সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাড়ছে বায়ুদূষণ

নাগরিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে

বায়ুদূষণে শুধু ঢাকা নয়, বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি শহর নগর একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার প্রতিযোগিতায় উঠেপড়ে লেগেছে। বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কয়েক বছর ধরেই বায়ুদূষণে বিশ্বের শীর্ষ ১০০ শহরের মধ্যে প্রথম তিনে থাকছে ঢাকার নাম। বর্ষাকালে দূষণ কম থাকলেও অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায়ই শীর্ষ দূষিত শহরের খেতাব যোগ হচ্ছে ঢাকার পাশে। গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে উচ্চমাত্রার বায়ুদূষণে বছরে ৭৮ থেকে ৮৮ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। বায়ুদূষণের সংস্পর্শে আসায় শ্বাসকষ্ট, কাশি, শ্বাসনালির সংক্রমণ ও বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়ছে। ভয়াবহ বায়ুদূষণ এখন আর শুধু রাজধানীতেই সীমাবদ্ধ নেই, অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠছে পুরো দেশের বাতাস। দূষণমাত্রায় ঢাকাকে টেক্কা দিতে শুরু করেছে দেশের সাতটি বড় শহর। চট্টগ্রাম, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, রংপুর ও সিলেট প্রায়ই দূষণে ঢাকাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। নরসিংদী, কুমিল্লা, সাভারের বাতাসও উচ্চমাত্রায় দূষিত থাকছে অধিকাংশ সময়। বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে খুলনা ও বরিশালের বাতাস তুলনামূলক কম দূষিত হলেও তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদন্ড অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর নয়। বায়ুদূষণবিষয়ক গবেষকদের মতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সব দেশে দূষণ বাড়ছে। তার মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি। সন্ধ্যার পর কখনো কখনো ঢাকার বাতাসে দূষণ উপাদান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া সীমার চেয়ে ৩৬ গুণ পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে। বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি ভোলার বাতাসেও দূষণমাত্রা ভয়াবহ। অনিয়ন্ত্রিতভাবে অবকাঠামো নির্মাণ ও নগরায়ণের কারণে বাড়ছে দূষণ। সব বড় শহরে প্রচুর নির্মাণকাজ হচ্ছে, কিন্তু ধুলা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না। বায়ুদূষণ মানুষের আয়ু কেড়ে নিচ্ছে।  নানা রোগ শরীরে বাসা বাঁধছে। বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশের পরিবেশ নোংরা হয়ে উঠছে। সবুজের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের গর্ব ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। এ ব্যাপারে নাগরিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে সর্বাগ্রে। সরকারকেও কঠোর হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর