বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বোরো আবাদ

প্রণোদনা কর্মসূচি সুফল দেবে

একসময় আমন ছিল প্রধান ধান। আমাদের জাতীয় সংগীতের ‘ও মা, অঘ্রাণে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি’ পঙ্ক্তি তারই প্রমাণ। কালের বিবর্তনে দেশের খাদ্য উৎপাদনের প্রধান ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে বোরোর আবাদ। এ বছর রেকর্ড পরিমাণ বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে সরকার। ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে খাদ্যাভাব দেখা দিতে পারে এ আশঙ্কায় পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশ রপ্তানির ব্যাপারে রক্ষণশীল মনোভাব গ্রহণ করেছে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ যাতে খাদ্যের ক্ষেত্রে সংকটে না পড়ে তা নিশ্চিত করতে এ বছর বোরো আবাদ ও উৎপাদন বাড়াতে প্রায় ১৭০ কোটি টাকার প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। সারা দেশের ২৭ লাখ কৃষক পাবেন বিনামূল্যে বীজ ও সার।

এ বছর হাইব্রিড ধানের উৎপাদন বাড়াতে ৮২ কোটি টাকার প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। ১৫ লাখ কৃষকের প্রত্যেককে দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে ২ কেজি ধানবীজ। উচ্চফলনশীল জাতের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য প্রায় ৭৩ কোটি টাকার প্রণোদনার আওতায় উপকারভোগী হবেন ১২ লাখ কৃষক। এতে একজন কৃষক ১ বিঘা জমিতে চাষের জন্য প্রয়োজনীয় ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে পাচ্ছেন। এ ছাড়া কৃষিযন্ত্র ব্যবহারের সুবিধার্থে একটি মাঠে একই সময়ে ধান লাগানো ও কাটার জন্য ১৫ কোটি টাকার প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এর আওতায় ৬১ জেলায় ১১০টি ব্লক বা প্রদর্শনী স্থাপিত হবে। প্রতিটি প্রদর্শনী হবে ৫০ একর জমিতে। খরচ হবে ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা খাত থেকে এ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে গড়ে প্রায় ৫০ শতাংশ প্রণোদনা বিতরণ করা হয়েছে। বোরো আবাদে ১৭০ কোটি টাকার প্রণোদনা একটি ভালো উদ্যোগ। আমাদের মতে, খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে কৃষি ক্ষেত্রে সরকারের প্রণোদনা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়ানো উচিত। শুধু ধান নয়, গম ও ভুট্টা আবাদেও প্রণোদনার কর্মসূচি নেওয়া যেতে পারে। খাদ্য আমদানি বাবদ যে হাজার হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হচ্ছে তা থেকে রক্ষা পাওয়ার এটি সর্বোত্তম উপায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর