হয় সেজন্য মানব পাচারের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর