বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

কী আছে যুবক-এর ভাগ্যে

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

কী আছে যুবক-এর ভাগ্যে

ফাইল ছবি

আদালতের নির্দেশে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি আবারও কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নিলেও দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে বন্ধ থাকা আরেক প্রতিষ্ঠান যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি (যুবক)-এর ভাগ্যে কী আছে তা কেউ বলতে পারছেন না। প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভা হলেও সেখান থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত আসেনি। যুবক-এর ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা প্রশাসক নিয়োগে আদালতে রিট করার পর এখন আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি বলছে, তারা আদালতের নির্দেশনা ছাড়া যুবক বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। সূত্র জানায়, ‘যুবক’-এর সমস্যা নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সদস্যরা উচ্চ আদালতে রিট দায়েরের পর আদালত থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশাসক নিয়োগ প্রশ্নে রুল জারি করা হয়।

‘যুবক’ বিষয়ে সরকার গঠিত ফরাস উদ্দিন কমিশন, রফিকুল ইসলাম কমিশন ও সরকারের আন্তমন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশ কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে, তা ৯০ দিনের মধ্যে জানাতে গত ৭ আগস্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর ও যুবক কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয় আদালতের পক্ষ থেকে। আদালতের নির্দেশনার পর গত ১৩ সেপ্টেম্বর যুবক বিষয়ে আন্তমন্ত্রণালয় কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিটিও সেলের মহাপরিচালক ও আন্তমন্ত্রণালয় কমিটির প্রধান মো. হাফিজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, যুবক-এর ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা তাদের অর্থ ফেরত পেতে আদালতে একটি রিট করেছিলেন। সেই রিটের প্রেক্ষিতে সরকারের করণীয় নির্ধারণে আমরা সভা করেছি।

কমিটি মনে করছে, বিষয়টি যেহেতু আদালতে গেছে, তাই এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ করা সংগত হবে। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশাসক নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিটিওর মহাপরিচালক জানান, রিটের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশনা পেলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। সূত্র জানায়, যুবক-এ প্রশাসক নিয়োগে সরকারের দুটি কমিশন ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একাধিকবার সুপারিশ এসেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম যেহেতু বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জড়িত, সে কারণে এ বিষয়ে কোনো মন্ত্রণালয় এককভাবে দায়িত্ব নিতে চায়নি। ফলে প্রতিষ্ঠানটির বিপুল সম্পদ থাকার পরও গ্রাহকের দায় পরিশোধে কোনো বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নেওয়া হয়নি গত ১৬ বছরে।

এখন উচ্চ আদালতের রুল জারির পর আবারও যুবক-এর ফাইল নড়াচড়া শুরু হয়েছে। যুবক-এ ক্ষতিগ্রস্ত জনকল্যাণ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন মুকুল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যেহেতু সরকারের তিনটি কমিশনের (দুটি কমিশন, একটি আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি) রিপোর্টেই প্রশাসক নিয়োগের কথা বলা হয়েছে, আমরা এখন সেই বিষয়টিতেই জোর দিচ্ছি।

তিনি বলেন, আন্তমন্ত্রণালয় সভায় আমরা বলেছি, তারা যেন কমিশনের সুপারিশ (প্রশাসক নিয়োগ) বাস্তবায়ন করে। আমরা যুবক-এ প্রশাসক নিয়োগের অপেক্ষায় আছি।

ক্ষতিগ্রস্ত জনকল্যাণ সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৩ লাখ গ্রাহক রয়েছেন, যাদের পাওনা টাকার পরিমাণ প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে সারা দেশে যুবক-এর স্থাবর-অস্থাবর যে সম্পদ রয়েছে তার আর্থিক মূল্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। ১৯৯৪ সালে সদস্যদের মধ্যে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম শুরু হয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস  (রেজেসকো) থেকে নিবন্ধন নিয়ে প্রায় ২০ ধরনের ব্যবসা শুরু করে। ২০০৬ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পৃথক তদন্তে প্রতিষ্ঠানটির প্রতারণার ঘটনা বেরিয়ে আসে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর