রবিবার, ২ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

পানীয় জলের অভাব

নদনদী সুরক্ষায় নজর দিতে হবে

বাংলাদেশের মতো স্বল্প আয়তনের কোনো দেশে এত বেশি নদনদী নেই। দেশের নদনদীগুলো মিঠাপানির প্রধান উৎস। মিঠাপানি বাংলাদেশের প্রধান প্রাকৃতিক সম্পদ। কিন্তু নদনদী, খাল-হ্রদ, হাওড় প্রভৃতি জলাশয় দূষণ ও দখলের শিকার হয়ে ক্রমান্বয়ে বিপন্ন হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশের উপকূলভাগে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুপেয় পানির অভাব প্রকট হয়ে উঠছে। বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির অভাবে হাহাকার অবস্থা বিরাজ করেছে। আঁচ লেগেছে রাজধানীতেও। দূষিত পানি পান করে রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর প্রতি বছর ১০ ফুট করে নিচে নেমে যাচ্ছে। শিল্প-কারখানার অপরিশোধিত বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলায় বেড়েই চলেছে নদীদূষণের মাত্রা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে উজানে প্রবাহিত হচ্ছে লবণাক্ত পানি। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে নেই দৃশ্যমান উদ্যোগ। সমুদ্র স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির বিরূপ প্রভাব বাংলাদেশে ক্রমে প্রকট হয়ে উঠেছে। সবকিছু মিলিয়ে বিশুদ্ধ পানি প্রাপ্তিই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজধানীতে স্যুয়ারেজের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে চারপাশের জলাধারে। নিজেদের চারপাশের ভালো পানিতে পয়োবর্জ্য ফেলে দূষিত করে পদ্মা-মেঘনা থেকে পানি আনা হচ্ছে। এতে বাড়ছে পানি উৎপাদন খরচ। এ বাড়তি খরচ চাপানো হচ্ছে ভোক্তার কাঁধে পানির দাম বাড়িয়ে। অথচ ঢাকার পাশের শীতলক্ষ্যার পানি ছিল এক সময় বিশ্বের অন্যতম বিশুদ্ধ পানির আধার। শীতলক্ষ্যাকে দূষিত করা হয়েছে ক্রমাগত বর্জ্য ফেলে। সে পানি এতটাই দূষিত যে, নর্দমার পানিও তার কাছে হার মানে। রাজধানীতে প্রতিদিনের পানির চাহিদা ২৪৫ থেকে ২৫০ কোটি লিটার। পানির জোগানদার ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহের সক্ষমতা ২৭৫ কোটি লিটার। এ পানির জোগান দেওয়া হয় দুভাবে।  পাঁচটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে চাহিদার ৩৪ শতাংশ পানি পরিশোধন এবং বাদবাকি ৬৬ শতাংশ ভূগর্ভ থেকে উঠিয়ে। অতিমাত্রায় ভূগর্ভ থেকে পানি উঠানোর কারণে পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। নেমে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। যা এড়াতে নদীর পানির ওপর নির্ভরতা বাড়াতে হবে- এটিই শ্রেষ্ঠ বিকল্প।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর