ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ‘অসংগতি’, নীলক্ষেতে ব্যালট পাওয়ার ঘটনায় জবাব দিতে প্রশাসনের গড়িমসির অভিযোগ তুলেছেন পরাজিত ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবদুল কাদের ও স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা। তাঁরা নীলক্ষেতে ব্যালট পেপার এলো কীভাবে প্রশাসনকে তা পরিষ্কার করার দাবি জানান।
গতকাল সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে সাক্ষাতের পর উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এ দাবি জানান। এ সময় আবিদুল ইসলাম খান বলেন, ‘গণ অভ্যুত্থান-পরবর্তী সুস্থ রাজনীতিচর্চা প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নির্বাচনে অসংগতি থাকলেও আমরা তাৎক্ষণিক কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে যাইনি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সহায়তা করেছি ও অভিযোগ দিয়েছি। আমরা আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে সোমবার ডাকসু নির্বাচনে ১১টি অসংগতির অভিযোগ সামনে আনি। অথচ আজ এসে জানতে পারি সে বিষয়ে উপাচার্য-প্রক্টর নাকি কনসার্ন নন।’ তিনি বলেন, ‘নীলক্ষেতে ব্যালট পাওয়ার যে ঘটনা সামনে এসেছে, এ ব্যালটে অনেকেই নির্বাচিত ও পরাজিত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেছেন নীলক্ষেতে এ ব্যালট যাওয়ার সুযোগ নেই। যদি তা-ই হয়ে থাকে, তাহলে এ ব্যালটগুলো কোথা থেকে এলো? সে বিষয়ে পরিষ্কার অবস্থান জানাতে হবে। এ নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে এবং এ অভিযোগগুলো এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।’
উমামা ফাতেমা বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর ডাকসু নির্বাচন পেয়েছি এবং অবশ্যই এ নির্বাচন নিয়ে কথা হবে, বিচার-বিশ্লেষণ করা হবে। ৯ সেপ্টেম্বরের ডাকসু নির্বাচনে সবার মধ্যে ভালো একটি প্রতিক্রিয়া তৈরি হলেও অনেক প্রার্থী বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। এর মধ্যে ব্যালট পেপার গাউসুল আজম মার্কেটে পাওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো উত্তর দিতে পারেনি। পাশাপাশি ভোটের দিনে প্রার্থীরা ভোটার উপস্থিতির তালিকা চেয়েছিলেন, প্রশাসন থেকে এ তালিকা দেওয়া হয়নি। আমরা নানান অভিযোগ জানিয়ে এলেও নির্বাচনের ১৫ দিন হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও তার প্রপার উত্তর দেওয়া হয়নি। আমরা উপাচার্য স্যারের সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছি যেন অতিদ্রুত তাঁরা এ অভিযোগগুলোর জবাব দেন।’
আবদুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচিতদের নিয়ে আমাদের কোনো কনসার্ন নেই। আমাদের কনসার্ন হচ্ছে নির্বাচন কমিশন ও তাদের কার্যক্রম নিয়ে। আমরা ফরমালি অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের গড়িমসিতে শিক্ষার্থীদের মনে শঙ্কার জায়গাটি তৈরি হচ্ছে। আমরা চাই অতিদ্রুত অভিযোগগুলের বিষয়ে তাঁরা সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রদান করুক।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি আবু সাদিক কায়েম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন ঘিরে যে অভিযোগগুলো এসেছে, তার উত্তর নির্বাচন কমিশন দেবে। ডাকসু নির্বাচনে আমরা শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উৎসাহ দেখতে পেয়েছি; পোলিং এজেন্ট, সাংবাদিকসহ সবাই ভোট গণনার সময় একসঙ্গে ছিলেন এবং সেগুলোর সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। যে দাবিগুলো আনা হয়েছিল সেটাকে আমরা সাধুবাদ জানাই, নির্বাচন কমিশনের উচিত হবে তাদের সহযোগিতা করা ও উত্তর দেওয়া।’