গত ৪ আগস্ট একটি টেলিভিশন চ্যানেলে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া নামক এক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের কথা শুনে নিজের চোখ এবং কানকেই বিশ্বাস করতে পারিনি।
আমাদের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা রয়েছে। কিন্তু অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর যেসব বিধিনিষেধ রয়েছে, সেগুলো বাংলাদেশের সংবিধানেও রয়েছে। এসব নিষিদ্ধ বিষয়ের অন্যতমটি হলো- মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে এমন কিছু বলা যাবে না, যা আদালত অবমাননাকর। এই ডিএজির বক্তব্য নিশ্চিতভাবে আদালত অবমাননা। তিনি বলেছেন, বিদেশ থেকে যেসব ব্যক্তি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা বন্ধ করার দাবি জানিয়ে এই মর্মে চিঠি লিখেছেন,

অন্য লোকে যাই করুক বা বলুক না কেন, রাষ্ট্রীয় পদে অবস্থান করা কোনো ব্যক্তি এমন কিছু সমর্থন করতে পারেন না, যা মূলত দেশের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, দেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে খর্ব করে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সেই ১৬০ জন বিদেশি ব্যক্তি উক্ত চিঠিটি লিখে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকেও অস্বীকার করার অপচেষ্টা করেছেন, বিধায় যেসব ব্যক্তি তাদের এই অশুভ, অযাচিত অপ্রয়াসকে সমর্থন করে, তারাও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিরোধীদের তালিকাভুক্ত বৈকি। দেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনকারীদের পক্ষ নেওয়া বস্তুত দেশদ্রোহিতা সম। তাছাড়া কেন এই ব্যক্তি বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো ড. ইউনূস নামক এক বিচারাধীন আসামির পক্ষ নিলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের উচিত সেটিও তদন্ত করা।
ড. ইউনূসের আইনজীবী এফিডেভিট মাধ্যমে মহামান্য হাই কোর্টে উল্লেখ করেছেন, তাকে ১৬ কোটি টাকা ফি, বাদীদের এবং তাদের আইনজীবীদের জন্য ড. ইউনূস ১০ কোটি টাকা বিতরণ করেছেন। সে টাকার অংশ এই ডিএজি পেয়েছেন কি না, তাও দুদক কর্তৃক তদন্ত করে নির্ধারণ করা প্রয়োজন। বক্তব্য দানকালে উক্ত ডিএজি ভদ্রতার ন্যূনতম সীমা লঙ্ঘন করে মুখে কিছু একটা চিবাচ্ছিলেন, যা থেকে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে তার মতো ভদ্রতাজ্ঞানশূন্য কোনো লোক ডিএজি হওয়ার যোগ্য কি না।
♦ লেখক : আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি