বেশ কয়েকদিন ধরে পরী-রানা-সাথীকে ঘিরে নিত্যনতুন মুখরোচক খবরে সরগরম গোটা মিডিয়া পাড়া। বিশেষ করে পরীমনির সঙ্গে পরিচালক করিরুল ইসলাম রানার সম্পর্ককে ঘিরে বেগবান হচ্ছে এ গুঞ্জন। আর তৃতীয় চরিত্র হিসেবে নিজেকে উদয় করে আলোচনায় চলে এসেছেন রানার সাবেক স্ত্রী সাথী।
জানা গেছে, সাথীকে অনেক আগেই ডিভোর্স দিয়েছেন রানা। সাম্প্রতিক এ খবরকে ঘিরে অবশেষে মুখ খুললেন এ পরিচালক। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে রানা বলেন, কিছু কিছু গণমাধ্যম বিশেষ করে কিছু অনলাইন পোর্টাল আমার বিরুদ্ধে ভুল সংবাদ পরিবেশন করছে। এছাড়া পরীমনিকে আমার সঙ্গে জড়িয়ে যে গুঞ্জনটি বেগবান হচ্ছে সেটাও ভিত্তিহীন। তার আগে একটু সাথী সম্পর্কে জানানো প্রয়োজন। বেশির ভাগ গণমাধ্যম নিউজ করেছে যে, শ্যুটিং স্পটে গিয়ে আমার স্ত্রী সাথী আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছে। এসব নিউজের শুরুতেই তারা পাঠককে বিভ্রান্ত করেছে। কারণ সাথী আমার বর্তমান স্ত্রী নন, সে হলো সাবেক। তার সঙ্গে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি আমার ডিভোর্স হয়েছে।
এ ডিভোর্স সম্পর্কে জানতে চাইলে রানা আরও বলেন, বিয়ের কয়েকদিনের মাথায় জানতে পারি সাথী অ্যাডিক্টেড। প্রায়ই সে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে পড়ে থাকে। এমনকি সাথীকে বেশ কয়েকবার হসপিটালাইজডও করা হয়েছিল। এর পরপরই আমি তার পরিবারকে জানাই। তারাও সাথীকে বোঝানোর চেষ্টা করে। ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হই বিচ্ছেদ ঘটাতে। দুইপক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতি এবং সম্মতিতে গত ২৯ জানুয়ারি সাথীকে ডিভোর্স দেই আমি। অন্যদিকে, পরীমনির সঙ্গে 'পুড়ে যায় মন' ছবির কাজ শুরু হয় ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে। অথচ শ্যুটিং শুরু হওয়ার মাসখানেক আগেই আমাদের ডিভোর্স হয়। এরপরও মিডিয়াগুলো কিভাবে লেখে সাথী আমার স্ত্রী।
তাহলে শ্যুটিং স্পটে যে ঘটনা ঘটলো এর কারণ কি জানতে চাইলে রানা বলেন, গত ২০ আগস্ট পূবাইলে 'পুড়ে যায় মন' ছবিটির শ্যুটিং চলছিল। বিকেলের দিকে সেখানে উপস্থিত হন সাথী। এর আগে পাঠকদের জানানো দরকার যে, বিচ্ছেদের পরও সাথী আমার কাছ থেকে প্রায়ই টাকা নিতো। মানবতার খাতিরে আমিও সাহায্য করতাম। লোকজন যাতে না জানতে পারে এজন্য মাঝে মাঝে বিকাশের মাধ্যমেও টাকা পাঠাতাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো টাকা-পয়সা নিয়ে সেই আগের কাজই করতো অর্থাৎ নেশাজাতীয় দ্রব্য বা চড়া মাত্রার ঘুমের ওষুধ খেয়ে পড়ে থাকতো। বিচ্ছেদের পরেও তাকে একবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মানবিক কারণে এক বন্ধুকে নিয়ে আমিও তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। এসব ঘটনা সম্পর্কে তাদের পরিবারের লোকজন অবহিত রয়েছেন। এবার আসা যাক সেদিনের ঘটনায়। ওইদিনও সাথী টাকার জন্য পূবাইলের শ্যুটিং স্পটে হাজির হন। আমি ব্যস্ত থাকায় কিছুটা সময় দেরি হয় তার সঙ্গে দেখা করতে। এরই মাঝে তার সঙ্গে কিছুটা বাকবিতণ্ডা হয় আমার। এর পরপরই নানা মুখরোচক গুঞ্জন ছড়াতে থাকে।
হঠাৎ করে সাথী আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলো কেন? এ প্রসঙ্গে রানা বলেন, প্রত্যেকটি সেটে কম-বেশি একে-অন্যের শুভাকাঙ্ক্ষী যেমন থাকে, ঠিক তেমনি থাকে শত্রু। ওই ইস্যুটাকে পুঁজি করে আমার শত্রুরাই এ রটনা রটাচ্ছে। যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এখন আপনি কি করবেন জানতে চাইলে রানা বলেন, এবার আমি আইনি পদক্ষেপ নেবো। সাথী বিভিন্ন গণমাধ্যমে পরীমনিকে জড়িয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এমনকি এটাও সে দাবি করছে, সে নাকি এখনও আমার স্ত্রী। আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে রমনা থানায় একটি জিডি (নং-১৭১৮-২৬-০৮-২০১৪) করেছি এবং ডিভোর্সের কাগজপত্র জমা দিয়েছি। কারণ সে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করেছে। রীতিমতো হুমকিও দিচ্ছে। এদিকে, রানার সাবেক স্ত্রী সাথীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পরী-রানা-সাথীর এই ত্রিমাত্রিক গুঞ্জন কতদূর ডানা মেলে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।