১২ আগস্ট, ২০২২ ১৩:০২

পাহাড়ি ঝর্ণায় পর্যটকের ঢল

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ি ঝর্ণায় পর্যটকের ঢল

পাহাড়ি ঝর্ণাগুলোতে এখন পর্যটকের ঢল নেমেছে। প্রায় প্রতিদিন আসছে হাজার হাজার তরুণ-তরুণী। দূর-দুরান্ত থেকে প্রকৃতির টানে উভেন ট্যুরের নামে আসছে পর্যটকদের গ্রুপ। তাই ব্যস্ত সময় পার করছে কাপ্তাই হ্রদ বোর্ট মালিক শ্রমিকরা। একই সাথে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে ট্যুরিস্ট বোর্ট ব্যবসা। 

শুক্রবার ছিল রাঙামাটিতে চোখে পড়ার মত পর্যটক। আর এসব পর্যটকদের ভিড় দেখা যায় রাঙামাটির বরকল উপজেলার সুভলং ইউনিয়নের গিরিনির্ঝর ঝর্ণায়। শুধু কি? একইভাবে ভিড় ছিল ঘাগড়া র্ঝণায়ও। পাহাড়ে ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে থাকা ঝর্ণার আকর্ষণে ছুটে আসছে দেশি-বিদেশি পর্যটক। কারণ টানা বৃষ্টিতে নতুন করে সেজেছে প্রকৃতি। যৌবন ফিরেছে পাহাড়ি ঝর্ণায়। ঝর্ণার স্রোতধারার গুঁড়ি গুঁড়ি জলকনাগুলো আকাশের দিকে উড়ে গিয়ে তৈরি করছে কুয়াশার আভা। তার শীতল কলতানে নিক্কন ধ্বনির উচ্ছ্বাস ছড়িয়েছে পর্যটকদের মনে। পাহাড়ে বুকে আছড়ে পড়া ঝর্ণার জলধারা সবুজ অরণ্যের যেন স্নিগ্ধতার পরশ এঁকেছে।

রাঙামাটি শুভলং ঝর্ণায় বেড়াতে যাওয়া আরিয়ন ও ইমরান জানায়, হ্রদ-পাহাড়ের শখ্যতায় হৃদয় নিংড়ানো সৌন্দর্য। পাহাড়ের বুক চিরে আছড়ে পরা জলধারা। এমন বিস্ময়কর প্রাকৃতিক প্রাচুর্য শুধু রাঙামাটিতেই দৃশমান। তাই তো প্রতিবছর বর্ষাতে ঝর্ণা দেখতে রাঙামাটিতে ছুটে আসি। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি জেলায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভরপুর অসংখ্য ছোট-বড় পাহাড়ি ঝিড়ি-ঝর্ণা রয়েছে। তারমধ্যে শুধু রাঙামাটির বরকল উপজেলার শুভলং ইউনিয়নে রয়েছে ছোট বড় ১০০টি ঝর্ণা। শুভলংয়ের গিরিনির্ঝর ঝর্ণাটি পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয়। প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসে ঝর্ণার জলধারা। ঝর্ণার অবিরাম পতনে সৃষ্ট নিক্কন ধ্বনি বিমহিত করে পর্যটকদের। দূর-দুরন্ত থেকে আগত দেশি-বিদেশি পর্যটকরা যান্ত্রিক জীবনের ক্লান্তি অবসানে হারিয়ে যাচ্ছে ঝর্ণার জলধারায়। পাহাড়ে ঝর্ণার চঞ্চলা জলধারা পর্যটককেই কাছে টানে খুব সহজে। তাই গ্রীষ্ম বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত কিংবা বসন্ত এসব ঝর্ণায় পর্যটকদের জুলুস থাকে সারা বছরই। 

ঝর্না দেখে মুগ্ধ আরেক পর্যটক হুমাইরা। তিনি বলেন, পত্রিকায় পাহাড়ি ঝর্ণা গল্প পড়েছি। কিন্তু বাস্তবে দেখার তেমন সুযোগ হয়নি। তাই এবার সুযোগ পেয়ে পরিবারের সাথে ঝর্ণায় আসলাম। পাহাড়ি ঝর্ণা আসলে খুবই সুন্দর। যেহেতু কিছু্ক্ষন পর পর বৃষ্টি নামে তাই   সতেজতায় পাহাড়ি ঝিরিগুলো হয়ে উঠে প্রাণচঞ্চল। সাঁই সাঁই করে ধেয়ে চলছে ঝিরির জলরাশি মিলেছে হ্রদের প্রাণে। সত্যি অসাধারণ দৃশ্য। যেন কল্পনায় আকাঁ এক বাস্তব চিত্র। 

রাঙামাটির শুভলং ঝর্ণার টিকেট বিক্রেতা রিন্টু চাকমা জানান, ঝর্ণা সবার কাছে প্রিয়। তাই রাঙামাটি বেড়াতে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ছুটে আসে এখানে। শুষ্ক মৌসুমে বড় ঝর্ণাতে পানি একটু কম থাকলেও কৃত্রিম পানির ব্যবস্থা করা হয়। তবে ছোট ঝর্ণায় পানি থাকে বারো মাসই। সম্প্রতি সময় ঝর্ণা স্পটে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে।  

রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের নৌযান ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. রমজান আলী জানান, বর্তমানে ঝর্ণা স্পটে পর্যটকদের ভ্রমণ অব্যাহত রয়েছে। তাই নৌযান ঘাটের বোর্ট চালকদের ব্যস্ততা ও আয় বেড়েছে।


বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর