শুক্রবার, ২১ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

গাছ লাগান কর্মস্থল ও বাসস্থানে : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিদিন ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের নাগরিকদের প্রত্যেককে কর্মস্থল ও বাসস্থানে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে সন্তানদেরও এই পরিবেশবাদী কাজ শেখানোর পরামর্শ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি নগরায়ণের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ সুরক্ষা করে নতুন প্রকল্প গ্রহণকালে প্রাকৃতিক জলাধার সৃষ্টি ও তা সংরক্ষণ এবং অধিকহারে বৃক্ষরোপণের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। খবর : বাসস।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০১৯ এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০১৯ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়নের বিরোধিতা করি না, আমাদের বিভিন্ন প্র্রজেক্ট নেওয়ার সময় আমি দেখেছি যেখানে জলাধার রয়েছে সেটা ভরাট করেই বিল্ডিং তুলতে হবে। এই করতে করতে ঢাকা শহরে যতগুলো খাল, পুকুর ছিল এখন আর তা নেই।’ তিনি বলেন, একটি সংস্থার পরামর্শে পূর্বের সরকার তা শুরু করে দিল। আমাদের বক্স কালভার্ট করার কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের খালগুলোকে ওভাবে রেখেই আমরা কিন্তু খালের দুই পাড় দিয়ে রাস্তা করতে পারি অথবা আমরা সেখানে এলিভেটেড রাস্তাও করে দিতে পারি। শেখ হাসিনা বলেন, খাল যেখানে খালের মতোই থাকবে। সেখানে নৌ-চলাচলও করতে পারে, তাতে আমাদের পরিবেশও রক্ষা পাবে, বায়ুদূষণ কমবে এবং সেখানকার বাতাসটাও আরামদায়ক হবে। কিন্তু যেখানে কোনো গাছ থাকে না সেখানে সেই পরিবেশটা থাকে না। সেই বিষয়ে আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সবাইকে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রত্যেকেই নিজের কর্মস্থল ও বাসস্থানে গাছ লাগাবেন। অন্তত একটি করে বনজ, ফলদ এবং ভেষজ গাছ লাগাবেন। ছেলে-মেয়েদেরও বৃক্ষরোপণ শেখাতে হবে। তিনি বলেন, শুধু গাছ লাগালেই হবে না, পরিচর্যাও করতে হবে। প্রত্যেকে নিজের এলাকায় যত ইচ্ছা গাছ লাগাবেন। এতে কয়েক বছর পর টাকাও পাওয়া যায়, বছর বছর ফল পেলেও খুশি লাগে। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মোট ভূমির ২০ ভাগ বনায়ন করতে হবে। এ ছাড়া যে বনগুলো আছে তা রক্ষা করতে হবে। নদী ড্রেজিং, নদী প্রবহমান রাখতে হবে। বিভিন্ন দ্বীপে প্রচুর বৃক্ষরোপণ করতে হবে। এ সময় শেখ হাসিনা আজিমপুর গার্লস স্কুলে পড়ার সময় বান্ধবীদের সঙ্গে নিয়ে গাছ লাগানোর স্মৃতিচারণও করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এতে বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী। অনুষ্ঠানের শুরুতে পরিবেশ ও বনের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন-২০১৯, বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার-২০১৮ ও সামাজিক বনায়নের লভ্যাংশের চেক এবং একই সঙ্গে পরিবেশ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখার জন্য জাতীয় পরিবেশ পদক-২০১৯ প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠান স্থল থেকে গাজীপুরে ‘শেখ কামাল ওয়াইল্ড লাইফ সেন্টার’ এবং পরিবেশ অধিদফতরের জন্য নতুন ভবনও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, সরকারের বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তা, দফতর এবং বিভাগের প্রধান, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক-রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর