শিরোনাম
প্রকাশ: ০০:০০, বুধবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৩ আপডেট:

’৭২-এর সংবিধান নস্যাৎকারীরাই নৈরাজ্যের স্রষ্টা

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক
Not defined
প্রিন্ট ভার্সন
’৭২-এর সংবিধান নস্যাৎকারীরাই নৈরাজ্যের স্রষ্টা

বাংলাদেশ সরকার ৪ নভেম্বরকে সংবিধান দিবস হিসেবে উল্লেখ করেছেন, কারণ ১৯৭২-এর সেই দিনটিতেই গণপরিষদে সংবিধান প্রণীত হয়েছিল। উক্ত বছর নভেম্বর মাসের পূর্বেই ঘোষণা করা হলো, সে মাসেরই ৪ তারিখ ওই সময়ের প্রধানমন্ত্রী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গণপরিষদে বাংলাদেশের খসড়া সংবিধান উপস্থাপন করবেন। খবরটি বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়ক, পণ্ডিত ব্যক্তি এবং বিজ্ঞজনেরা বেশ অবাক বিস্ময়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, এটা কি সম্ভব? ৯ মাসেরও কম সময়ে একটি সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশের সংবিধান রচনা কী হতে পারে? বিস্ময়েরই কথা, কেননা যেখানে ড. আম্বেরকারের মতো বিশ্বনন্দিত সংবিধান বিশেষজ্ঞর নেতৃত্বে ভারতের সংবিধান প্রণয়ন করতে লেগেছিল আড়াই বছর, পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান করতে লেগেছিল ৯ বছর, সেখানে ৯ মাসে কী করে একটি দেশের সংবিধান হতে পারে? অনেকে এটাও সন্দেহ করেছিলেন যে, বাংলাদেশের সংবিধান হয়তো পাকিস্তানের সংবিধানেরই অনুরূপ একটি গোঁজামিলের শাসনতন্ত্র হবে। ৪ নভেম্বর বাংলাদেশের জনক এ ধরনের সংবিধান প্রদান করবেন সেটি জানার জন্য ঢাকা শহর লোকায়িত হয়েছিলেন বহু ঝানু বিদেশি সাংবাদিক, যাদের অনেকেই ছিলেন আইন বিশেষজ্ঞও। অবশেষে বঙ্গবন্ধু তাঁর খসড়া উপস্থাপন এবং ভাষণ দেওয়ার পর সবার মুখে একই কথা, বাংলাদেশের জাতির জনক তো এক তুলনাহীন, অভাবনীয় মহাপুরুষ, প্রজ্ঞায় তিনি স্বর্গের বরপ্রাপ্ত। দেশে-বিদেশে সবাই মিলিত সুরে বললেন, “এই যে এক অচিন্তনীয় সৃষ্টি, এই সংবিধান তো এক অর্থে তুলনার ঊর্ধ্বে।” এটি বলারই কথা, কেননা অনেক অর্থেই সংবিধানটির নমুনা বিরল। সংবিধানে প্রচ্ছন্ন ভাষায় উল্লেখ করা হলো, জনগণই সব ক্ষমতার মালিক। জনগণের সার্বভৌমত্বের কথা এমন স্পষ্ট ভাষায় আর কোনো সংবিধানে নেই। যুক্তরাষ্ট্রের কালজয়ী প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন বলেছিলেন গণতন্ত্র হচ্ছে জনগণের দ্বারা জনগণের সরকার, কিন্তু সে দেশের সংবিধানে জনগণকে ক্ষমতার মালিক করার এমন স্পষ্ট কোনো কথা নেই।

বাংলাদেশের সংবিধানের অনেক বৈশিষ্ট্যের অন্যতমটি হচ্ছে- এর তৃতীয় অংশে ২০টি বিধান যাতে মানুষের মৌলিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করা হয়েছে। এসব অধিকার যাতে প্রতিটি মানুষ প্রয়োজনে আদালতের আশ্রয় নিয়ে বাস্তবায়িত করতে পারেন তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে হাই কোর্টে ১০২ অনুচ্ছেদে মুদ্রিত জুডিশিয়াল রিভিউ পদ্ধতির মাধ্যমে। এসব অধিকারের সব নাগরিকদের মধ্যে সীমিত থাকলেও একটি অধিকার, যথা আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার, নাগরিকত্ব নির্বিশেষে বাংলাদেশে অবস্থানরত সব মানুষের বেলায় প্রযোজ্য করা হয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশসমূহে এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার সনদে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেসব প্রয়োজনীয় সীমাবদ্ধতাসহ সব নাগরিকের মত প্রকাশের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা রয়েছে ’৭২-এর সংবিধানে। সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ে উল্লিখিত মৌলিক অধিকারসমূহে ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘ গৃহীত সর্বজনীন মানবাধিকারের সবকটি বিধানই রয়েছে। এসব বিধান সংবিধানের মৌলিক স্তম্ভ বলে সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে এগুলো মুছে ফেলার সুযোগ নেই।

’৭২-এর সংবিধানের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো- স্পষ্ট মুদ্রণ দ্বারা ধর্মনিরপেক্ষতার নিশ্চয়তা। পৃথিবীর অনেক দেশেই ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে থাকে বাস্তবতায়। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদে যে ভাষায় ধর্মনিরপেক্ষতার নিশ্চয়তার কথা বলা হয়েছে, তা সত্যিই গভীর তাৎপর্যপূর্ণ। বলা হয়েছে, সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িকতা, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মীয় অপব্যবহার বিলোপ করা হবে। আরও উল্লেখ করা হয়েছে, রাষ্ট্র কোনো ধর্মকে মর্যাদা দান করবে না, কোনো বিশেষ ধর্ম পালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাহার ওপর উৎপীড়ন করা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষতার মতবাদ মধ্যযুগের ইউরোপীয় তত্ত্ব থেকে আলাদা। তিনি ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে ধর্মহীনতার আশ্রয় নেননি, বরং সব ধর্মে বিশ্বাসী মানুষকে অবাধে নিজ নিজ ধর্ম চর্চার অধিকারের কথা বলেছেন। বলেছেন, রাষ্ট্র কোনো ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদাদান করবে না, ধর্মের ভিত্তিতে কোনো বৈষম্য চলবে না। ভারতেরও আদি সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা ছিল না। ১৯৭৬ সালে তাদের সংবিধানের ৪২তম সংশোধনের মাধ্যমে এই তত্ত্ব সংযোজন করা হয়।

আমাদের সংবিধানের আর একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কতগুলো মৌলিক রাষ্ট্রীয় নীতিমালার কথা। এগুলো জুডিশিয়াল রিভিউর আওতাভুক্ত না হলেও আদালত বিভিন্ন বিষয় ব্যাখ্যা করতে এসব নীতিমালা অনুসরণ করে থাকেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, স্বাস্থ্যসেবা, অবৈতনিক বাধ্যতামূলক শিক্ষা প্রদানের কথা, জাতীয় জীবনে নারীদের অধিকারের কথা, জাতীয় সংস্কৃতির কথা। নাগরিকদের প্রতি সরকারি কর্মচারীদের দায়িত্বের কথা উল্লেখ করে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপনিবেশ যুগীয় মনিবসুলভ ভাবধারা উচ্ছেদ করে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, সরকারি কর্মকর্তারা জনগণের মনিব নন, বরং তাদের সেবা প্রদানকারী।

বিখ্যাত ফরাসি পণ্ডিত মনটেস্কোর ভাষ্য অনুযায়ী একটি রাষ্ট্রের তিন ধরনের ক্ষমতা একক কর্তৃপক্ষের হাতে ন্যস্ত থাকলে সেখানে নৈরাজ্য বিরাজ করতে বাধ্য আর সেই ধারণা অনুসরণ করেই সৃষ্টি হয়েছে ক্ষমতার বিভাজন তত্ত্ব। বাংলাদেশের সংবিধানে ক্ষমতার বিভাজনের আদর্শ অনুসরণ করা হয়েছে, রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ অর্থাৎ প্রশাসন অঙ্গ, আইন প্রণয়ন অঙ্গ এবং বিচার অঙ্গের অধিক্ষেত্র চিহ্নিত এবং নির্ধারিত করা হয়েছে, যার ফলে অতীব প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র ছাড়া একটি অঙ্গ অন্য অঙ্গের অধিক্ষেত্রে কর্তৃত্ব চালাতে পারে না। বাংলাদেশের সংবিধানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারকদের স্থায়িত্বের নিশ্চয়তা করা হয়েছে যাতে প্রশাসন, এমনকি রাষ্ট্রপতিও বিচারপতিদের অপসারণ করতে না পারেন। নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাও রয়েছে হাই কোর্টের ওপর। সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ দ্বারা আপিল বিভাগকে পূর্ণাঙ্গ ন্যায়বিচারের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে, যার ফলে কোনো ব্যক্তি ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য আইনের কোনো বিধানের আওতায় নিজেকে না আনতে পারলেও আপিল বিভাগ তার বিশেষ ক্ষমতাবলে সেই ব্যক্তিকে ন্যায়বিচার প্রদান করতে পারেন। ১০৫ অনুচ্ছেদে রয়েছে রায় প্রদান করা হয়ে গেছে, রিভিউর মাধ্যমে এমন মামলার পুনর্বিচার।

এহেন ঈর্ষণীয় সংবিধান হায়েনাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়া-মোশতাক চক্র বন্দুকের জোরে, সংবিধানবহির্ভূতভাবে ক্ষমতা দখল করে, ১৯৭২ সালের সেই পবিত্র এবং অনন্য সাধারণ সংবিধানকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতাসহ বিশেষ বৈশিষ্ট্যসমূহ মুছে ফেলে। জিয়া গংদের সামরিক স্বৈরশাসন এবং পরবর্তী জিয়া অনুসারীরা জিয়া কর্তৃক সংবিধানে যেসব ঘৃণ্য পরিবর্তন ঘটিয়েছিল, পঞ্চম এবং সপ্তম সংশোধনী মামলা রায় দ্বারা সেগুলো বাতিল করা হয়। সাংবিধানিক অর্থে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ উল্লিখিত দুই মামলার রায়ে জিয়া এবং এরশাদের সামরিক ফরমান দ্বারা সংবিধানে যেসব অনাকাক্সিক্ষত পরিবর্তন ঘটিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাময় বৈশিষ্ট্যসমূহ মুছে ফেলে একে ধর্মান্ধ রূপ দেওয়া হয়েছিল সেগুলো থেকে সংবিধানকে মুক্ত করা হয়েছে। নিশ্চিত করা হয়েছে যে, এই পন্থায় ক্ষমতা দখল রাষ্ট্রদ্রোহিতার নামান্তর এবং ভবিষ্যতে কোনো উচ্চাভিলাষী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ এ ধরনের অপপ্রয়াস চালালে তাকে চরম দণ্ড পেতে হবে। একাত্তরে পরাজিতদের বংশধররা আজ দেশে যে নৈরাজ্য চালাচ্ছে তার সূত্রপাত ’৭২-এর পবিত্র সংবিধান নস্যাৎ করার মাধ্যমে।

সংবিধানে প্রতিফলিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর সমগ্র জীবনের প্রত্যাশার চিত্র। শৈশবকাল থেকেই তিনি বেড়ে উঠেছেন গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষতা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং বৈষম্যবিরোধী মানুষ হিসেবে। বয়োপ্রাপ্তির পর তাঁর মনে গভীরভাবে আসন গেড়েছিল আইনের শাসনের তত্ত্ব। উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আইনবিশারদ ব্যারিস্টার হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাহচর্যে তিনি আইন বিষয়ে অনেকাংশেই দক্ষতা লাভ করে সাংবিধানিক এবং আইনের শাসনের প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগী হয়ে পড়েছিলেন। পাকিস্তানি দিনগুলোতেও, বিশেষ করে আইয়ুবি যুগের স্বৈরশাসনকালে, তিনি গণতান্ত্রিক অধিকার এবং আইনের শাসন আদায়ের জন্য গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, যে কারণে তাকে বহু বছর কারাবরণ করতে হয়েছিল।

সংবিধান যেন বিশ্বনন্দিত হয় তা নিশ্চিত করার জন্য তিনি গণপরিষদের ৩৪ জন আইন বিশেষজ্ঞ সদস্য সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেছিলেন। এই ৩৪ জনের হাতে খসড়া প্রণয়নের দায়িত্ব দিয়েই ক্ষান্ত হননি, তিনি প্রতিনিয়ত তাদের নির্দেশনা প্রদান করতেন সংবিধানে যেন কাক্সিক্ষত আইনের শাসন, গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং রাষ্ট্রীয় মূল নীতিসমূহ প্রতিফলিত হয়। তিনি বিশ্বের বহু দেশের সংবিধান এবং জাতিসংঘ প্রণীত মানবিক অধিকার সংবলিত নির্দেশনাসমূহ আনয়ন করে উক্ত ৩৪ জন সদস্যকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সেসব সংবিধান এর কোন কোন বিষয়সমূহ আমাদের সংবিধানে স্থান পাবে। আরও নির্দেশ দিয়েছিলেন জাতিসংঘ প্রণীত মানবাধিকার বিষয়ক সিদ্ধান্তগুলোও যেন আমাদের সংবিধানে স্থান পায়। সংবিধানের খসড়া গণপরিষদে উপস্থাপনের আগের দিন বঙ্গবন্ধু উক্ত ৩৪ জনের সঙ্গে ভাওয়ালের এক রেস্ট হাউসে সমস্ত দিন বৈঠক করেছিলেন চূড়ান্তভাবে খসড়ার বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনে পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা সংশোধনের জন্য, যে কথা আমি বিশিষ্ট রাজনীতিক তোফায়েল আহমেদ সাহেব থেকে শুনেছি। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব হিসেবে তিনিও সে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

তথাকথিত দ্বিজাতি তত্ত্বের স্লোগান গোটা উপমহাদেশে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে যে কৃত্রিম দূরত্ব এবং বৈরিতা সৃষ্টি করেছিল, বঙ্গবন্ধু তা কোনো দিনও মেনে নিতে পারেননি। ১৯৪৬ সালে সেই দ্বিজাতি তত্ত্বের ফেরিওয়ালাদের উসকানিতে গোটা উপমহাদেশ উভয় ধর্মের লাখ লাখ মানুষের রক্তে রঞ্জিত হওয়ার ঘটনা সচক্ষে প্রত্যক্ষ করার পর বঙ্গবন্ধু মারাত্মকভাবে ব্যথিত হয়ে পড়েছিলেন। সোহরাওয়ার্দী এবং মহাত্মা গান্ধীর দিকনির্দেশনায় সেদিনের তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিব ছুটে গিয়েছিলেন সমস্ত উপদ্রুত এলাকায়, এমনকি বঙ্গভূমির বাইরেও। সেই দিনগুলোর রক্তপাতের করুণ দৃশ্য একদিকে যেমন তাঁকে বিচলিত করেছিল, অন্যদিকে তেমনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করেছিল সাম্প্রদায়িকতার বিষাক্ত ছোবল চিরতরে নিঃশেষ করে দিতে। তিনি নিশ্চিত হয়েছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ সমাজই কুসংস্কার আচ্ছন্ন সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প থেকে সমাজকে রক্ষা করতে পারে। সংবিধানের খসড়া উপস্থাপনকালে ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর তিনি গণপরিষদে যে ভাষণ দিয়ে সংবিধানের বৈশিষ্ট্যসমূহের কথা উল্লেখ করেছিলেন, সে ভাষণও পৃথিবীর বহু মনীষীর শ্রেষ্ঠতম ভাষণসমূহের অন্যতম। তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেছিলেন, ধর্মের ভিত্তিতে কোনো রাজনীতির স্থান বাংলাদেশে হবে না। বলেছিলেন, সব ধর্মের মানুষ নির্বিঘ্নে, বিনা বাধায় নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারবেন, তাতে কেউ বাধা দিতে পারবে না। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার, উৎসব সবার বলে যে তত্ত্ব আজ প্রচলিত রয়েছে, বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ থেকেই এই কথার জন্ম হয়েছে। অবিভক্ত ভারতেও অসাম্প্রদায়িকতায় তার সমকক্ষ ছিলেন হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র, যথা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মহাত্মা গান্ধী, মাওলানা শওকত আলি, মোহাম্মদ আলি, খান আবদুল গাফফার খান।

১৯৭৫-এ তাঁকে হত্যা করে সাম্প্রদায়িকতার লালিত সন্তান জিয়াউর রহমান দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটানোর জন্য যে অপপ্রয়াস চালিয়েছিলেন, তারই বিষফল আজও আমরা দেখতে পাচ্ছি বিশেষ করে পূজাকালীন এবং নির্বাচনকালীন ধর্ম ব্যবসায়ীদের উন্মাদনার মাধ্যমে। পূজার সময়ে গত কয়েক বছর যেভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষের ওপর এবং তাদের মন্দিরে আক্রমণ চালানো হয়েছে, বঙ্গবন্ধু সে ধরনের পরিস্থিতি কখনো ভাবতেও পারেননি। পঞ্চম এবং সপ্তম সংশোধনী রায়ের পরে দেশ বহুলাংশে ’৭২-এর আদি সংবিধানে ফিরে গেলেও এখনো কিছু করণীয় বাকি রয়েছে। বিশেষ করে যতদিন এরশাদ প্রণীত রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম কথাটি বিরাজ করবে, ততদিন বলা যাবে না যে আমরা পুরোপুরি ’৭২-এর সংবিধানে ফিরে গেছি। সাম্প্রদায়িকতা চিরতরে নির্মূল করতেও অনেক পথ হাঁটতে হবে। এ ব্যাপারে ঘোষিত সংখ্যালঘু কমিশন গঠনও অপরিহার্য।

বঙ্গবন্ধু একদিকে যেমন ঘোড়া রেসের জুয়া খেলা বন্ধ করেছিলেন, অন্যদিকে তাঁর সময়ে ধর্মীয় উসকানিমূলক তথাকথিত ওয়াজও হতো না। গ্রামে গ্রামে নিষ্কলুষ যাত্রা, নাটক ছিল গণমানুষের নিত্যনৈমিত্তিক বিনোদনের ক্ষেত্র। তিনি ক্রীড়া এবং সংগীতেরও পূজারি ছিলেন এবং ছিলেন বিশিষ্ট রবীন্দ্র ভক্ত। “যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে”, কবিগুরুর এই গানটিকে তিনি এমন সময় তাঁর পথের পাথেয় হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন যখন ভয়ে বা সংকোচে জর্জরিত হয়ে আওয়ামী লীগের বহু নেতা বাংলার মানুষের স্বাধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলনে নামতে অনিচ্ছুক ছিলেন। তিনি কবিগুরুর কথা সেই লাইনটিও স্মরণ করতেন যেখানে লেখা হয়েছে, “সংকোচের বিহ্বলতা নিজেরে অপমান, সংকটের কল্পনাতে হইও না ম্রিয়মাণ”, আর তাই আওয়ামী লীগের সব নেতাকে পিছে ফেলে তিনিই হতে পেরেছিলেন স্বাধীনতা আন্দোলনের কর্ণধার, জনগণ তাঁকে বরণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু হিসেবে, হতে পেরেছিলেন বিশ্ব বন্ধুও। তিনি সারা বিশ্বের নেতা এবং মানুষের যে শ্রদ্ধা অর্জন করতে পেরেছিলেন, সেটি নিশ্চিতভাবে বিরল।

সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করা এই সৈনিকের আকাক্সক্ষা ছিল এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে জনগণের ইচ্ছায় দেশ চলবে। তবে তাঁর গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনা আব্রাহাম লিংকনের, প্লেটো বা মেকিয়াভেলির থেকে আলাদা ছিল। গণতন্ত্র বলতে তিনি শোষিত মানুষের গণতন্ত্রকেই বোঝাতেন। তাই তিনি সংবিধানে নির্বাচনি নিয়মকানুন গণমুখী করার জন্য যে নির্বাচন কমিশনের সৃষ্টি করেছেন, তাতে খুঁত পাওয়া ভার। নির্বাচন কমিশনকে তিনি সাংবিধানিক মর্যাদা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন যেন কারও দ্বারা প্রভাবিত না হতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য তিনি প্রধান এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের অপসারণ মূলত অসম্ভব করে দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের যে কঠিন পন্থায় অপসারণ করা যায়, নির্বাচন কমিশনারদের অপসারণ করতেও একই পন্থার প্রয়োজন হয়। তাঁর সৃষ্ট বিধান মতেই নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর প্রায় সব প্রশাসনিক ক্ষমতা চলে যায় নির্বাচন কমিশনের হাতে, নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যার বিকল্প নেই।

১৩তম সংশোধনী মামলার (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) রায়ের মূল কথা ছিল এই যে, বাংলাদেশের সংবিধান একটি পূর্ণাঙ্গ গণতন্ত্রের রোজনামচা। এটিতে একমাত্র জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা শাসনের কথাই উল্লেখ রয়েছে বিধায় জনগণের নির্বাচিত ব্যক্তিদের ছাড়া অন্য কেউ দেশ শাসন করতে পারে না।

আজ ’৭১-এর পরাজিত অপশক্তির লোকেরা গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতাসহ বঙ্গবন্ধুর সব সৃষ্টিকে নস্যাৎ করার জন্য মাঠে নেমেছে। তাদের ইচ্ছা দেশকে ’৭১-পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া, আবার পাকিস্তানে পরিণত করা, তালেবানি ব্যবস্থার প্রবর্তন। কিন্তু এরই মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে গণধিক্কারে তাদের সেই অভিলাষের ভরাডুবি হবে।

বছর দুয়েক আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বঙ্গবন্ধুকে এক মহাঋষি বলে উল্লেখ করেছিলেন। ১৯৭১-এর নভেম্বরে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীও আমেরিকার বিখ্যাত কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় বলেছিলেন, “শেখ মুজিব বাংলাদেশে তার চেয়েও (অর্থাৎ ইন্দিরার চেয়েও) বেশি জনপ্রিয় এবং গণহিতৈষী।” একই মত প্রকাশ করেছিলেন বিশ্বের অন্য নেতৃবৃন্দ, যেমন- ফিদেল ক্যাস্ট্রো, মার্শাল টিটো, নাইয়ারেয়ার, বুমেদিন, উইলি ব্রান্ট, শোন মেকব্রাইড, এডওয়ার্ড হিথ, হেরল্ড ম্যাকমিলন, স্যার এলেক ডগলাস হিউম, সাদ্দাম হোসেনসহ আরও অনেকে। বঙ্গবন্ধুর প্রণীত ’৭২-এর সংবিধান পর্যালোচনা করলে, বিভিন্ন সময়ে, দেশে-বিদেশে তাঁর দেওয়া ভাষণ বিশ্লেষণ করলে কারও উপলব্ধি করতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে, বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুকে যে উচ্চতায় ধারণ করতেন, তা যথাযথই ছিল। পৃথিবীতে বঙ্গবন্ধুর অকৃত্রিম গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা এবং গণহিতৈষী চেতনার জন্য তিনি মহাঋষি হিসেবেই চিরঞ্জীব হয়ে থাকবেন। তাঁর প্রণীত ’৭২-এর সংবিধানও বাঙালির মুক্তির সনদ হিসেবে বিবেচিত হবে ঠিক মেগনাকার্টা এবং বিল আর রাইটস-এর মতো। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয় অসাম্প্রদায়িক চেতনার।

লেখক : আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি

এই বিভাগের আরও খবর
ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু
ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু
গ্রীষ্মের দাবদাহ
গ্রীষ্মের দাবদাহ
নেক কাজের পুরস্কার দানে আল্লাহ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
নেক কাজের পুরস্কার দানে আল্লাহ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
চরিত্র গঠনের গুরুত্ব
চরিত্র গঠনের গুরুত্ব
মা সন্তানের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক
মা সন্তানের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক
যে দেশে ইমাম, স্পিকারকে পালাতে হয়
যে দেশে ইমাম, স্পিকারকে পালাতে হয়
মোটরসাইকেল
মোটরসাইকেল
হুমকিতে রপ্তানি খাত
হুমকিতে রপ্তানি খাত
বার্লিনের দেয়াল
বার্লিনের দেয়াল
বিজ্ঞানবিমুখ মুসলমানদের পথ দেখাবে কে?
বিজ্ঞানবিমুখ মুসলমানদের পথ দেখাবে কে?
ধান কাটা মৌসুমে শ্রমিকসংকট
ধান কাটা মৌসুমে শ্রমিকসংকট
আমার মা ও তাঁর সময়
আমার মা ও তাঁর সময়
সর্বশেষ খবর
‘আরব আমিরাত নয়, পিএসএল হোক বাংলাদেশে’—বাসিত আলীর পরামর্শ
‘আরব আমিরাত নয়, পিএসএল হোক বাংলাদেশে’—বাসিত আলীর পরামর্শ

১ মিনিট আগে | মাঠে ময়দানে

আওয়ামী লীগ দেশকে শ্মশানে পরিণত করেছিল: মঞ্জু
আওয়ামী লীগ দেশকে শ্মশানে পরিণত করেছিল: মঞ্জু

৫ মিনিট আগে | রাজনীতি

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অব্যাহতি
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অব্যাহতি

৭ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

নাটোরে যুবলীগ নেতা গ্রেফতার
নাটোরে যুবলীগ নেতা গ্রেফতার

৭ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

‘দুর্নীতিমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম’
‘দুর্নীতিমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম’

৯ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি
আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি

১২ মিনিট আগে | জাতীয়

সোনা মসজিদ সীমান্তে এক ভারতীয় নাগরিককে হস্তান্তর
সোনা মসজিদ সীমান্তে এক ভারতীয় নাগরিককে হস্তান্তর

১৩ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

রাজারহাটে চর বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবিতে সংলাপ অনুষ্ঠিত
রাজারহাটে চর বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবিতে সংলাপ অনুষ্ঠিত

১৭ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

১৭ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

চট্টগ্রামে অস্ত্রসহ দুই ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার
চট্টগ্রামে অস্ত্রসহ দুই ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

২৯ মিনিট আগে | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ট্রেনে কাটা পড়ে বাবার মৃত্যু, সন্তান আহত
ট্রেনে কাটা পড়ে বাবার মৃত্যু, সন্তান আহত

৩০ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

মুন্সিগঞ্জে লঞ্চে দুই তরুণীকে মারধরের ঘটনায় ২৫ জনকে আসামি করে মামলা
মুন্সিগঞ্জে লঞ্চে দুই তরুণীকে মারধরের ঘটনায় ২৫ জনকে আসামি করে মামলা

৩২ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

পঞ্চগড়ে ধরা পড়লো আহত নীলগাই
পঞ্চগড়ে ধরা পড়লো আহত নীলগাই

৪০ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাচন
গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাচন

৪৩ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

রাস্তা যেন ধান-খড় শুকানোর চাতাল!
রাস্তা যেন ধান-খড় শুকানোর চাতাল!

৫৯ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

কুয়াকাটায় নানা আয়োজনে বুদ্ধ পূর্ণিমা পালিত
কুয়াকাটায় নানা আয়োজনে বুদ্ধ পূর্ণিমা পালিত

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করায় হৃদরোগে মৃত্যু ঝুঁকি বাড়াচ্ছে
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করায় হৃদরোগে মৃত্যু ঝুঁকি বাড়াচ্ছে

১ ঘণ্টা আগে | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে পঞ্চগড়ে জামায়াতের শোকরানা মিছিল
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে পঞ্চগড়ে জামায়াতের শোকরানা মিছিল

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

ভুটানকে হারিয়ে সাফের সেমিতে বাংলাদেশের যুবারা
ভুটানকে হারিয়ে সাফের সেমিতে বাংলাদেশের যুবারা

১ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে তিন কৃষকের মৃত্যু
কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে তিন কৃষকের মৃত্যু

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

গোসলে নেমে কিশোরের মৃত্যু
গোসলে নেমে কিশোরের মৃত্যু

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

কলমাকান্দায় রক্তাক্ত অবস্থায় অজ্ঞাত ব্যক্তি উদ্ধার
কলমাকান্দায় রক্তাক্ত অবস্থায় অজ্ঞাত ব্যক্তি উদ্ধার

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

বিল গেটসের ২০০ বিলিয়ন ডলার দানের ঘোষণায় যা বললেন সাবেক স্ত্রী
বিল গেটসের ২০০ বিলিয়ন ডলার দানের ঘোষণায় যা বললেন সাবেক স্ত্রী

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারি বরিশাল নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদের
আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারি বরিশাল নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদের

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা ও গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ সংকট দূর করার আহ্বান
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা ও গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ সংকট দূর করার আহ্বান

১ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

গাছ থেকে পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু
গাছ থেকে পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ববিতে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা
উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ববিতে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা

১ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

ড্রেন নির্মাণে ক্ষতিগ্রস্ত টিনসেট ভবন ধ্বসের শংকা
ড্রেন নির্মাণে ক্ষতিগ্রস্ত টিনসেট ভবন ধ্বসের শংকা

১ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

কুমারখালীতে কিশোরের লাশ উদ্ধার
কুমারখালীতে কিশোরের লাশ উদ্ধার

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

প্রসাধনী ব্যবহারের আগে যা যা জানা জরুরি
প্রসাধনী ব্যবহারের আগে যা যা জানা জরুরি

১ ঘণ্টা আগে | জীবন ধারা

সর্বাধিক পঠিত
সেনা ম্যাজিস্ট্রেসি বহালে কুচক্রের মাথায় বাজ
সেনা ম্যাজিস্ট্রেসি বহালে কুচক্রের মাথায় বাজ

১৬ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ
বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ

২০ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

সামরিক সংঘাতে পাকিস্তানের চেয়ে ভারতের ক্ষতি ২১ গুণ বেশি, দাবি রিপোর্টে
সামরিক সংঘাতে পাকিস্তানের চেয়ে ভারতের ক্ষতি ২১ গুণ বেশি, দাবি রিপোর্টে

৫ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

চট্টগ্রামে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চট্টগ্রামে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা

২৩ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

‘বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে পাকিস্তানপন্থা বাদ দিতে হবে’
‘বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে পাকিস্তানপন্থা বাদ দিতে হবে’

৯ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

নেতানিয়াহুর সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প : রিপোর্ট
নেতানিয়াহুর সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প : রিপোর্ট

২৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

পাকিস্তানকে প্রশংসায় ভাসিয়ে পাশে থাকার বার্তা চীনের
পাকিস্তানকে প্রশংসায় ভাসিয়ে পাশে থাকার বার্তা চীনের

১৬ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে আলোচনায় চীনা যুদ্ধবিমান
ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে আলোচনায় চীনা যুদ্ধবিমান

১০ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

আঘাত হানতে পারে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’, ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা
আঘাত হানতে পারে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’, ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা

৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

জরুরি বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদ
জরুরি বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদ

২৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

নিষিদ্ধ হয়ে গণহত্যাকারীরা সারাদেশে বিশৃঙ্খলার পরিকল্পনা করছে: আসিফ মাহমুদ
নিষিদ্ধ হয়ে গণহত্যাকারীরা সারাদেশে বিশৃঙ্খলার পরিকল্পনা করছে: আসিফ মাহমুদ

১৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

যুদ্ধবিরতিকে ‘ঐতিহাসিক বিজয়’ বললেন পাক প্রধানমন্ত্রী
যুদ্ধবিরতিকে ‘ঐতিহাসিক বিজয়’ বললেন পাক প্রধানমন্ত্রী

৭ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধে প্রধান উপদেষ্টাকে বার বার পত্র দিয়েছে বিএনপি’
‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধে প্রধান উপদেষ্টাকে বার বার পত্র দিয়েছে বিএনপি’

২ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী গ্রেফতার
সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী গ্রেফতার

১৯ ঘণ্টা আগে | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে অনেক সময় লাগবে : আসিফ নজরুল
নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে অনেক সময় লাগবে : আসিফ নজরুল

৫ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে ঢাকা, জনজীবন দুর্বিষহ
বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে ঢাকা, জনজীবন দুর্বিষহ

৫ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতায় ভারত ‘অপ্রস্তুত, খানিকটা বিস্মিত’: ব্রিটিশ বিশ্লেষক
পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতায় ভারত ‘অপ্রস্তুত, খানিকটা বিস্মিত’: ব্রিটিশ বিশ্লেষক

২ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

যুদ্ধবিরতির পরও শ্রীনগরে বিস্ফোরণ, পেশোয়ারে ড্রোন আতঙ্ক
যুদ্ধবিরতির পরও শ্রীনগরে বিস্ফোরণ, পেশোয়ারে ড্রোন আতঙ্ক

১৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ভারত-পাকিস্তানের
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ভারত-পাকিস্তানের

১০ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের খবরে ছাত্র-জনতার উল্লাস
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের খবরে ছাত্র-জনতার উল্লাস

১৯ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

এক যুগ পর স্বজনের বাসায় খালেদা জিয়া
এক যুগ পর স্বজনের বাসায় খালেদা জিয়া

১১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

যুদ্ধবিরতি হলেও সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত নিয়ে অনড় ভারত
যুদ্ধবিরতি হলেও সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত নিয়ে অনড় ভারত

১১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

রাজধানীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড
রাজধানীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড

২৩ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

গেজেট প্রকাশের পরই আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বিষয়ে সিদ্ধান্ত : সিইসি
গেজেট প্রকাশের পরই আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বিষয়ে সিদ্ধান্ত : সিইসি

৮ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

জরুরি বৈঠক ডেকেছে বিএনপি
জরুরি বৈঠক ডেকেছে বিএনপি

২৩ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞাকে সাধুবাদ বিএনপির
আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞাকে সাধুবাদ বিএনপির

৬ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

বিএনপিপন্থি প্রকৌশলীদের ওপর আওয়ামীপন্থিদের হামলা, পুলিশসহ আহত ১৫
বিএনপিপন্থি প্রকৌশলীদের ওপর আওয়ামীপন্থিদের হামলা, পুলিশসহ আহত ১৫

১৮ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম কেবল নিষিদ্ধ করে থেমে গেলে চলবে না : ইশরাক
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম কেবল নিষিদ্ধ করে থেমে গেলে চলবে না : ইশরাক

৮ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

‘আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া দেশের জন্য যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত’
‘আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া দেশের জন্য যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত’

৫ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ভারতে বাংলাদেশি প্রবাসী সাংবাদিক ও সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্টদের ইউটিউব চ্যানেলও বন্ধ
ভারতে বাংলাদেশি প্রবাসী সাংবাদিক ও সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্টদের ইউটিউব চ্যানেলও বন্ধ

৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

প্রিন্ট সর্বাধিক
নাটকীয় যুদ্ধবিরতি
নাটকীয় যুদ্ধবিরতি

প্রথম পৃষ্ঠা

বিএনপির সমাবেশে তামিম ইকবাল
বিএনপির সমাবেশে তামিম ইকবাল

মাঠে ময়দানে

তদন্ত প্রতিবেদনের পর ব্যবস্থা
তদন্ত প্রতিবেদনের পর ব্যবস্থা

প্রথম পৃষ্ঠা

আজ বিশ্ব মা দিবস
আজ বিশ্ব মা দিবস

পেছনের পৃষ্ঠা

আজকের ভাগ্যচক্র
আজকের ভাগ্যচক্র

আজকের রাশি

কোকোর কবর জিয়ারত করলেন জুবাইদা শামিলা
কোকোর কবর জিয়ারত করলেন জুবাইদা শামিলা

নগর জীবন

রিয়া গোপ স্টেডিয়ামের বেহাল দশা
রিয়া গোপ স্টেডিয়ামের বেহাল দশা

মাঠে ময়দানে

বিএনপির বৈঠকে নিষিদ্ধ প্রসঙ্গ
বিএনপির বৈঠকে নিষিদ্ধ প্রসঙ্গ

প্রথম পৃষ্ঠা

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ

প্রথম পৃষ্ঠা

কেউ যেন ভোটের অধিকার কুক্ষিগত না করতে পারে
কেউ যেন ভোটের অধিকার কুক্ষিগত না করতে পারে

প্রথম পৃষ্ঠা

কক্সবাজার থেকে ১৮ রুটে মাদক ঢল, কাল বৈঠক
কক্সবাজার থেকে ১৮ রুটে মাদক ঢল, কাল বৈঠক

পেছনের পৃষ্ঠা

দল নিষিদ্ধ সমস্যার সমাধান নয়
দল নিষিদ্ধ সমস্যার সমাধান নয়

প্রথম পৃষ্ঠা

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ

প্রথম পৃষ্ঠা

শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে চলছে ৬০ জোড়া ট্রেন
শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে চলছে ৬০ জোড়া ট্রেন

পেছনের পৃষ্ঠা

সারা দেশে গ্রেপ্তার অভিযান
সারা দেশে গ্রেপ্তার অভিযান

নগর জীবন

বিউটি ক্যাপসিকামে ঝোঁক কৃষকের
বিউটি ক্যাপসিকামে ঝোঁক কৃষকের

পেছনের পৃষ্ঠা

অস্থিরতা থামছে না শেয়ারবাজারে
অস্থিরতা থামছে না শেয়ারবাজারে

পেছনের পৃষ্ঠা

তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ
তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ

পেছনের পৃষ্ঠা

মাকে নিয়ে সেরা যত চলচ্চিত্র
মাকে নিয়ে সেরা যত চলচ্চিত্র

শোবিজ

মোদি-শেহবাজকে প্রধান উপদেষ্টার সাধুবাদ
মোদি-শেহবাজকে প্রধান উপদেষ্টার সাধুবাদ

প্রথম পৃষ্ঠা

যে দেশে ইমাম, স্পিকারকে পালাতে হয়
যে দেশে ইমাম, স্পিকারকে পালাতে হয়

সম্পাদকীয়

যুদ্ধক্ষেত্র থেকে জন্মভূমিতে
যুদ্ধক্ষেত্র থেকে জন্মভূমিতে

মাঠে ময়দানে

চট্টগ্রামের গল্পে জিৎ
চট্টগ্রামের গল্পে জিৎ

শোবিজ

সভাপতি সুমন, মহাসচিব টুটুল
সভাপতি সুমন, মহাসচিব টুটুল

শোবিজ

সহযোগিতার আশ্বাস জুলাই শহীদ পরিবারকে
সহযোগিতার আশ্বাস জুলাই শহীদ পরিবারকে

প্রথম পৃষ্ঠা

সংগীতমাঝির অন্যলোকে পাড়ি
সংগীতমাঝির অন্যলোকে পাড়ি

শোবিজ

বার্সা-রিয়াল লড়াইয়ে লা লিগার ভাগ্য
বার্সা-রিয়াল লড়াইয়ে লা লিগার ভাগ্য

মাঠে ময়দানে

ছাত্রলীগ নেতাসহ ২০ বাংলাদেশি আটক পশ্চিমবঙ্গে
ছাত্রলীগ নেতাসহ ২০ বাংলাদেশি আটক পশ্চিমবঙ্গে

পেছনের পৃষ্ঠা

এশিয়ার অর্থনীতিতে বিপর্যয় শঙ্কা
এশিয়ার অর্থনীতিতে বিপর্যয় শঙ্কা

প্রথম পৃষ্ঠা

ভারত-পাকিস্তান সংঘাত বৃত্তান্ত
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত বৃত্তান্ত

রকমারি