রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
প্রদর্শকদের সঙ্গে বুকিং এজেন্টদের একাত্মতা

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ছবি মুক্তি

৮ এপ্রিল শুক্রবার আর কোনো নতুন ছবি মুক্তি পাচ্ছে না এবং ১২ এপ্রিল থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেশের সব সিনেমা হল

আলাউদ্দীন মাজিদ

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ছবি মুক্তি

পর্যাপ্ত দেশীয় ছবি ও বিদেশি ছবি এ দেশে মুক্তির শর্ত শিথিল না করা হলে আগামী ১২ এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশের সব সিনেমা হল বন্ধ করে দেওয়ার প্রদর্শক সমিতির ঘোষিত আলটিমেটামের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে সিনেমা হল বুকিং এজেন্ট সমিতি। ২৪ মার্চ বুকিং এজেন্টরা প্রদর্শকদের সঙ্গে এক লিখিত চুক্তিতে এই একাত্মতা ঘোষণা করে। এর ফলে ৮ এপ্রিল শুক্রবার আর কোনো নতুন ছবি মুক্তি পাচ্ছে না এবং ১২ এপ্রিল থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেশের সব সিনেমা হল। এ কথা জানিয়েছেন প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার নওশাদ ও বুকিং এজেন্ট সমিতির সভাপতি সারোয়ার ভূইয়া। প্রদর্শক সমিতি গত ১৩ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে ১১ এপ্রিলের মধ্যে তাদের দাবি পূরণ না করলে ১২ এপ্রিল থেকে দেশের সব সিনেমা হল বন্ধ করে দেওয়ার আলটিমেটাম দেয় সরকারকে। ইফতেখার নওশাদ গতকাল বলেন, এখন পর্যন্ত সরকার আমাদের অনুরোধে কোনো সাড়া দেয়নি। মনে হচ্ছে বিষয়টিকে সরকার হালকাভাবে দেখছে। আমরা কিন্তু আমাদের সিদ্ধান্তে অনড়। কারণ ছবির অভাবে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তিনি আরও বলেন, গত ২৪ মার্চ কাকরাইলে প্রদর্শক সমিতির অফিসে এসে আমাদের আলটিমেটামের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন চলচ্চিত্র বুকিং এজেন্ট সমিতির ৩০ কর্মকর্তা। লিখিত চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন তারা।  তারাও বলেছেন ১২ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশের কোনো হলে তারা সিনেমা বুকিং নেবেন না। আলটিমেটাম বাস্তবায়নের আগের শুক্রবার অর্থাৎ ৮ এপ্রিল পুরনো ছবি মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানান ইফতেখার নওশাদ।

এদিকে, চলচ্চিত্র বুকিং এজেন্ট সমিতির সভাপতি সারোয়ার ভূইয়া বলেন, ‘আমরা প্রদর্শক সমিতির সঙ্গে একমত হয়েছি। ১২ এপ্রিল থেকে বুকিং এজেন্টের কোনো সদস্য বাংলাদেশের কোনো হলে সিনেমা বুকিং নেবে না।

তার কথায়, দেশে ছবি নেই। নিয়মের মধ্যে থেকেও বাইরে থেকে ছবি আমদানি করতে গেলে শর্তের বাইরেও নানা ঝামেলায় পড়তে হয়। এভাবে হল তো আর বাঁচানো যাবে না। আলটিমেটামের মধ্যে থেকেই সরকারের উদ্যোগের অপেক্ষায় আছি।

এদিকে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে উৎসবে  মুক্তি দিতে চাওয়া ‘শাহেন শাহ’ ছবিটির ভাগ্যে কি ঘটবে? এমন প্রশ্নে

চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা মিঞা আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা যে আলটিমেটাম দিয়েছি, তা বহাল আছে। ১২ এপ্রিল থেকে কোনো সিনেমা হল খুলবে না। সুতরাং পয়লা   বৈশাখের ছবি বুকিং নেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’ তার কথা, ‘দেশের বাইরের ছবি আনার শর্ত আরও শিথিল চাই, শর্তের সঠিক ব্যবহার চাই। কলকাতার ছবি আমদানি করে একই দিন এখানেও মুক্তি দিতে চাই আমরা। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে আমদানির অনুমোদন পেতেই প্রায় তিন মাস সময় লাগে। এর মধ্যে কলকাতায় ছবিটি মুক্তি পেয়ে যায় এবং ইউটিউব ও কলকাতার বিভিন্ন্ টিভি চ্যানেলে ছবিটি মুক্তি পেয়ে যায়। ফলে দেরিতে অনুমোদন পাওয়ায় ছবিটি পুরনো হয়ে যাওয়ায় এটি সিনেমা হলে গিয়ে দর্শক আর দেখে না। এতে চরম লোকসানের কবলে পড়ে প্রদর্শক আর আমদানিকারকরা। এই অবস্থার অবসানে সরকারি কোনো উদ্যোগ না থাকায় আমরা চরম হতাশ হয়ে সিনেমা হল বন্ধ করে দেওয়ার  মতো সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।

সর্বশেষ খবর