বুধবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

খাদ্যে ভেজাল ও মজুদ

কড়া শাস্তির আইন প্রশংসনীয়

খাদ্যে ভেজাল ও অবৈধ মজুদের বিরুদ্ধে দেরিতে হলেও সরকার কড়া পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যশস্য থেকে খাদ্যদ্রব্যকে ভিন্ন বা কাল্পনিক নামে বিপণন করলে বা খাদ্যদ্রব্যের কোনো উপাদানকে সম্পূর্ণ বা আংশিক পরিবর্তন করে উৎপাদন বা বিপণন করলে তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মানবস্বাস্থ্যের ক্ষতির কৃত্রিম উপাদান মিশ্রণ করে বিপণন করলে, খাদ্য অধিদফতরের ইস্যুকৃত লাইসেন্স ব্যতীত বা মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করাও অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এসব অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি দুই বছরের কারাদন্ড বা অনূর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। খসড়া আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি সরকার নির্ধারিত পরিমাণের বেশি খাদ্যদ্রব্য মজুদ করলে বা মজুদসংক্রান্ত সরকারের কোনো নির্দেশনা অমান্য করলে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে, তিনি আর্থিক লাভের উদ্দেশ্য ব্যতীত খাদ্যদ্রব্য মজুদ করেছেন তাহলে অনূর্ধ্ব তিন মাস কারাদন্ড বা অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন। পুরনো খাদ্যদ্রব্য পলিশিং বা অন্য কোনো খাদ্যদ্রব্য মিশ্রণ করে খাদ্যের গুণগত পরিবর্তন করলে বা অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি গুদামে খাদ্য সরবরাহ করলে তাকে দুই বছরের কারাদন্ড বা ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা যাবে। আইনে খাদ্য অধিদফতরের সিল ব্যতীত সরকারি গুদামের খাদ্যদ্রব্য বস্তা বা ব্যাগ বিতরণ, স্থানান্তর, ক্রয় বা বিক্রি করলে দুই বছরের কারাদন্ড বা ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করার ধারা সংযুক্ত করা হয়েছে। আইনে খাদ্য সম্পর্কিত মিথ্যা তথ্য, বিবৃতি, মুদ্রণ, প্রকাশ প্রচার ও বিতরণের অপরাধে পাঁচ বছরের কারাদন্ড বা ১৫ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে। দেশে খাদ্যে ভেজাল এবং মজুদদারি যখন ব্যবসায়ীদের একটি অংশের মজ্জাগত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, তখন আইনটি সংশ্লিষ্টদের নিয়ন্ত্রণে অবদান রাখতে পারলে তা একটি বড় অর্জন বলে বিবেচিত হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর