১৭১৫ খ্রিস্টাব্দ। চতুর্দশ লুইয়ের মৃত্যুর পর রাজপুত্র নাবালক হওয়ায় ফ্রান্সের রাজদন্ড কার্যত তখন রিজেন্টের হাতে। রিজেন্ট মানে রাজ-অমাত্যগণের মধ্য থেকে মনোনীত রাজপ্রতিনিধি। রাজখরচা কিছুটা সাশ্রয় করার উদ্দেশ্যে রিজেন্টের আদেশে রাজ আস্তাবল থেকে বিক্রি করা হলো অর্ধেক ঘোড়া। তেইশ বছরের তরুণ ফ্রাঁসোয়া মারি আরুয়ে, কেননা তখনো তিনি তাঁর ভলতেয়ার ছদ্মনামটি গ্রহণ করেননি, টিপ্পনী কেটে পদ্য লিখলেন, ঘোড়াগুলো বিক্রি না করে এর বদলে রাজসভা থেকে অর্ধেক গাধাকে বিদায় করলেই বেশি বুদ্ধির পরিচয় দেওয়া হতো না কি? স্বভাবতই লেখাটি পড়ে অগ্নিমূর্তি ধারণ করল রিজেন্ট। এক দিন এক পার্কে এই তরুণ লেখকের সাক্ষাৎ পেলেন জনৈক রিজেন্ট সদস্য এবং তাঁকে উদ্দেশ করে বললেন, মসিঁয়ে আরুয়ে, আপনার তো দেখছি বেশ দারুণ হাত হয়েছে লেখার। চমৎকার সব লেখা উপহার দিচ্ছেন আমাদের দিনকে দিন। তা পুরস্কার হিসেবে আপনাকে কী দেওয়া যায় ভাবছি। আপনাকে নতুন একটি জায়গা দেখতে পাঠালে কেমন হয়? আরুয়ে বললেন, ধন্যবাদ মসিঁয়ে, কিন্তু জায়গাটা কোথায়? রিজেন্ট অগ্নিভ চেহারায় বললেন, বাস্তিল দুর্গে! পরদিন ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দের ১৬ এপ্রিল, আরুয়েকে সত্যি সত্যি পাঠানো হলো বাস্তিল কারাগারে। আর বাস্তিল কারাগারে থাকার সময়ই ফ্রাঁসোয়া মারি আরুয়ে ভলতেয়ার ছদ্মনাম গ্রহণ করে লিখতে শুরু করলেন একটির পর একটি জ্বালাময়ী লেখা। ৭৯ ফুট উচ্চতাসম্পন্ন বাস্তিল দুর্গ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৩৮৩ খ্রিস্টাব্দে, ফরাসি রাজা পঞ্চম চার্লসের আমলে প্যারিসকে ইংরেজদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য। কিন্তু পঞ্চম চার্লসের পর ফ্রান্সের সব রাজাই এটাকে রাজ্যের কেন্দ্রীয় কারাগার হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। ফরাসি বিপ্লবের প্রাক্কালে বহু বিপ্লবীকে পুরে রাখা হয়েছিল এই দুর্গে। তাদের মধ্যে ছিলেন ভলতেয়ার, ম্যাক্সমিলিয়েন রবস্পিয়ের দাঁতো প্রমুখ। জাঁ জ্যাক রুশো অবশ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছেন এক দেশ থেকে অন্য কোনো দেশে কিংবা শহরে। কার্যত যারাই সে সময় রাজা ষোড়শ লুইয়ের বিরোধিতা করতেন তাদের সবাইকেই বাস্তিল দুর্গে বন্দি করা হতো। ১৪ জুলাই ১৭৮৯ সালে বিপ্লব ও গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই বাস্তিল দুর্গের পতন হয়।
১৯৯০ সালে বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সামরিক স্বৈরশাসককে হটিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল গণতন্ত্র। আমরা বাংলাদেশের জনগণ ভেবেছিলাম দিনে দিনে এই গণতন্ত্র হয়তো আরও সুদৃঢ় ও শক্তিশালী হবে। কিন্তু সে প্রত্যাশা যেন ক্রমশ অন্ধকার অমানিশার অতল গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছে। যে সরকারটি দিনবদলের কথা বলে ক্ষমতায় এলো, তারা দেশে এ কী করছে! ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় পূর্বনির্ধারিত মহাসমাবেশের আগে ৮ ডিসেম্বর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী বিএনপির পল্টন অফিসে তল্লাশির নামে যা করেছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এর মধ্যেই একটি ঘটনা সারা দেশে সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় তুলেছে। গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালি ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আলী আজমকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে তার মায়ের জানাজায় নেওয়ার ঘটনায় জনসাধারণের মধ্যে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশকে কেন্দ্র করে সারা দেশেই বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ‘গায়েবি’ মামলার অভিযোগ উঠেছে দলটির পক্ষ থেকে। এর অংশ হিসেবেই নাকি ২৯ নভেম্বর কালিয়াকৈর থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা হয়। মামলায় চন্দ্রায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ আনা হয়। এতে উপজেলা বিএনপি সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে ১ ডিসেম্বর রাতে আলী আজমকে কালিয়াকৈরের পাবরিয়াচালা গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আলী আজম ছাড়াও পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল কুদ্দুস, ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেন আকুলসহ ১৬ জনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। কালিয়াকৈর থানার ওসি আকবর আলী খান দাবি করেন, ওই মামলায় কয়েকজনকে গ্রেফতারের পর তারা আলী আজমের নাম বলেছে। এজাহারে নাম নেই অথচ এমন একজনকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখা কতটুকু যুক্তিযুক্ত? প্রশ্ন হচ্ছে, কার বুদ্ধিতে পুলিশ এসব করেছে?। তাদের যদি এতটুকু ইতিহাসবোধ কিংবা ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান থাকত বিরোধী রাজনীতিবিদদের এভাবে কারাগারে অবরুদ্ধ রাখতে পারতেন না। বেশ কয়েক বছর আগে মির্জা আব্বাসের বক্তৃতার একটি কথা বেশ ভালো লেগেছিল। উনি বলেছিলেন, কাউকে জেলে ভরে যদি ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা যেত তবে আইয়ুব খান এখন পর্যন্ত ক্ষমতায় আসীন থাকতেন। কথাটি মির্জা আব্বাস যথার্থই বলেছেন। বিরোধীদলীয় নেতাদের জেলে ভরে রাখলেই কি ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা যায়? ইতিহাস কী বলে? পাঠকবৃন্দ, আসুন একটু ইতিহাসচর্চা করি। ১৯৫০ সালে ইরানের জনগণ প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্রকামী নেতা মোহাম্মদ মোসাদ্দেককে ক্ষমতায় বসান। তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েই যে কাজটি প্রথমে করলেন সেটি হচ্ছে, ইরানের সমস্ত প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন তেল-গ্যাস ইত্যাদি জাতীয়করণের মাধ্যমে সেগুলোকে ইরানের জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিলেন। আর এতেই প্রচন্ড রুষ্ট হলো পশ্চিমা দেশগুলো। ফলে ভিতরে ভিতরে তারা ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে লাগল। বিশেষ করে ব্রিটেন ও মার্কিন ষড়যন্ত্রের ফসল হিসেবে ১৯৫৩ সালে ইরানের গণতন্ত্রকামী নেতা মোহাম্মদ মোসাদ্দেককে একটি সশস্ত্র সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো। ব্রিটিশ-মার্কিন শক্তি ক্ষমতায় বসাল তাদের মদদপুষ্ট ও তাঁবেদার শাহ রেজা পাহলভিকে। যিনি ছোটবেলা থেকেই অসম্ভব বিলাসী ও উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের জন্য নিন্দিত ছিলেন। তাঁকে ঘিরে ইরানে বেশ কিছু কিংবদন্তিও প্রচলিত আছে। শাহ রেজা পাহলভির স্ত্রী নাকি প্রত্যহ দুধ দিয়ে স্নান করতেন। অন্যদিকে শাহ রেজার দুপুরের পানাহার প্যারিস থেকে সুপারসনিক বিমানযোগে তেহরানে নিয়ে আসা হতো।
এবার মূল প্রসঙ্গে আসি। ইরানের নিরীহ জনগণের ওপর শুরু হলো জুলুম, নিপীড়ন ও নির্যাতন। বিশেষ করে রেজা পাহলভি বিরোধী দলের ওপর চড়াও হলেন নগ্ন খড়গহস্তে। তিনি নির্লজ্জভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তৈরি করলেন একটি বিশেষ পুলিশ বাহিনী। সেই বাহিনীকে বলা হতো ‘সেভার’। নির্যাতন-নিপীড়নের এক অন্ধকার যুগের সূচনা হলো। রেজা ভেবেছিলেন এই বাহিনী নিয়ে তার মসনদ চিরস্থায়ী করতে পারবেন তিনি। কিন্তু ইরানের আপামর জনতা জেগে উঠল সেই অত্যাচার-নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে। অবশেষে এক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ইরানের জনগণ রেজা পাহলভিকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেন এবং নির্বাসনে থাকা আয়াতুল্লাহ খোমেনিকে ক্ষমতায় আসীন করেন। প্রতিষ্ঠিত হলো জনগণের সরকার। অন্যদিকে ক্যান্সার আক্রান্ত রেজা পাহলভি আমেরিকায় রাজনৈতিক আশ্রয়ে সেই সময়ের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেন।আরেকটি দৃষ্টান্ত দিচ্ছি। দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৯৬৮ সালে তৎকালীন শ্বেতাঙ্গ সরকার সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দল ও সংস্থা নিষিদ্ধ করে এবং কিংবদন্তি নেতা নেলসন ম্যান্ডেলাকে কেপটাউন থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে রোবেন আইল্যান্ড নামক একটি দ্বীপের কারাগারে বন্দি করে রাখে সুদীর্ঘ ২৭ বছর। কিন্তু তাঁর ওপর আরোপিত জেল-জুলুম তাঁকে অবদমিত করতে পারেনি। আজ তিনি বিশ্ব রাজনৈতিক মঞ্চে এক মুকুটহীন সম্রাট। সরকার যদি নিদেনপক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কারাবাসের উদাহরণটুকুও আমলে নিত তাহলেও প্রতিপক্ষ দলের নেতাদের ওপর এমন অনুদার আচরণ করতে পারত না। জেল-জুলুম দিয়ে কখনো মসনদ চিরস্থায়ী করা যায় না। জেল-জুলুম যত বাড়ে আন্দোলন-সংগ্রাম ততটাই বেগবান হয়। ইতিহাস আমাদের এই শিক্ষাই দেয়। ফরাসি বিপ্লব থেকে শুরু করে রুশ বিপ্লব কিংবা আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ- সব ক্ষেত্রেই আমরা ইতিহাসের একই চিত্র দেখি। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, সেই সব ইতিহাস থেকে আমরা কিছুই শিক্ষা নিই না।
বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন তখন কেবল সাত কিংবা আট বছরের বালক। তাঁর শ্রেণির ৭০ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে তিনিই ছিলেন ইহুদি। আইনস্টাইনের নিজের কথা থেকে জানা যায়, যদিও শিক্ষকরা ইহুদি বলে কখনো তাঁর সঙ্গে ভিন্ন আচরণ করেননি, কিন্তু ছাত্ররা তাঁকে খুবই উত্ত্যক্ত করত এবং বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে কখনো কখনো আইনস্টাইনকে হিংসাত্মক আক্রমণের শিকারও হতে হতো। এই উত্ত্যক্ততা ও আক্রমণে তাঁর ভীত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আইনস্টাইন নিজেই লিখে গেছেন তাঁর অবদমিত আবেগের মুক্তি ঘটত বাড়িতে কঠোরভাবে ইহুদি ধর্মাচরণ পালনের মধ্য দিয়ে। ‘ছোট আলবার্ট শিগগিরই গভীর ধর্মপরায়ণ হয়ে উঠেছিলেন, আধ্যাত্মিক ও ধর্মাচরণগত দুভাবেই। বহু বছর তিনি শূকরের মাংস খেতেন না, পরিবারে কেবল তিনি একাই এটা খেতেন না এবং তাঁর পিতা-মাতা ইহুদি ধর্মাচরণে এই শৈথিল্য দেখাতেন বলে তিনি বেশ ক্ষুব্ধ হতেন।’ অত্যাচার-নিপীড়নের প্রভাব যে শুধু মানুষের ব্যক্তিজীবনে চোখে পড়ে তা কিন্তু নয়। আমরা বিভিন্ন সাহিত্যেও এর সোচ্চার ও প্রতিবাদী রূপায়ণ দেখি। অনেক উদাহরণের মধ্যে এখানে একটি উদাহরণ তুলে ধরছি। বিংশ শতাব্দীর এক কালজয়ী আমেরিকান লেখক আর্নেস্ট হেমিংওয়ের একটি বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য সান অলসো রাইজেস’। বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘তবুও সূর্য ওঠে’। এটিতে হেমিংওয়ে একটি বিশেষ চরিত্র রূপায়ণ করেছেন। চরিত্রটির নাম রবার্ট ক্বোন। এখানেও ধর্মে তিনি একজন ইহুদি। পেশায় বক্সার। অর্থাৎ মুষ্টিযোদ্ধা এবং বাস করেন আমেরিকার প্রিন্সটনে। বাকিটুকু লেখকের লেখা থেকেই তুলে ধরছি, ‘বক্সিং বা মুষ্টিযুদ্ধ সম্বন্ধে রবার্ট ক্বোনের যে খুব আগ্রহ ছিল তা নয়, বরং বলা যায় এর প্রতি তার একটা অনীহাই ছিল; তবুও খুব কষ্ট করে নিষ্ঠার সঙ্গে তিনি বক্সিং শিখেছিলেন এই কারণে যে, ইহুদি হিসেবে প্রিন্সটনে যে ব্যবহার তিনি পেতেন, তাঁর ফলে একটা চাপা আক্রোশ তাঁর মনে না জেগে পারেনি; একমাত্র সেই বোধের মোকাবিলা করার জন্যই তিনি একান্ত মনে বক্সিংয়ে তালিম নিয়েছিলেন। ভিতরে ভিতরে তিনি এই ভেবে বেশ পুলকিতবোধ করতেন যে, এখন যে-ই তাঁর প্রতি উদ্ধত ব্যবহার করুক, তাকে তিনি এক ঘুসিতেই ধরাশায়ী করে দিতে পারবেন।’
পাদটীকা : ফরাসি বিপ্লবের পর রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনে রাজা ষোড়শ লুই ও তাঁর সভাসদগণ নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন কারাগারে। বন্দিশালায় এক দিন নাকি তিনি ভলতেয়ার ও জ্যাঁক রুশোর বইগুলোর দিকে চেয়ে আক্ষেপ করে বলেছিলেন, এই দুটো লোকের লেখার জন্যই আমাদের আজ এই পরিণতি। তাঁর সহযোগী অমাত্যদের মধ্য থেকে রাজাকে উদ্দেশ করে একজন বলে উঠলেন, ভলতেয়ার ও রুশোকে আজীবন কারাগারে বন্দি করে রাখলে আজ হয়তো আমাদের এ অবস্থা হতো না। প্রত্যুত্তরে রাজা ষোড়শ লুই বলেছিলেন, একজন মানুষকে না হয় বন্দি করে রাখা যায়; কিন্তু তাঁর চিন্তা, তাঁর দর্শন ও মতবাদকে কীভাবে বন্দি করব? রাজা লুই ঠিক কথাটিই বলেছিলেন। কারণ ফ্রাঁসোয়া মারি আরুয়ে কারাগারে বসেই ভলতেয়ার ছদ্মনাম ধারণ করে তাঁর কালজয়ী চিন্তা, দর্শন ও মতবাদকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। একজন বিরোধী নেতাকে বন্দি করলে অন্য একজন তাঁর জায়গায় এসে দাঁড়াবেন। একজন লেখকের লেখা বন্ধ করলে অন্য আরেক লেখক তাঁর স্থান করে নেবেন। হুমায়ূন আহমেদের একটি উক্তি দিয়ে লেখাটি শেষ করছি, ‘প্রকৃতি কখনো কোনো শূন্যস্থান পছন্দ করে না। আর সে জন্য প্রকৃতি নিজেই উপযাজক হয়ে সে শূন্যস্থান পূরণ করে দেয়।’
লেখক : গল্পকার ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী।
ই-মেইল : [email protected]