শুক্রবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

বঙ্গবাজারে অগ্নিকান্ড

নগরবাসীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

বঙ্গবাজারে ভয়াবহ আগুন আতঙ্ক ছড়িয়েছে জনমনে। এ আগুন পাঁচ হাজারের বেশি ব্যবসায়ীর সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছে। তাদের অনেকের অবস্থা পথে নামার মতো। তবে এ আগুন নগরবাসীর নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। আগুন নেভানোর সক্ষমতা সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তাও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। চার বছর আগে রাজধানীর চুড়িহাট্টার অগ্নিকান্ডে পানির সংকটে নিয়ন্ত্রণে আসছিল না আগুন। ৭১ জন মানুষ পুড়ে হয়েছিল কয়লা। মঙ্গলবার বঙ্গবাজারের অগ্নিকান্ডে আবারও স্পষ্ট হয়েছে তীব্র পানি সংকটের মর্মান্তিক চিত্র। আশপাশে নেই এমন কোনো পুকুর বা খাল, যেখান থেকে পানি নিয়ে আগুন নেভাতে পারে ফায়ার সার্ভিস। অবশেষে হেলিকপ্টারে দড়ি বেঁধে হাতিরঝিল থেকে পানি নিয়ে ছিটানো হয়েছে অগ্নিকুন্ডে। সারা দেশে একের পর এক ঘটছে অগ্নিদুর্ঘটনা। রাজধানীতে অধিকাংশ সময় পানি স্বল্পতার কারণে আগুন নেভাতে সমস্যায় পড়ে ফায়ার ফাইটাররা। সরু রাস্তায় পানি বহনকারী গাড়ি প্রবেশেও বিপত্তির মুখে পড়তে হয়। ভরাটের দৌরাত্ম্যে উধাও হয়ে গেছে রাজধানীর খাল, পুকুর, জলাশয়। নগরীর রাস্তা, কারখানা, হোটেল, অধিকাংশ শপিং মলে নেই ফায়ার হাইড্রেন্টের ব্যবস্থা। ১৯৮৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত গত ৩৮ বছরে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে ঢাকার ১ হাজার ৯০০ সরকারি-বেসরকারি পুকুর ও জলাধার। ফলে কোথাও আগুন লাগলেই ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে পানি জোগাড় করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নগর পরিকল্পনাবিদ ও বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিকল্পিত নগরীতে আগুন নেভানোর জন্য বিভিন্ন রাস্তার ধারে ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ বসানো থাকে, সরাসরি পানির পাম্পের সঙ্গে থাকে যার সংযোগ। এতে পানির অতিরিক্ত প্রেশার দেওয়া থাকে। কোথাও আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছামাত্রই হাইড্রেন্টের বাল্ব খুলে পানি ছিটানোর জন্য পাইপ লাগালে সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গতিতে পানি বেরিয়ে আসে, যা দিয়ে সহজে ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।  রাজধানীর দুই কোটি মানুষকে আগুন আতঙ্ক থেকে রক্ষায় যে কোনো স্থানে আগুন নেভানোর মতো পানির জোগান নিশ্চিত করতে হবে। চার নদনদী বেষ্টিত এ মহানগরীতে এমন উদ্যোগ নেওয়া খুব কঠিন হওয়ার কথা নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর