১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৭:২৬

এক পা দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষা

নাটোর প্রতিনিধি

এক পা দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষা

জন্ম থেকেই দুই হাত নেই, ডান পাও নেই। বাঁ পা থাকলেও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক ছোট। ছোট থেকে স্বপ্ন দেখেন পড়াশোনা করে বাবা-মার দায়িত্ব নেবেন। তাই কোনো বাঁধাই তাকে পিছনে ফেলতে পারেনি। বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সিংড়া পৌর এলাকার শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পায়ের আঙুলের ফাঁকে কলম রেখে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে রাসেল মৃধা।

রাসেল মৃধা সিংড়া উপজেলার শোলাকুড়া মহলার দিনমজুর আব্দুর রহিম মৃধার ছেলে এবং শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার ছাত্র। 

অভাব-অনটনের মাঝেও প্রতিবন্দ্বী রাসেল মৃধার লেখাপড়ার প্রতি আলাদা স্পৃহা দেখে তার দরিদ্র বাবা-মা হাল ছাড়েননি। রাসেল পিএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছে। সামনের দিনগুলোও সাফল্যের সাথে এগিয়ে যেতে চান রাসেল।

রাসেল মৃধা বলেন, আমার দুটো হাত, একটি পা নেই। এক পা দিয়ে লিখে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন যেন সামনে ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারি। আমার অনেক ইচ্ছা লেখাপড়া করে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে একটি চাকরি করবো। আমার বাবা-মার সকল দায়িত্ব নিব। তারা আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছে। আমি বাবা-মা আর শিক্ষকদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।

রাসেল মৃধার বাবা আব্দুর রহিম মৃধা বলেন, শারীরিক সীমাবদ্ধতা আমার ছেলের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। তার লেখাপড়ার প্রতি অনেক আগ্রহ। দিনমজুরি করে অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করাচ্ছি। লেখাপড়া শিখে সে একদিন আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবে।

শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোর্তারফ হোসেন বলেন, রাসেল মৃধা এ বছর আমার প্রতিষ্ঠান থেকে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। বিগত পরীক্ষাগুলোতেও সে কৃতিত্বের সাথে সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা আশাবাদী, রাসেল এবারও ভালো ফলাফল অর্জন করবে। লেখাপড়া শিখে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশ ও জাতির সেবা করতে পারে সেজন্য তার জন্য দোয়া কামনা।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম এম সামিরুল ইসলাম বলেন, ছেলেটির হাত ও পা না থাকা সত্ত্বেও ছোট একটি পা দিয়ে সুন্দরভাবে লিখে পরীক্ষা দিয়েছে। তার অদম্য স্পৃহা সকলকে মুগ্ধ করেছে।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর