খাবারের মতো পরিচ্ছন্ন একটা ব্যাপারে এরকম হাতির মল ঢুকে পরলে যেকোনো স্বাভাবিক মানুষেরই ঘেন্না লাগবে। তবে আপাতত ঘেন্নাটা তুলে রেখে যদি জানার চেষ্টা করেন যে ঠিক কিভাবে বিশ্বের সবচেয়ে সুস্বাদু এবং দামি কফি তৈরিতে হাতিকে ব্যবহার করা হয়, তাহলে হয়তো পরবর্তী সময়ে ভালো লাগতেও পারে।
তাই শিরোনাম পড়ে পিঠটান দেয়ার আগে অন্তত একবার মনের জিজ্ঞাসা ক্ষুধাকে মিটিয়ে নিন। বিশ্বের সবচেয়ে দামি কফিটির নাম ব্ল্যাক আইভরি কফি। সবচেয়ে বড় কথা এই দামি কফিটি তৈরি হয় থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত ব্ল্যাক আইভরি কফি কোম্পানিতে।
এমন একটি স্থানেই শুধু এই কফিটি উৎপাদন করা হয়, যে অঞ্চলটিকে গোটা বিশ্ব গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গাল নামে চেনে। থাইল্যান্ডের এই অংশে সবচেয়ে বেশি অবৈধ উপায়ে মাদকদ্রব্য থেকে শুরু করে অস্ত্র পাচার হয়।
ঠিক তেমনই একটি স্থানে কানাডার উদ্যোক্তা ব্লেক ডিনকিনের পক্ষে এরকম একটি কফি কোম্পানি চালানো খুব একটা সহজ কাজ নয়। কিন্তু বিচিত্র পদ্ধতিতে এই কফি উৎপাদনের জন্য চোরাকারবারিদের কাছেও বেশ সমাদৃত ডিনকিন ও তার কোম্পানি।
থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে জলবায়ুগত কারণে যে কফিটি জন্মে তা বিশ্বের অন্য স্থানে জন্মালেও এখানকার মতো স্বাদ হয় না। তাই এক কথায় থাইল্যান্ডের আরাবিকা কফি সবচেয়ে পৃথক স্বাদের।
এই আরাবিকা কফির বীজ খুব যত্ন সহকারে সংগ্রহ করে ডিনকিনের কোম্পানির শ্রমিকরা। এরপর সেই বীজগুলোকে সঠিক প্রক্রিয়ায় ধোয়ার পর হাতিকে খেতে দেয়া হয়।
এই কফি বীজগুলো হাতির পাকস্থলীর এনজাইমের সংস্পর্শে আসে এবং একারণে বীজটির প্রোটিন অংশ বিভক্ত হয়ে যায়। কারণ এই প্রোটিনই কফিকে তেতো করে।
কফিতে যত কম প্রোটিন থাকবে ততই তেতো স্বাদ কম থাকবে। হাতির পাকস্থলীতে এই কফি বীজ প্রায় ১৫ থেকে ৭০ ঘণ্টা পর্যন্ত হজম হতে থাকে।
একটা পর্যায়ে যখন হাতি নির্দিষ্ট স্থানে মলত্যাগ করে, তখন শ্রমিকরা সেই মল থেকে অত্যাধিক যত্নের সঙ্গে কফির বীজগুলো সংগ্রহ করে।
বীজ সংগ্রহ হয়ে যাবার পর কারখানার নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে তৈরি হয় পৃথিবীর সবচেয়ে দামি এবং সুস্বাদু ব্ল্যাক আইভরি কফি।
বিডি-প্রতিদিন/ ৪ জুন ১৫/নাবিল