বুধবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

গভীর সমুদ্রবন্দর

আমদানি-রপ্তানির ব্যয় সাশ্রয় করবে

মহেশখালীর গভীর সমুদ্রবন্দর পাল্টে দেবে বাংলাদেশের অর্থনীতি। সিঙ্গাপুর ছিল এক সময় জেলেদের পল্লী। সে ক্ষুদ্র দ্বীপদেশ বন্দর সুবিধাকে ব্যবহার করে এশিয়ার অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। একইভাবে মহেশখালী কবছর আগেও ছিল লবণ উৎপাদনের এলাকা। পেশাদার দুর্বৃত্তদের ঘাঁটি হয়ে উঠেছিল এ দ্বীপের বিভিন্ন জঙ্গলাকীর্ণ পাহাড়। গভীর সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে মহেশখালী দেশের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া এলাকা থেকে সমৃদ্ধ এলাকায় পরিণত হতে যাচ্ছে। গভীর সমুদ্রবন্দর শুধু মহেশখালীকে নয়, পাল্টে দেবে দেশের অর্থনীতিও। এ বন্দর চালু হলে ট্রানজিট ভোগান্তি ছাড়াই দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করা যাবে। সাশ্রয় হবে হাজার হাজার কোটি টাকা। বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী মহেশখালীর মাতারবাড়ীর হাজারো একর ভূমিতে ২০২০ সালে শুরু হয় গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরির কাজ। ইতোমধ্যে ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ অ্যাপ্রোচ চ্যানেল তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। চ্যানেলের গভীরতা বৃদ্ধির জন্য চলছে ড্রেজিং। শেষ হয়েছে ঢেউ নিরোধক বাঁধ। ইতোমধ্যে বন্দরের বিভিন্ন নির্মাণকাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। যা মন্ত্রণালয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আগামী জুলাই-আগস্টের মধ্যে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু করার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। বাংলাদেশ থেকে ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পণ্য পরিবহনের জন্য তৃতীয় কোনো দেশের সমুদ্রবন্দরকে ব্যবহার করতে হয় ব্যবসায়ীদের। বর্তমানে দেশের আমদানি-রপ্তানিকারকরা সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কার কলম্বো কিংবা মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দর ব্যবহার করছেন ট্রানজিট বন্দর হিসেবে। তৃতীয় দেশ হয়ে আমদানি-রপ্তানির কারণে একদিকে পরিবহন ব্যয় যেমন বাড়ছে, তেমনি আমদানি-রপ্তানির সময় বেড়ে যায় ১০ থেকে ১৪ দিন। মহেশখালী গভীর সমুদ্রবন্দরকে দেশের অর্থনীতির গেম চেঞ্জার বলে অভিহিত করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা। আমদানি-রপ্তানির বাণিজ্যিক ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়ার পাশাপাশি গভীর সমুদ্রবন্দর বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগও উৎসাহিত করবে বলে আশা করা যায়।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর