দক্ষিণ আফ্রিকার সব চেয়ে ধনী এলাকা স্যান্ডটনের বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার চেহারা ছিলো অন্য রকম। হঠাৎ করে ফুটপাথে পাতা হলো কার্ডবোর্ডের বাক্স। হাড়-হিম ঠান্ডায় তারই মধ্যে একে একে ঢুকে পড়লেন প্রায় আড়াইশো জন সিইও খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে।
তিন ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাঁদের সম্বল শুধু কম্বল, স্লিপিং ব্যাগ আর হট ওয়াটার বটল। খাবার বলতে শুধু স্যুপ আর কফি। সেলফোন ব্যবহারে অবশ্য বাধা ছিল না। গা গরম রাখতে ছিল ধুনির ব্যবস্থা। আপদকালীন ব্যবস্থার জন্য রাখা হয়েছিল স্বাস্থ্যকর্মীদের।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন ভোডাকম-এর শীর্ষকর্তা শামিল জুসাব, লনমিন-এর বেন মাগারো, বার্কলেজ আফ্রিকার মারিও র্যামোস, প্রাইমিডিয়ার টেরি ভোকউইন প্রমুখ৷ ব্যাঙ্ক, শেয়ারবাজার, গাড়ি, প্রযুক্তি, সব ক্ষেত্রের কর্মকর্তারাই উপস্থিত ছিলেন৷ শহরের মেয়র পার্কস তাউ-ও এই উদ্যোগে অংশ নেন।
গৃহহীনদের জন্য সচেতনতা বাড়াতে এবং তাদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে এই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছিল ৭০২ সান ইন্টারন্যাশনাল সিইও স্লিপআউট নামে একটি সংস্থা। তাদের শর্ত ছিল, প্রত্যেক শীর্ষকর্তাকে অন্তত এক লক্ষ র্যান্ড (৮২০০ ডলার) দান করতে হবে। এবং মোট অর্থসংগ্রহের পরিমাণ হতে হবে আড়াই কোটি র্যান্ড (২১ লক্ষ ডলার)। এই অর্থ প্রদান করা হবে গার্লস অ্যান্ড বয়েজ টাউন নামে এক অ-সরকারি সংস্থাকে। এদের ভরসাতেই বেঁচে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ৩৫,০০০ গৃহহীন মানুষ।
দক্ষিণ আফ্রিকায় এই উদ্যোগ প্রথম হলেও, সংস্থাটি ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউ জিল্যান্ডে একই ভাবে গৃহহীনদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছে। বারো ঘন্টা পরে, এই উদ্যোগকে সাধুবাদ দেওয়ার সময় অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। ঠান্ডা ও ক্লান্তি তাঁদের উত্সাহে থাবা বসাতে পারেনি। অনেকেই আবার এই অনুষ্ঠানে যোগদান করতে রাজি। মাইনওয়াকার্স ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির প্রধান মেরি বোমেলার মতে, 'সত্ কাজে সব সময় এগিয়ে আসা উচিত৷ সহকর্মীদের উত্সাহেই আমি এখানে আসতে পেরেছি।'
বিডি-প্রতিদিন/ ২০ জুন ১৫/ সালাহ উদ্দীন