শুক্রবার, ১২ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

উত্তপ্ত পাকিস্তান

পুতুল নাচের কুশীলবরাও টার্গেটে

পাকিস্তানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ক্রিকেট কিংবদন্তি ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে রাজপথে নেমেছেন তার সমর্থকরা। সে দেশের নওয়াজ শরিফ পরিবারের কর্তৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল মুসলিম লীগ এবং ভুট্টো পরিবারের প্রোপার্টি পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকারের ভিত কেঁপে উঠেছে ভয়ংকরভাবে। ভূমিকম্প শুরু হয়েছে পুতুল সরকারের কোমরের সুতা যাদের হাতে বাঁধা পাকিস্তানের ক্ষমতার আসল নিয়ন্তা সেনানিবাসে থাকা সেনাপতিদের মধ্যেও। কারণ পাকিস্তানের ৭৬ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবার সাধারণ মানুষ পুতুল নাচের পুতুল নয়, কুশীলবদেরও তাদের টার্গেট বানিয়েছে। লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডিতে তারা সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। পুলিশের গাড়িসহ বিপুলসংখ্যক গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে জনতা। পাকিস্তানের চার প্রদেশের তিনটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। পাকিস্তানের ইতিহাস খাকি ও চক্রবক্র ভূতদের হাতে ক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার ইতিহাস। জন্মই আজন্ম পাপ পঙ্ক্তির প্রকৃষ্ট উদাহরণ পাকিস্তান। দ্বিজাতিতত্ত্ব ফেরি করে ঔপনিবেশিক শাসকদের মদদে পাকিস্তান নামের কিম্ভূতকার রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছিলেন জিন্নাহ। জিন্নাহ মৃত্যুর আগে পাকিস্তান সৃষ্টির জন্য অনুতাপ করেছেন। রোগাক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হলেও প্রায় বিনা চিকিৎসায় তিনি প্রাণ হারান। প্রাণ হারাতে হয়েছে প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের হোতা লিয়াকত আলী খান, জুলফিকার আলী ভুট্টো, বেনজির ভুট্টো, জেনারেল জিয়াউল হকসহ আরও অনেককে। পাকিস্তানের পৌনে এক শতাব্দীর ইতিহাসে সেনানিবাসের আওতামুক্ত কোনো সরকার গঠিত হয়নি। খাকি ও চক্রবক্র ভূতদের আশীর্বাদ ছাড়া কেউ ক্ষমতায় আসেননি। প্লেবয় ক্রিকেটার ইমরান খান এবং তার দলও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে ইমরান ক্ষমতায় গিয়ে পুতুল হওয়ার বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছিলেন। নিজের পায়ের নিচে মাটি পাওয়ার জন্য জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। সেই অপরাধেই চক্রবক্র ভূতদের রোষানলে পড়ে ক্ষমতা হারান তিনি। সেনাতন্ত্রের খপ্পর থেকে পাকিস্তান গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে গেলে তা হবে সে দেশের জনগণের জন্য এক বড় অর্জন। দক্ষিণ এশিয়াও রক্ষা পাবে জঙ্গিবাদের থাবা থেকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর