বন্ধ্যত্বের অনেক কারণ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ তুলে ধরা হলো। কোনো দম্পতি টানা এক বছর একসঙ্গে বসবাস এবং সন্তান ধারণের চেষ্টা করার পরও যদি সন্তান ধারণে ব্যর্থ হন তবে তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। সমগ্র বিশ্বে শতকরা প্রায় ১০-১৫ ভাগ দম্পতি বন্ধ্যত্ব সমস্যায় ভুগছেন। সন্তান ধারণের অক্ষমতার জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মহিলাদের দায়ী করা হয়। কিন্তু পরিসংখ্যানে দেখা গেছে এক্ষেত্রে মহিলারা ৫০ ভাগ আর পুরুষেরা ৫০ ভাগ দায়ী। সন্তান ধারণ ক্ষমতার ওপর বয়সের প্রভাব অত্যন্ত বেশি।
একজন মহিলা নির্দিষ্ট কিছু ডিম্বাণু নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। বয়ঃসন্ধির পর থেকে প্রতি মাসে তার কিছুটা খরচ হতে হতে একসময় গিয়ে তা নিঃশেষ হয়ে যায়। পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুগুলো প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে। এ কারণে বয়সের প্রভাব মহিলাদের ক্ষেত্রে যতটা পুরুষদের ক্ষেত্রে ঠিক ততটা নয়। তবুও ধরে নেওয়া হয় পুরুষের ক্ষেত্রে ৪০ বছরের পর থেকে এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৩০ এর পর থেকে Fertility কমতে থাকে। যদি কারও শরীরের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়, যদি তিনি অতিরিক্ত মানসিক চাপে ভোগেন, কায়িক পরিশ্রম কম করেন, খাবারের সঙ্গে Anti-Oxidant যুক্ত খাবার কম খান অর্থাৎ শাকসবজি, ফলমূল কম খান তবে তাদের Fertility কমতে পারে। মহিলাদের শরীরের যেসব অঙ্গ সন্তান ধারণের সঙ্গে যুক্ত তাদের মধ্যে Ovary বা ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নিঃসৃত হয়। Fallopian Tube বা ডিম্বনালি পথে ডিম্বাণু নিষিক্ত হয় এবং নিষিক্ত ডিম্বানু জরায়ুতে প্রবেশ করে।
শুক্রাণু বা বীজ বা ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে জন্ম দেয় একটি প্রাণের, তার সংখ্যা, চলন ক্ষমতা, আকার আকৃতি সব কিছুর ওপর নির্ভর করে তার নিষেক ঘটানোর ক্ষমতা। যদি শুক্রাণুর সংখ্যা কম হয়, তার আকার আকৃতি বা চলন ক্ষমতায় কোনো অসুবিধা থাকে তাহলে নিষেক না-ও ঘটতে পারে। পুরুষ প্রজননতন্ত্রের তাপসহন ক্ষমতা কম। অতিরিক্ত তাপ, নাইলনের তৈরি Under Garments, Tight Pant শুক্রাণু তৈরিকে ব্যাহত করতে পারে।
লেখক: গাইনী বিশেষজ্ঞ, আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল, ঢাকা।