১৩ মার্চ, ২০১৯ ১৬:৩৬

পাহাড়ে হলুদের বাম্পার ফলন

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ে হলুদের বাম্পার ফলন

পাহাড়ে হলুদের বাম্পার ফলন হয়েছে। তাই হলুদে ভরপুর স্থানীয় হাট-বাজারগুলো। পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া উপযুক্ত থাকায় এবার হলুদ চাষে সফল হয়েছেন রাঙামাটির  চাষীরা। তাছাড়া কম খরচ, ব্যাপক ফলন, লাভও অধিক। তাই কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে মানোন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখছে পাহাড়ে এ উৎপাদিত হলুদ। পাহাড়ের উৎপাদিত হলুদের চাহিদা এখন বিশ্বজুড়ে। তাই রফতানি হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। 

স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, হলুদ বহুল ব্যবহৃত একটি মসলা ফসল। তাই চাহিদার সাথে জনপ্রিয়তা বেশি। এছাড়াও হলুদের অনেক ভেষজ গুণও রয়েছে। প্রায় সব ধরনের মাটিতে হলুদ চাষ করা যায়। তবে দো-আঁশ ও বেলে-দো-আঁশ মাটি হলুদ চাষের জন্য অতি উত্তম। তাই পাহাড়ে হলুদ চাষে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা। ডিমলা ও সিন্দুরী নামে হলুদের দু’টি উন্নত জাত রয়েছে। ডিমলা জাতটি স্থানীয় জাতের তুলনায় ৩ গুণ ফলন বেশী দেয়। পাহাড়ে সাধারণত ডিমলা জাতের হলুদ বেশি হয়ে থাকে।

স্থানীয় হলুদ চাষীরা জানায়, প্রতিবছর পাহাড়ে উৎপাদিত হাজার হাজার মেট্রিক টন হলুদ যাচ্ছে সমতলে। চাহিদা বেশি থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা হলুদ নিতে আসছে পাহাড়। তাই কৃষকরা বেশি দামের আশায় পাহাড় থেকে সংগৃহীত হলুদ সিদ্ধ করে রৌদে শুকানোর পর বাজারে নিয়ে আসছে। আর এসব হলুদের রঙ দেখে ঝুকে পড়ছে ব্যবসায়ীরা। তবে কষ্টের তুলনায় দাম মিলছে না। যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত ও পরিবহন সংকটের কারণে সঠিক সময়ে হলুদ বাজারজাত করতে পাড়ছে না কৃষকরা। তাই লাভের চেয়ে ব্যয় খরচ বেশি গুণতে হচ্ছে কৃষকদের। 

অন্যদিকে, প্রতিবছর পার্বত্যাঞ্চলে কি পরিমাণ হলুদের আবাদ হয় তার সঠিক কোনো তথ্য জানা না গেলেও আগের চেয়ে ব্যাপক হারে হলুদ চাষ বেড়েছে বলে দাবি স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের। 

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, এ বছর শুধু রাঙামাটি জেলায় হলুদের আবাদ হয়েছে  ২ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৩ হাজার ৮শ মেট্রিক টন। পার্বত্যাঞ্চলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা পাহাড়ের ঢালে জুমের ধানের পাশাপাশি হলুদ চাষ করে থাকে। জুমের মিশ্র ফসলে চাষাবাদের মধ্যে হলুদের চাষ অন্যতম। এটা শুধু রাঙামাটি নয়, অপর দুই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দবানের হলুদের চাষ এখন ব্যাপক আকারে হচ্ছে। পাহাড়ে হলুদ বাগানে সবেমাত্র শুরু হয়েছে হলুদ সংগ্রহ করার কাজ। তাই ব্যস্ত সময় পাড় করছে কৃষকরা। কিন্তু গত মৌসুমের ন্যায় এবছরও তেমন ভালো দাম নাপাওয়ার কারণে কিছুটা মনক্ষুুন্ন কৃষকরা। পার্বত্যাঞ্চলের জন্য হলুদ একটি অর্থকরী ফসল। সঠিকভাবে বাজারজাত করা গেলে দাম সংকট নিরসণ করা সম্ভব। 

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর