মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
পদযাত্রায় মির্জা ফখরুল

এক-এগারোর পর কারা পালিয়েছিল মানুষ জানে

নিজস্ব প্রতিবেদক

এক-এগারোর পর কারা পালিয়েছিল মানুষ জানে

রাজধানীতে গতকাল পদযাত্রায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এক-এগারোর পর কারা দেশ থেকে কীভাবে পালিয়েছিল, দেশের মানুষ সব জানে। কিন্তু পালাননি শুধু একজন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সুতরাং এসব কথা বলে লাভ নেই।

বিএনপির চলমান পদযাত্রা কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন গতকাল রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে পদযাত্রাপূর্ব এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশটি পরিচালনা করেন সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু। সমাবেশ শেষে বেলা ২টা ৫০ মিনিটে যাত্রাবাড়ী থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এতে নেতৃত্ব দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা এতে অংশ নেন। মির্জা ফখরুল বলেন, রবিবার রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগ নাকি পালায় না। এক-এগারোতে গ্রেফতার হওয়ার পর কারা দেশ থেকে পালিয়েছিল, দেশের মানুষ সব জানে। কিন্তু ওই সময় পালাননি একজন, তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, তখন খালেদা জিয়া পরিষ্কারভাবে বলেছিলেন, ‘বিদেশে আমার কোনো জায়গা নেই। এ দেশ আমার, এ দেশের মাটি আমার, আমি এ দেশ ছেড়ে কোথাও যাব না। এখানে আমার জন্ম, এখানেই আমি মরব।’ সুতরাং এসব কথা বলে লাভ নেই। কে কোথায় পালায়, কবে পালায়, কেমন করে পালায়, দেশের মানুষ সবই জানে। এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না। পালাবেন কোন দিকে? কোনো দিকে পালাবার পথ নেই। এখনো সময় আছে, ১০ দফা দাবি মেনে নিয়ে মানে মানে পদত্যাগ করুন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের এমপি ছিলেন সাত্তার সাহেব (উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া)। তিনি পদত্যাগ করলেন। তারপর ভুল করে যখন আবার নির্বাচন করতে গেলেন, তখন আমরা তাকে বহিষ্কার করলাম। এখন তাকে জেতানোর জন্য সব নীতিমালা ও নৈতিকতা বাদ দিয়ে আপনারা (আওয়ামী লীগ) আপনাদের প্রার্থীকে প্রত্যাহার করে নিলেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল, তাকেও দুই দিন ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, গুম। তিনি আরও বলেন, সাত্তারকে জেতানোর জন্য পুরো নির্বাচনব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছেন। আপনারা মাগুরার কথা বলেন। মাগুরার দাদা বানিয়ে ফেলেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে। সুতরাং এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। কর্মসূচিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু, নবী উল্লাহ নবী, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, সাইফুল আলম নীরব, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, হাবিবুর রশীদ হাবিব, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, তানভীর আহমেদ রবিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। চলমান কর্মসূচির বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকের এই পদযাত্রা গণতন্ত্রের জয়যাত্রা, সভ্যতার জয়যাত্রা, অধিকার আদায়ের জয়যাত্রা, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জয়যাত্রা। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জয়যাত্রা। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছে। তারা এখন প্রমাদ গুনছে। তারা প্রতিদিন জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। আজকে চালের দাম কত হয়েছে? ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে বলেছিল না? এখন কত খাচ্ছেন। ডালের দাম কত, লবণের দাম কত, আটার দাম কত। পুরান ঢাকাসহ সারা দেশে গ্যাস নেই। সব খেয়ে ফেলেছে। বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়েছে। দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটছে। আর সেই টাকা তারা লুট করে বিদেশে পাচার করছে।

 

সর্বশেষ খবর